× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সদরঘাটে সুনসান নীরবতা /ঈদের আমেজ নেই কুলি ও নৌমাঝিদের

অনলাইন

 রাশিম মোল্লা
(২ বছর আগে) মে ১২, ২০২১, বুধবার, ৭:৪৬ অপরাহ্ন

রাজ্জাক মাঝি। স্বাধীনতার পর থেকে বুড়িগঙ্গার খেয়াঘাটে নৌকা পারাপার করেন। ঈদ এলে লোকজন পারাপারের ধুম লেগে যায়। বেশ আয় রোজগার হয়। ছেলে-মেয়েদের নতুন জামা কিনে দেন। ঈদের দিন বাসায় ভালো ভালো খাবার রান্না করা হয়। তিনি বলেন, কিন্তু গত দু’বছর ধরে ঈদে আমাদের আয়-রোজগার নেই। ছেলে-মেয়েদের এখনো জামা-কাপড় কিনে দিতে পারিনি।
আর মাত্র দু’দিন পরেই ঈদুল ফিতর। এ সময় পদচারনায় মুখর থাকে সদরঘাট। দক্ষিণবঙ্গের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র স্থান সদরঘাট নৌবন্দর হওয়াতে সারা বছরই এখানে ভিড় লেগেই থাকে। কিন্তু ঈদের সময় এই ভিড় বেড়ে যায় কয়েকগুণ। কয়েক লাখ যাত্রী গ্রামের বাড়িতে যাওয়ায় সদরঘাট এলাকা জনসমুদ্রে পরিপূর্ণ হয়। কিন্তু করোনার কারণে গত ৫ই এপ্রিল থেকে সরকার ঘোষিত লকডাউনে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন এ খাত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মালিকবৃন্দ। সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় সদরঘাটের কুলিরা। যাত্রীদের মালপত্র টেনে দেয়ার মাধ্যমে তাদের আয় রোজগার। কিন্তু এ বছর নৌযান বন্ধ থাকায় তারা অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন বলে বেশ কয়েকজন কুলি জানান। রোস্তম আলী নামে এক কুলি বলেন, ভাই আর কয়েন না। আমাগো এ বছর ঈদ নেই। পুলাপানরে কিছুই কিনে দিতে পারি নাই। এখন খেয়ে দেয়ে বাঁচাই বহু কষ্ট। ছেলে-মেয়েরা নতুন জামা-কাপড় কিনতে ঘ্যান ঘ্যান করছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে পুরো সদরঘাট জুড়ে। সারি সারি লঞ্চ ঘাটে নোঙ্গর করা। সেখানে গিয়ে দেখা যায় লঞ্চের কেবিন বয়, সারেং, মাস্টার ইঞ্জিন মাস্টারসহ বসে অলস সময় পার করছেন। ঘাটের পন্টুনগুলোতে ছিন্নমূল ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন খেলাধুলায় মত্ত। কথা হয় ঢাকা টু শরীয়তপুর চলাচলকারী স্বর্ণদ্বীপ-৪ লঞ্চের মাস্টার শাকিল আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত ১১ বছর ধরে এই লঞ্চ সার্ভিস এর সঙ্গে যুক্ত আছি। এ পর্যন্ত কোনো দিনও এ ধরনের বিপদে পড়িনি। এখন একবেলা খেয়ে আরেক বেলা না খেয়ে কোনোরকম দিন পার করতে হচ্ছে। গ্রামের বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা আছে আর কয়েকদিন পরেই ঈদ, তাদের জন্য ঈদের কাপড়, বাড়িতে ঈদের খরচ কোথা থেকে পাঠাবো সে চিন্তায় আছি। পরিস্থিতির কারণে মালিককেও চাপ দিতে পারছি না। মালিক কোনোরকমে আমাদের খোরাকি দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে। এখন আল্লাহ্ই আমাদের একমাত্র ভরসা। শিফা মণি-১ ও স্বর্ণদ্বীপ-৪ লঞ্চ এর মালিক মো. খোকনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতিতে একেবারে বেসামাল হয়ে পড়েছি, লঞ্চের স্টাফ সারেং মাস্টার সবাইকেই নিজের পরিবারের সদস্য মনে করে আমার পরিবারের সদস্যদের যেভাবে খাবার খরচ যোগাচ্ছি। তাদেরও খাবার খরচ জুগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এভাবে আর কতদিন। এখন তো আর কোনো উপায়ান্তর দেখছি না।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর