× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ঈদ ঘিরে সক্রিয় অনলাইন প্রতারক চক্র

প্রথম পাতা

মরিয়ম চম্পা
১০ মে ২০২১, সোমবার

মোবাইলফোন অর্ডার করলে পাঠানো হতো খেলনা জাতীয় পণ্য। পোশাক অর্ডার করলে পাঠানো হতো পুরাতন ছেঁড়া কাপড়। এভাবেই ঈদকে ঘিরে অনলাইনে প্রতারণা করছিলো একটি চক্র। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের সুবাস্তু টাওয়ার, মিরপুর, কেরানীগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় প্রতারক চক্রটি ইতিমধ্যে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাধারণ মানুষের। সম্প্রতি রাজধানীতে পৃথক অভিযান পরিচালনা করে অনলাইনে প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত একটি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাব সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর মিরপুরে ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় ছিল প্রতারক চক্র। যাদের ভিন্ন ভিন্ন নামে রয়েছে অনলাইন প্ল্যাটফরম আইডি। চক্রটি ইতিমধ্যে অনলাইনের মাধ্যমে প্রতারণা করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সূত্র জানায়, চক্রের মূল হোতা প্রতারক বোরহান কবির।
তার হাত ধরেই মূলত এই ডিজিটাল প্রতারণার শুরু। শুরুর দিকে বোরহান এবং তার ছোট ভাই ব্যবসা পরিচালনা করলেও প্রতারণার পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে চক্রের জনবল। রাজধানীর মিরপুরে, এলিফ্যান্ট রোডের সুবাস্তু টাওয়ারে এবং কেরানীগঞ্জে শো-রুম খুলে চলছিলো তাদের এই প্রতারণা।

অভিযানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতারক চক্রের হোতা বোরহান বর্তমানে তার গ্রামের বাড়ি নড়াইলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত তার স্ত্রী লিজা বেগম জানায়, কয়েক মাস আগে তাদের একটি সন্তানের মৃত্যুর পরে তার মৃতদেহ সৎকার করতে গ্রামের বাড়ি নড়াইলের কালিগঞ্জে যায় বোরহান। তারপর বাড়ি থেকে আর ঢাকায় ফেরেনি।

সূত্র জানায়, করোনার কারণে অধিকাংশ সচেতন ক্রেতারা ঈদের কেনাকাটায় অনলাইনের প্রতি ঝুঁকছেন। ঈদের এই সময়টাতে প্রতারণা চলমান রাখতে ব্যবসায়ের হাল ধরেন প্রতারক বোরহানের স্ত্রী লিজা বেগম এবং তার ছোট ভাই আকাশ।

প্রতারণার ধরন সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চক্রটি অর্ধশত সিমকার্ড ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে পোশাক ও মোবাইল বিক্রির উদ্দেশ্যে পেজ খুলে বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছিলো। সেই পেজগুলোতে বড়দের এবং ছোটদের পোশাকও বিভিন্ন মোবাইলের চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে। এ ছাড়া তারা যৌন উত্তেজনার বিভিন্ন ধরনের ওষুধ বিক্রির নামেও বিজ্ঞাপন দিতো। পরবর্তীতে ক্রেতারা পোশাক ও বিভিন্ন মোবাইলের ছবি দেখে পেজে থাকা নম্বরে ফোন করলে তারা ক্রেতাকে অনলাইনে পণ্য হোম ডেলিভারি করার বিষয়ে আশ্বস্ত করে। পণ্য পাঠানোর পূর্বেই পণ্যের মূল্য বিকাশ নম্বরে পাঠিয়ে দিতে বলতো। পরবর্তীতে চক্রটি টাকা পাওয়ার পর বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে উক্ত ক্রেতাদের ঠিকানায় চাহিদাকৃত পণ্যটি না পাঠিয়ে তার বিপরীতে বিভিন্ন পুরনো কাপড়ের টুকরা, ফোম, প্লাস্টিকের নষ্ট জিনিসপত্র এবং অপ্রয়োজনীয় জিনিস পার্সেল করে পাঠিয়ে দিতো। এভাবে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে স্বল্পমূল্যের পোশাক ও বিভিন্ন মোবাইলের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতারণা করে আসছিল।

সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী এক ক্রেতা সম্প্রতি তার এক আত্মীয়ের জন্য নতুন পোশাকের অর্ডার দিলে প্রতারক লিজা প্রথমে বিকাশ অ্যাকাউন্টে পোশাকের অর্ধেক মূল্য পাঠাতে বলেন। এ সময় ভুক্তভোগী ব্যক্তি প্রথমে ৭শ’ টাকা এবং পরবর্তীতে ৮শ’ টাকা বিকাশ করে পাঠানোর পর তার ঠিকানায় ব্যবহৃত পুরাতন এবং ছেঁড়া কাপড় পাঠানো হয়। পার্সেল হাতে পেয়ে ভুক্তভোগী ফোন দিলে তাদের মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পেয়ে বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। পরবর্তীতে আইনশৃৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অংশ হিসেবে অভিযান পরিচালনা করে গত শুক্রবার  প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়।  

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন মানবজমিনকে বলেন, আমাদের নিজস্ব র‌্যাব সাইবার মনিটরিং সেল রয়েছে। সেখান থেকে আমরা বিভিন্ন অনলাইন ডিজিটাল সাইড মনিটর করে থাকি। কোনো সাইটের কাজকর্মে তাদের আচরণ এবং গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে এবং অনেক সময় বিভিন্ন মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সাইট মনিটর করে থাকি। এ ছাড়া ডার্ক ওয়েভের মাধ্যমেও আমরা বিভিন্ন অনলাইন কার্যক্রম মনিটর করি। এক্ষেত্রে ভুক্তভোগী কেউ অভিযোগ করলে সেটা আমরা গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে খতিয়ে দেখি। এ ছাড়া আমরা নিজে থেকেও বিভিন্ন অনলাইনে ঢুকে তাদের কার্যক্রম মনিটর করি। এবং তাদের কার্যক্রম সন্দেহজনক মনে হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর