× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অক্সিজেন সঙ্কট, আইসিইউতে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা, মারা গেলেন ১১ রোগী (ভিডিও)

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(২ বছর আগে) মে ১১, ২০২১, মঙ্গলবার, ১১:৫২ পূর্বাহ্ন

সোমবার সন্ধ্যা। অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতিতে অবস্থিত এসভিআর রুইয়া হাসপাতালের আইসিইউয়ের চারপাশে তখন যমদূত ঘুরছে। মেডিকেল স্টাফদের মুখ কালো। তারা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন রোগীদের বাঁচাতে। কিন্তু অত্যাবশ্যকীয় উপাদান অক্সিজেন শেষ। রোগীরা হাঁসফাঁস করছেন। সে দৃশ্য তাকিয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার নেই চিকিৎসক, স্টাফদের। এক শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্ত।
তাদের চোখ ভিজে উঠছে নিজেদের অজান্তেই। অক্সিজেনের অভাবে এমন এক ভয়াবহ অবস্থায় একে একে মারা গেলেন ১১ জন রোগী। সবাই আইসিইউ-এর। এ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করলেন স্টাফরা। চারদিকে তখন আর্তনাদ। স্বজন হারানোর আর্তনাদ। এ দৃশ্য বর্ণনা করে শেষ করার মতো নয়। অনলাইন এনডিটিভি বলছে, সোমবার সন্ধ্যায় অক্সিজেন সরবরাহ শেষ হয়ে যায় সরকারি ওই হাসপাতালের। ভারত যখন করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ভয়াবহতার বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তখন অক্সিজেন সঙ্কট সেই লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। ভিডিওতে ধারণ করা ওই হাসপাতালের আইসিইউয়ের দৃশ্যে দেখা গেছে- ঘটনার সময় এর ভিতরে কি এক ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের স্বজনরা বলেছেন, ২৫ থেকে ৪৫ মিনিট অক্সিজেন সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছিল। ছিত্তর ডিস্ট্রিক্ট কালেকটর এম হরি নারায়ণ বলেছেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার নতুন করে লোড করেতে সময় লাগে ৫ মিনিট। এর মধ্যেই অক্সিজেনের চাপ একেবারে পড়ে যায়। তিনি আরো বলেন, ৫ মিনিটের মধ্যে অক্সিজেন সরবরাহ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে এবং সবকিছু স্বাভাবিক হয়েছে। আমরা অতিরিক্ত সিলিন্ডার যোগ করেছি। ফলে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। মেডিকেল স্টাফদের ত্বরিত পদক্ষেপে অনেক বড় বিপর্যয় এড়ানো গেছে।
তিনি আরো বলেছেন, তামিলনাড়–র শ্রীপেরুমবুদুর থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছাতে বিলম্ব হয়েছে। এ জন্য এই সমস্যা। উল্লেখ্য, এই হাসপাতালে রোগী ধারণ ক্ষমতা আছে এক হাজার একশতের উপরে। এর মধ্যে আইসিইউতে রোগী আছেন কমপক্ষে ১০০। অক্সিজেন বেডে আছেন ৪০০ জন। ওই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আইসিইউতে ছুটে গিয়েছেন প্রায় ৩০ জন চিকিৎসক। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগন মোহন রেড্ডি করোনায় আক্রান্ত রোগীদের আইসিইউতে মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন এবং এর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে রোববার পার্শ্ববর্তী রাজ্য তেলেঙ্গানায় অক্সিজেন সরবরাহে দুই ঘটনার বিলম্ব ঘটে। এতে হায়দরাবাদে একটি সরকারি হাসপাতালে কমপক্ষে তিনজন রোগী মারা যান। তবে কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। এরপরই এনডিটিভির সাংবাদিক কিং কোটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন এবং রোগীদের অ্যাটেনডেন্টদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। তারা জানিয়েছেন প্রায় দুই ঘন্টা অক্সিজেন সরবরাহ ছিল না বললেই চলে। ২০ বছর বয়সী রোহিত একটি খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার নতুন করে অক্সিজেন ভরতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই হাসপাতালে তার ৩৮ বছর বয়স্ক ভাই কৃষ্ণ চৈতন্য অসুন্থ হয়ে আইসিইউতে অবস্থান করছেন।
এনডিটিভিকে রোহিত বলেন, আমার ভাইয়ের অক্সিজেন লেভেল নেমে গিয়েছিল ৬০-এ। হাসপাতালে অন্য ২০০ মানুষের মতো আমাদের মধ্যেও ভয়ার্ত এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। সৌভাগ্য যে, আমাদের গাড়িতে নিজেদের বহন করা অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা সেটা গাড়ি থেকে নিয়ে যাই তখন পাশের বেডের ৭০ বছর বয়সী একজন রোগী আমার ভাইকে তার অক্সিজেন সিলিন্ডার শেয়ার করেছিলেন।

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর