× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষ মুহূর্তে ঈদের কেনাকাটা

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
১২ মে ২০২১, বুধবার

 মহানগরজুড়ে ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে। পাশাপাশি জেলা উপজেলা পর্যায়ের সব ধরনের মার্কেটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। অতিরিক্ত কাঠফাটা গরমের মধ্যেও যেন ক্লান্তি নেই ক্রেতাদের। প্রতিটি মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে দেখা গেছে ঈদের আমেজ। সব দোকানেই প্রচুর ক্রেতার সমাগম। দেশি পোশাকের পাশাপাশি চীন, জাপান, কোরিয়ার প্যান্ট ও শ্যার্ট পিস, পাঞ্জাবি এবং ভারতীয় থ্রি পিসে বাজার ভরে গেছে মার্কেটে। নগরীর বিভিন্ন বিপণিবিতানগুলো বেচাবিক্রিতে ভিড় বেড়েছে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। পুরুষের চেয়ে মহিলাদের উপস্থিতি অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে।
ভিড়ের কারণে শহরে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তবে অভিযোগ রয়েছে অসাধু ব্যাবসায়ীরা পোশাক বিক্রি করছেন ক্রয় মূল্যের থেকে দুই-তিনগুণ দামে। সামান্য দামও কম নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছেন দোকানিরা। তাছাড়া দেখা যায় নগরীর বিভিন্ন শপিংমল ও বাজার, মোড়ের সামনে ভ্রাম্যমাণ পোশাক বিক্রেতারা ভ্যানে করে প্যান্ট, টিশার্ট, জামাসহ বিভন্ন পোশাক সাজিয়ে বিক্রি করছেন। পাশাপাশি এ সব পোশাকের মূল্যও নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। অনেক ক্রেতাদের সেই সব হকারদেরকে ঘিরে ধরে পোশাক পছন্দ করছে। তবে এই নির্ধারিত পোশাকগুলো সাধারণ ক্রেতাদের নাগালে রয়েছে। সর্বেচ্চ ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে। তবে প্রকার ভেদে প্যান্ট এর দাম একটু বেশি সর্বোচ্চ ৪০০ টাকার মতো। ক্রেতা মো. কামাল পারভেজ বলেন, সামান্য আয়ের মানুষ আমরা। তাছাড়া চলমান লকডাউনে আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পরও বছরে একটা ঈদের সময়ে সন্তানদের পোশাক তো দিতে হবে। মার্কেটের ভিতরে দোকানগুলোতে একই পোশাক দুই-তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তাই এই হকার পোশাক ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ক্রয় করছি। এই পোশাকের মান ভাল। বিশেষ করে আমরা যারা নি¤œআয়ের মানুষ তাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে।
পোশাক বিক্রেতা আরিফ ফ্যাসানের মালিক শৈকত বলেন, এ বছর হঠাৎ করোনা ও চলমান লকডাউনের কারণে আমরা চাহিদা অনুযায়ী পোশাক আমদানি করতে পারিনি। আমার মহিলাদের কালেকশন বেশি যেমন জামদানি, কাতান, সিল্ক, হাফ। ফ্লোর টাচ, লং ফ্রক, লং কামিজ, কটকটি ড্রেস বেশি চলছে সব পোশাকে মূল্য স্বাভাবিক আছে। তবে কিছু কিছু দোকানদাররা বেশি দামে পোশাক বিক্রি করছে। এটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। এছাড়া ছিট কাপড়ের দোকানে মেয়েরা পছন্দ মতো দামি কাপড় কিনে দর্জি দোকানে বিভিন্ন মডেলের পোশাক তৈরি করছে। ইতিমধ্যে দর্জি দোকানসমূহে অর্ডার নেয়া বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় দর্জি ব্যবসায়ী শাহাদৎ হোসেন বলেন, আমার এখানে অনেক ক্রেতা পোশাক তৈরি করতে এসেছেন। তবে অর্ডার নিতে পারছি না। কারণ সঠিক সময়ে ডেলিভারি দিতে পারবো না। অনেককে ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিন ডেলিভারি দিতে হবে।
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: শেষ মুহূর্তে ঈদের কেনাকাটায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে শপিং মল ও বিভিন্ন বিপণি বিতানগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থাকছে উপচেপড়া ভিড়। মানা হচ্ছে না করোনা স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা।
করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর ভয়কে তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন শপিং মল, পোশাকের দোকান ও বিপণি বিতানগুলো সহ হাটে-বাজারে প্রতিদিনই ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়ে পরিপূর্ণ থাকছে। যেখানে নিজের অথবা পরিবারের সদস্যদের জন্য ঈদের কেনা কাটা মুখ্য, সেখানে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। একে- অপরের গা ঘেঁষে কেনাকাটা করছেন তারা। কারো কারো মুখে মাস্ক থাকলেও অনেকের মুখে মাস্কও দেখা যাচ্ছে না। সামাজিক বা শারীরিক দূরত্বের তো বালাই নেই। আর এতেকরে প্রশাসনের নির্দেশনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলেও হিমশিম খেতে হচ্ছে বিক্রেতাদেরকে। একই চিত্র উপজেলার সব বাজার ও বিপণি বিতানে। তবে ঈদের কেনা-কাটাতো করতেই হবে, তাই যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি বা শিষ্টাচার মেনে কেনাকাটা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সবসময় মাস্ক ব্যবহারসহ করোনাভাইরাস সংক্রমরোধে নিয়ন-কানুন মানা অনেকটা দুরূহ হয়ে পড়ছে বলে অনেক ক্রেতা অভিমত প্রকাশ করেছেন।
ঈদ আনন্দের হলেও করোনার এই ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণ না হলে এবারের ঈদ হতে পারে সবার জন্য কষ্টের ও বেদনার। এমনটাই মনে করেন সচেতন মহল।
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: কোলের শিশু বাচ্চা থেকে শুরু করে নানান বয়সের শিশু বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে বিভিন্ন শপিংমলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মায়েরা। অতীতের সকল রেকড ভঙ্গ করে নারীদের উপচে-পড়া ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন দোকানিরা। এতে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।
সরজমিন দেখা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলা শহরের চৌরঙ্গীর সকল কসমেটিকসের দোকান, স্বর্ণপট্টি, কাপড়পট্টি সকল শাড়ি কাপড়ের দোকান, কাঁসাপট্টিসহ সকল গার্মেন্টস দোকান, আলিয়া মাদ্রাসা রোড়ে গাজী সু-স্টোরসহ সবধরনের জুতা সেন্ডেলের দোকান, সওদাগর (বেদেপট্টির) সকল মনোহরি দোকান, কেরামত আলী মিনা (মোবাইল) মার্কেটের সব ধরনের মোবাইল দোকানসহ বিভিন্ন প্রসাধনসামগ্রী দোকানগুলোতে সব বয়সী শিশু-কিশোর, তরুণ- তরুণীসহ নানান পেশাজীবী নারী- পুরুষের উপচেপড়া ভিড়। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর নারীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। পছন্দের নতুন জামা, জুতা, অলঙ্কার আর প্রসাধনী সামগ্রী কিনতে ক্রেতারা ছুটছে শহরের শপিংমলে। পোশাক এবং জুতার দোকানে ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি ভিড়।
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে: চলমান করোনা মহামারিতেও বন্দরনগরী চট্টগ্রামে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। সরকারের সীমিত পরিসরে মার্কেট খুলে দেয়ার সুযোগে এখানে চলছে রমরমা কেনাকাটা উৎসব। ছোট ছোট বাচ্চাসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে লোকজন ছুটছেন এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেটে। তবে অভিজাত শপিংমল থেকে শুরু করে ফুটপাথÑ কোথাও নেই স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে সরকার মার্কেট ও শপিংমল খোলার অনুমতি দিলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না কোনো নিয়মকানুন। দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ দোকানদারের মুখে মাস্ক