× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পুলিশ ও বিজিবি’র টহলে হামলার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার
১০ মে ২০২১, সোমবার

পুলিশ ও বিজিবি’র টহলে হামলা করে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যরা। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য জানতে পেরেছে। এ ছাড়া চক্রটির পরিকল্পনা ছিল টেলিগ্রাম অ্যাপসে সায়েন্স প্রজেক্ট নামে একটি গ্রুপ তৈরি করে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করে বিস্ফোরক তৈরি করা। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সিটিটিসি প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-মো. জসিমুল ইসলাম ওরফে জ্যাক, মো. আব্দুল মুকিত, মো. আমিনুল হক ও সজীব ইখতিয়ার। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি ব্যাগ, একটা চাপাতি ও পাঁচটি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে মো. জসিমুল হক অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটির বিবিএ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। মো. আব্দুল মুকিত হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানার মারকাজুস সুন্নাহ আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন।
মো. আমিনুল হক সিলেটের আল হিদায়া ইসলামিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী এবং মো. সজীব ইখতিয়ার সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা ঢাকা ও সিলেটে পুলিশ ও বিজিবি’র টহল টিমে হামলার পরিকল্পনা করেছিল। এ চক্রের বাকি দুই সদস্য হিজরতের উদ্দেশ্যে আফগানিস্তান চলে গেছে। এই চারজনও পুলিশ-বিজিবি’র ওপর হামলা করে কথিত হিজরতের মাধ্যমে আফগানিস্তানে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, সংগঠনের আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অনলাইনে টেলিগ্রাম অ্যাপসে সায়েন্স প্রজেক্ট তৈরি করে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করে বিস্ফোরক প্রস্তুতের চেষ্টা করেছিল। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা ডিভাইস পর্যালোচনা করে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। পাশাপাশি তারা সংগঠনের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড সম্পাদনের উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসে মোহাম্মদপুরে এসে জড়ো হয়। আনসার আল ইসলামের দায়িত্বশীল বা মাসুদ ফরিদ ওরফে তারিক আব্দুল্লাহর সহযোগিতায় অ্যাপস গ্রুপ ও অনলাইনে গোপনীয় টেক্সট নামের সিক্রেট চ্যাটিং অ্যাপস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করতো।

সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এখন পর্যন্ত ক’জন জঙ্গি দেশ থেকে আফগানিস্তানে হিজরত করতে গেছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেপ্তার চার জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা জানতে পেরেছি তাদের সংগঠনের দুইজন সদস্য আফগানিস্তানে হিজরত করতে গেছেন। গ্রেপ্তারকৃতদেরও পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশে বড় ধরনের নাশকতা করে আফগানিস্তানে হিজরত করতে যাওয়া। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে যে ক’টি জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় তাদের অধিকাংশেরই আল কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আনসার আল ইসলাম উপমহাদেশের আল কায়েদার শাখা বলে নিজেদের দাবি করে। সেই সূত্র ধরেই তারা হয়তো বা আফগানিস্তানে হিজরতে গিয়ে থাকতে পারে।
হঠাৎ করে বিজিবি’র ওপর তাদের হামলার টার্গেট কেন? -এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, তারা তাগুতের ক্যাটাগরিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রেখেছে। জঙ্গিদের সায়েন্স প্রজেক্টে কতোজন যুক্ত হয়েছে এবং এদের হামলার কোনো নির্দিষ্ট তারিখ ছিল কিনা- এই প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান বলেন, তাদের পরিকল্পনা ছিল গ্যাস সিলিন্ডারের মাধ্যমে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটানো। এই বিষয়টি তাদের পরিকল্পনা পর্যায়ে ছিল। এই সায়েন্স প্রজেক্ট বা গ্রুপের সদস্য এখন পর্যন্ত ১০ জন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তবে এই গ্রুপের মাধ্যমে তাদের নিজেদের ভেতর অনেক গোপন আলাপ-আলোচনা হতো।
জঙ্গি দমনে সিটিটিসির সফলতা নিয়ে তিনি বলেন, জঙ্গি দমনে খুব ভালোভাবে কাজ হচ্ছে না বা আমরা সফল হচ্ছি না- এ কথা আমরা কখনোই বলবো না। জঙ্গি সংগঠনগুলো অনলাইনে অনেক সক্রিয়। তারা অনলাইন প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে সদস্য রিক্রুটমেন্ট করছে, ট্রেনিং দিচ্ছে এবং নির্দেশনা দিচ্ছে। সাইবার স্পেস ব্যবহার করে তারা সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তবে আমাদের তৎপরতার কারণে কেউ উগ্রবাদের মতাদর্শে আদর্শিত হওয়ার আগে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করতে পারছি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর