× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শাহজালাল বিমানবন্দরে বাড়ছে চোরাচালান

শেষের পাতা

আল-আমিন
১১ মে ২০২১, মঙ্গলবার
ফাইল ছবি

দেশের প্রধান বিমানবন্দর হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দিন দিন বাড়ছে চোলাচালান। বিদেশ থেকে আমদানি হওয়া বৈধ পণ্যের সঙ্গে আসছে  চোরাই পণ্য। বিমানবন্দরের অসাধু কর্মচারী, বিমানের ক্রু এবং চোরাকারবারিদের বড় একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এ সিন্ডিকেট এতটা শক্তিশালী হয়েছে যে, কর্তৃপক্ষ চোরাচালানকৃত পণ্য ঠেকানোর একাধিকবার উদ্যোগ নিলেও তা এখনো ভাঙতে পারেনি। বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজকে কেন্দ্র করে এ চক্রটি গড়ে উঠেছে।  সোনা, স্মার্ট মোবাইল ফোন, ডায়মন্ড, শিশু খেলনা, ভিওআইপি পণ্য, প্রদর্শনকৃত থাই গ্লাস সামগ্রীসহ বিদেশ থেকে আসছে চোরাচালানকৃত পণ্য। এতে মোটা অঙ্কের শুল্ক পাচ্ছে না সরকার।

মাঝে মধ্যে বিমানবন্দরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা চোরাই পণ্য জব্দ করে থাকে। কিন্তু, অধিকাংশ পণ্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে বিমানবন্দর থেকে নিয়ে যাচ্ছে চোরাকারবারিরা।
তবে বিমানবন্দরে ঢাকা কাস্টমস, এপিবিএন, পুলিশ এবং শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আগের চেয়ে অনেক নজরদারি বাড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, চোরাচালান ঠেকাতে নতুন স্ক্যানার কেনা হচ্ছে। পাশাপাশি কার্গো ভিলেজকে কেন্দ্র করে যে চক্র গড়ে উঠেছে সে চক্রকে ভাঙতে তারা কাজ করছে।    এ বিষয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ কাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদুল আহসান জানান, ‘বিমানবন্দরের চোরাচালান রুখতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন’।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দ্বিতীয় তলায় একটি স্টাফ গেইট আছে। ওই গেইট দিয়ে এয়ারলাইন্সসহ বিমানবন্দরে দায়িত্বরত কর্মীরা আসা-যাওয়া করেন। এখানে লাগেজ বা মানুষের শরীর পরীক্ষার স্ক্যানিং মেশিন নেই। সেই সুযোগ নিয়ে এয়ারলাইন্সসহ বিমানবন্দরের অনেক কর্মী চোরাচালানে জড়িয়ে পড়ছে। এর আগে এ ধরনের অপরাধে জড়িয়ে ধরা পড়ার নজিরও রয়েছে। অপরদিকে বহির্গমন হলেও নেই ব্যাগেজ স্ক্যানার। ফলে সব যাত্রীকে সঠিকভাবে তল্লাশি করা যায় না। আর স্থায়ী স্ক্যানার না থাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিতদের অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করার সুযোগও থেকে যায়।

সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের মূল চোরাচালান হয়ে থাকে কার্গো ভিলেজ এলাকায়। প্রতিদিন হ্যাঙ্গার গেইট দিয়ে অসংখ্য গাড়ি বিমানবন্দরে প্রবেশ করে আর বের হয়। এখানকার স্ক্যানিং মেশিনটিও পুরনো। সেটিও প্রায় সময় নষ্ট থাকে। এ ছাড়া কুরিয়ারে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার বিল অব এন্ট্রি শুল্কায়ন হয়। কিন্তু, এগুলোর বেশির ভাগই স্ক্যানিং হয় না। এয়ারফ্রেইটে স্ক্যানার রয়েছে মাত্র ১টি। যা দিয়ে সব চালান পরীক্ষা করা অসম্ভব। আর পদ্মা গেইটেও নেই কোনো গাড়ি স্ক্যানার। ফলে জানা যায় না তেল পরিবহনে নিয়োজিত গাড়ির মাধ্যমে কোনো চোরাচালান পণ্য আনা-নেয়া হচ্ছে কিনা।

সূত্র জানায়, যারা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তাসহ আরো অন্য বিষয় নিয়ে কাজ করেন তাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে প্রকট। আর সোনা বা মাদক চোরাচালানের যেসব বড় চালান আটক করা হয়েছে তার বেশির ভাগই বিমানবন্দরের। দুই মাস আগে মাদকের দুটি বড় চালান জব্দ করেছে বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালনকারী সংস্থাগুলো।
জানা  গেছে, সমপ্রতি ঢাকা কাস্টমস হাউজ শাহজালালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)কে একটি চিঠি দিয়েছে। ওই চিঠিতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিরাপত্তা বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। ওই চিঠিতে দ্রুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহত করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এনবিআর থেকে ৮ নম্বর  গেইটের জন্য একটি ভেহিক্যাল স্ক্যানার কিনতে সিভিল এভিয়েশনকে দেয়া হয়েছে বিশেষ তাগিদ। সেটি কিনতে ইতিমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে।

সূত্র জানায়,  চোরাচালান ঠেকাতে স্ক্যানিং মেশিন দরকার বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। স্ক্যানারগুলো হচ্ছে- বডি স্ক্যানার, ব্যাগেজ স্ক্যানার এবং ভেহিক্যাল স্ক্যানার। বিমানবন্দরের ৭টি ইউনিটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে চোরাচালান ঠেকানো সম্ভব। তখন এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে চোরাচালান।  সূত্র জানায়, কার্গো ভিলেজকে কেন্দ্র করে যে চক্র গড়ে উঠেছে সে চক্রের সদস্যরা সর্বক্ষণ কার্গো ভিলেজের সামনে অবস্থান গ্রহণ করে। কোনো গাড়ি আসলো না আসলো তা তারা পর্যবেক্ষণ করে থাকে। তাদের পণ্য বিমান থেকে খালাস হওয়ার পর তারা ভেতর থেকে তাদের সোর্স সিগন্যাল প্রদান করে। পরে তাদের লোকজন ওই পণ্যকে  বাইরে খালাস করে নিয়ে আসে।  সূত্র জানায়, কার্গো ভিলেজে বড় স্ক্যানার মেশিন একাধিক থাকলে চোরাচালান ঠেকানো সম্ভব বলে ওই কার্গো  ভিলেজে দায়িত্ব পালনকারী কর্তাব্যক্তিরা জানিয়েছেন। এ ছাড়াও কার্গো ভিলেজকে কেন্দ্র করে যে চক্র গড়ে উঠেছে সে চক্রকে আইনের আওতায় আনা গেলে দেশের প্রধান বিমানবন্দর  চোরাই পণ্য বহনে মুক্ত থাকবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর