বিশ্বজমিন

বাংলাদেশে মৃত্যু কমেছে শতকরা ৩৪ ভাগ, ভারতে মহামারির নেপথ্যে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ইভেন্ট

মানবজমিন ডেস্ক

২০২১-০৫-১৩

ভারতে করোনা মহামারির ভয়াবহ বিস্তারের নেপথ্যে রয়েছে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ইভেন্ট। বুধবার  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার কোভিড-১৯ বিষয়ক সাপ্তাহিক মহামারি আপডেটে একথা বলেছে। এতে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশে করোনায় নতুন করে মৃত্যুহার কমেছে শতকরা ৩৪ ভাগ। এ খবর দিয়েছে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই। ২০২০ সালের অক্টোবরে প্রথম ভারতে শনাক্ত করা হয় ভাইরাসটির বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়েন্ট। ভারতে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে তার রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট বা ঝুঁকি পরিমাপ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাতে দেখা গেছে, দেশটিতে কোভিড-১৯ নতুন করে বিস্তার এবং ত্বরিত হারে ছড়িয়ে পড়ার পিছনে বেশ কিছু সম্ভাব্য কারণ আছে। এর মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক সমাবেশ, যেখানে সামাজিকভাবে মানুষ ব্যাপক হারে একত্রিত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে কোনো সামাজিক দূরত্ব ছিল না। ছিল না কোনো স্বাস্থ্যবিধি। ভারতে কোভিড -১৯ বৃদ্ধি এবং তাতে মানুষ ব্যাপক হারে মারা যাওয়ার কারণে বি.১.৬১৭ ও অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের (যেমন বি.১.১.৭) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। ভারতে যেসব ফ্যাক্টরকে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য ব্যাপকভাবে দায়ী করা হচ্ছে, তার মধ্যে কোনো একক ফ্যাক্টর কতটুকু দায়ী তা যথার্থভাবে অনুধাবন করা যায় নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আপডেটে বলা হয়েছে, বি.১.৭ এবং বি.১.৬১২ ভ্যারিয়েন্টের মতো কিছু ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন (ভিওসি)-এর ব্যাপক বিস্তার বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ভারতে কোভিড-১৯ এর ঢেউ বৃদ্ধি পেয়েছে।  এ বছর এপ্রিলের শেষের দিকে এসব ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পর থেকে ভারতে এই দুটি ভ্যারিয়েন্টের নমুনা পাওয়া গেছে যথাক্রমে শতকরা ২১ ভাগ এবং ৭ ভাগ নমুনায়। জিআইএইড-এ জমা হওয়া সিকুয়েন্স ব্যবহার করে প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব কথা বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এতে বোঝা যায় ভারতে অন্য যেসব ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঘটছে তার তুলনায় বি.১.৬১৭.১ এবং বি.১.৬১৭.২ ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঘটছে অনেক বেশি গতিতে। ভারতের বাইরে বৃটেন রিপোর্ট করেছে যে, সেখানে বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়েন্টের সাব-লাইনেজ বা উপসংযোগ সবচেয়ে বেশি। বৃটেনে সম্প্রতি বি.১.৬১৭.২ ভ্যারিয়েন্টকে জাতীয় পর্যায়ে ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন (ভিওসি) বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে আপডেটে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে এ সপ্তাহে নতুন করে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সামান্য কমে এসেছে। নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ লাখের কিছু বেশি মানুষ। আর মারা গেছেন ৯০ হাজারের বেশি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে নতুন করে আক্রান্তের মধ্যে শতকরা ৯৫ ভাগই ভারতে এবং মৃত্যুর শতকরা ৯৩ ভাগ ভারতে। এরপরও সেখানে এই ধারা অব্যাহত আছে। এর প্রেক্ষিতে প্রতিবেশী দেশগুলোতে যথেষ্ট উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে। বিশ্বে নতুন করে সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্তের দিক দিয়ে শীর্ষে রয়েছে ভারত। সেখানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ লাখ ৩৮ হাজার ৯৫৭ জন। শতকরা ৫ ভাগ আক্রান্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রাজিলে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ২৩ হাজার ৪৩৮ জন। আগের সপ্তাহের তুলনায় কোনো পরিবর্তন হয়নি সেখানে। যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩ লাখ ৩৪ হাজর ৭৮৪ জন। এক্ষেত্রে নতুন আক্রান্ত কমেছে শতকরা ৩ ভাগ। তুরস্কে নতুন আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৬৬ হাজার ৭৩৩ জন। এক্ষেত্রে আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে শতকরা ৩৫ ভাগ। আর্জেন্টিনায় নতুন আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৪০ হাজার ৭৭১ জন। শতকরা ৮ ভাগ মানুষ কম আক্রান্ত হয়েছেন এ সময়ে।  আগের সপ্তাহের তুলনায় সাউথ ইস্ট এশিয়া রিজিওনে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ২৮ লাখ মানুষ। মারা গেছেন ২৯ হাজারের সামান্য কম। এক্ষেত্রে আগের সপ্তাহের তুলনায় যথাক্রমে শতকরা ৬ ভাগ এবং ১৫ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ নিয়ে এ অঞ্চলে টানা ৯ম সপ্তাহের মতো আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এক সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন ভারতে। এ সংখ্যা ২৬ হাজার ৮২০। প্রতি এক লাখে মৃত্যুর এই হার ১.৯। শতকরা ১৫ ভাগ মৃত্যু বেড়েছে সেখানে। ইন্দোনেশিয়াতে নতুন মারা গেছেন এক হাজার ১৯০ জন। সেখানে লাখে মৃত্যুর হার ০.৪ ভাগ। সেখানে মৃত্যু বেড়েছে শতকরা ৩ ভাগ। বাংলাদেশে এ সময়ে মারা গেছেন ৩৬৮ জন। প্রতি এক লাখে এই হার ০.২ ভাগ। মৃত্যু কমেছে শতকরা ৩৪ ভাগ।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status