নেই। থাকলেও এদের অনেকের মাস্ক মাথার উপর, কারো থুঁতনির নিচে আবার কারোটা পকেটে। ক্রেতাদের অনেককেও যথাযথভাবে মাস্ক না পরতে দেখা যায়। এখানে মার্কেটের প্রবেশ মুখে নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা। যদিও দোকান খোলার অনুমতি দেয়ার সময় এইসব বিধিনিষেধ মানার ওয়াদা করেছিল ব্যবসায়ী নেতারা। মঙ্গলবার নগরীর নিউমার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, রিয়াজুদ্দিন বাজার, স্যানমার ওশান সিটিতে গিয়ে দেখা গেছে, মানুষের প্রচ- ভিড়। অবস্থা দেখে বুঝার উপায় নেই, দেশে করোনা মহামারি চলছে। তরুণ-তরুণীদের পাশাপাশি বয়স্করাও এসেছেন শপিং করতে। শিশু সন্তানদের নিয়ে অনেক বাবা-মা এসেছেন কেনাকাটা করতে। নগরীর জিইসি মোড়ের স্যানমার ওশান সিটিতে পরিবার নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা সরকারি সিটি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হোসাইন আহমেদ জানালেন, গতবারও নাতি- নাতনিদের জন্য কিছু কেনা হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে মার্কেটে আসতে হয়েছে। এদিকে বড় বড় মার্কেট ও শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধি কিছুটা মানা হলেও ফুটপাথের ভাসমান ব্যবসায়ীরা একেবারে বেপরোয়া। তারা কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এমনকি তাদের ক্রেতারাও না। বরং ক্রেতারা গা-ঘেঁষাঘেঁষি দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছেন। নগরীর জহুর হকার মার্কেটে মাস্ক ছাড়া শপিং করতে আসা রুবেল মিয়াকে জিজ্ঞাসা করতেই বলেন, ‘এভাবে মাস্ক পরে থাকলে মুখ চুলকায়। তাই মাস্ক পরা হয়নি। আর এভাবে মাস্ক পরে থাকলে তো প্রতিদিন ৩-৪টা মাস্ক লাগবে। এই টাকা কি সরকার দিবে আমাদের? ‘তামালকু-ি লেইনের ফুটপাথে জুতা কিনতে আসা গার্মেন্টস কর্মী জিয়াবুল স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে এসেছেন কেনাকাটা করতে। এসময় তাদের স্বামী-স্ত্রীর মুখে মাস্ক থাকলেও বাচ্চার মুখে মাস্ক নেই। এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মার্কেটে আসার সময় বাচ্চার জন্য দুইটি মাস্ক নিয়ে এসেছেন। কিন্তু সে কোনোভাবেই মুখে মাস্ক দিতে চাই না। দেয়া মাত্রই ফেলে দেয়।
নগরীর শপিং কমপ্লেক্সের জিয়া ফ্যাশনের মালিক আব্দুল করিম বলেন, ‘সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকতে খুব কষ্ট হয়। এরপরও আইন মানতে এটা পরে থাকতে হচ্ছে। তবে মানুষ তো বুঝে না। অনেকেই মাস্ক পরে আসে না। দোকানের মুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা থাকলেও তারা তা দিতে চায় না। আমরা তো এটার জন্য তাদের জোর করে দোকান থেকে বের করে দিতে পারি না।’ এদিকে মাস্ক না পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে অবহেলা করায় জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত কয়েক দফা নগরীর বিভিন্ন মার্কেটে অভিযান চালিয়েছে। এ ছাড়া নগরীর ডবলমুড়িং থানার পুলিশ মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে মাস্ক ছাড়া আসা লোকজনকে ধরে এনে ৩০ মিনিট রাস্তায় দাঁড় করে রাখার অভিনব শাস্তির ব্যবস্থা চালু করেছে। চট্টগ্রাম দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ছালেহ আহমেদ সোলেমান জানান, গত বছর থেকে ব্যবসায়ীদের আয় রোজগার নেই। সাধারণ মানুষও কেনাকাটা করতে না পারায় বেশ বিরক্ত ছিলো। তবে সরকার লকডাউন শিথিল করাই বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই খুশি। তবে ব্যবসায়ীরা চেষ্টা করলেও মানুষ অসচেতন হওয়ায় সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মানা যাচ্ছে না।



অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর