ফেনীর পরশুরামে নিখোঁজ হওয়ার ২৭ দিন পর ভারতীয় সীমান্তবর্তী কাঁটাতারের পাশ থেকে ইয়াছিন (৩০) নামের এক নির্মাণ শ্রমিকের গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী রাঙ্গামাটিয়া গ্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয় বলে গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী জানিয়েছেন। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নির্মাণ শ্রমিক মো. সেলিম ও সিএনজি অটোরিকশাচালক জামালকে গ্রেপ্তার করেছে। নিহত ইয়াছিন জেলার পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের মধ্যম রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের হাসান আহমেদের ছেলে। গ্রেপ্তারকৃত মো. সেলিম (৩৩) একই গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী জানান, গত ১৩ই এপ্রিল বিকাল থেকে নির্মাণ শ্রমিক ইয়াছিন নিখোঁজ হলে পরশুরাম থানায় সন্ধান চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন তার বড় ভাই হারুন। পুলিশ দীর্ঘ তদন্তে গত ৮ই মে ইয়াছিনের সহকর্মী নির্মাণ শ্রমিক মো. সেলিম ও সিএনজি অটোরিকশাচালক আবুল কালামকে মধ্যম রাঙ্গামাটিয়া এলাকা থেকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। মো. সেলিমকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশকে জানায়, নির্মাণ শ্রমিক ইয়াছিনের কাছে একটি কষ্টিপাথর ছিল।
ওই কষ্টিপাথর ও রাজমিস্ত্রির কাজের কর্তৃত্ব নিয়ে ইয়াছিনের সঙ্গে সেলিমের বিরোধ চলে আসছিলো। বিরোধের জের ধরে সেলিম তার পূর্ব পরিচিত মোশারফ ও কুসুমের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে ও ইয়াছিনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ওই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ১৩ই এপ্রিল বিকালে শাহনাজ নামের এক মহিলাকে দিয়ে ইয়াছিনকে সুকৌশলে পরশুরাম থেকে ফেনী শহরের বনানী পাড়ার একটি বাসায় ডেকে আনেন সেলিম। এ সময় ৫-৬ জন মিলে ইয়াছিনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ বস্তায় ভরে বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত পিলার নং-২১৫-১২-এস এর ৫০ গজ অভ্যন্তরে রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের কাঁটাতারের বেড়া সংলগ্ন স্থানে একটি খাদে মাটি চাপা দেয়। পুলিশ সুপার আরো জানান, লাশ উদ্ধারের ঘটনায় নিহত ইয়াছিনের বড় ভাই হারুন বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে গত রোববার রাতে পরশুরাম মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সেলিম ছাড়াও এমাম হোসেন, মোশাররফ হোসেন, কুসুম, শাহনাজ ও সিএনজিচালক জামালকে আসামি করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাঈনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) রবিউল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আতোয়ার রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার (ডিএসবি) খালেদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।