× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

তিন তরুণীর প্রেমের ফাঁদ

অনলাইন

রুদ্র মিজান
(২ বছর আগে) মে ১৩, ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৯:৫৮ পূর্বাহ্ন

প্রেম, বন্ধুতা ও আড্ডার মাধ্যমে মিশন শুরু করে চক্রের সদস্যরা। নিজেদের রূপ-যৌবনের ফাঁদে ফেলে কাছে ডাকেন ধনাঢ্য তরুণদের। তারা তিনজন। লামিসা বিনতে জাকির অর্থী (২১), তাসফিয়া বিনতে আশরাফ সারা (২০), মোসা. আসুহা আবেদীন রোজা (২২)। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তিন তরুণী। চেহারায় আভিজাত্যের ছাপ। কথা বলে ইংরেজি-বাংলার মিশ্রণে। চক্রের বাসা রয়েছে বেইলী রোড ও খিলগাঁও এলাকায়।
সেখানেই গড়ে তুলেছিল আস্তানা। বন্ধুতা ও প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে তুমুল আড্ডা দেয় তারা। ছুটে বেড়ায়। মাস্তি করে। এমনকি ডেকে নেয় বাসায়ও।  সেখানেই ঘটে মূল ঘটনা। ফিল্মের বেড সিনের মতোই। বিছানায় প্রায় উলঙ্গ হয়ে শুয়ে থাকে প্রেমিক বা বন্ধুর সঙ্গে। এরমধ্যেই একদল ঘরে ঢুকে জিম্মি করে প্রেমিক ছেলেকে। ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। হুমকি-ধমকি দেয় ছবি, ভিডিও ভাইরাল করার। সামাজিক মর্যাদা নষ্ট করার। দাবি করা হয় বড় অঙ্কের টাকা। হুমকি-ধমকিতে, সামাজিকতার কথায় ভয়ে কাবু ছেলেটি বিপুল অর্থ দিয়ে মুক্তি চায়। এভাবেই একের পর এক প্রেমের অভিনয়, নগ্ন ছবি ধারণ ও ব্ল্যাকমেইলে সফল হচ্ছিল এই চক্রটি। তাদের ব্ল্যাকমেইলের শিকার এক তরুণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অবশেষে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিন তরুণীসহ ছয়জনকে। মঙ্গলবার এই তিন তরুণী ও তাদের সহযোগীদের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
জানা গেছে, লামিছা এবং সারা নামে দুই তরুণীর সঙ্গে বন্ধুতা গড়ে উঠেছিল ব্ল্যাকমেইলের শিকার যুবকের। প্রায়ই ওই তরুণকে বেইলী রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় ডেকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে বসে আড্ডা দিতো লামিসা ও সারা। হোয়াটসঅ্যাপে, ম্যাসেঞ্জারে কথা হতো প্রায়ই। এভাবেই রাতারাতি ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে। ওই যুবক অভিযোগ করেছেন, একসঙ্গে ইফতার করার কথা জানিয়ে কৌশলে তাকে বাসায় নিয়ে যান লামিসা। ওই বাসায় যাওয়ার এক পর্যায়ে ওই দুই তরুণী ও তাদের অন্যান্য সহযোগীরা মিলে ওই যুবককে বিবস্ত্র করে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। ওই সময়ে তার সঙ্গে থাকা টাকা হাতিয়ে নেয় তারা।
নগ্ন ভিডিও’র ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে ওই যুবকের নিকট পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে এই চক্র। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে ওই বাসায় মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন যুবক। দাবিকৃত টাকা নিতে চারটি বিকাশ নম্বর দেয় চক্রের সদস্যরা। ভুক্তভোগী যুবক ফোনে তার সহকর্মী ও আত্মীয়দের তাৎক্ষণিক প্রয়োজনের কথা জানিয়ে চক্রের বিকাশ নম্বরে ওই টাকা আনার ব্যবস্থা করেন। ওই টাকা পাওয়ার পরই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। সেইসঙ্গে হুমকি দেয়া হয়, এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে ওই ভিডিও ও ছবি ভাইরাল করে দেয়া হবে। তার সামাজিক মর্যাদা বলতে কিছু থাকবে না। জিম্মি অবস্থা থেকে বের হওয়ার পর আবার হোয়াটসঅ্যাপে নগ্ন ভিডিও ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করে ওই চক্র। বিষয়টি নিয়ে বিষিয়ে উঠছিল ওই যুবকের জীবন। এ ঘটনায় মামলার করার পর তদন্তে নামে ডিবির ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
গত ৯ই মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় রমনা বেইলী রোড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় লামিসা, তাসফিয়া ও আসুহাকে। ওই দিন রাতেই  খিলগাঁও তালতলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ইমরান আহমেদ  ওরফে নাজিম হোসেন, মো. খালিদ বিন মাইতুল ফাহিম ও মো. আসিফুল ইসলাম ওরফে আসিফকে। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি মোবাইল ফোন, ১০টি সিম কার্ড, ভিকটিমের আপত্তিকর ধারণকৃত ভিডিও এবং হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং জব্দ করা হয়।
এ বিষয়ে ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আশরাফউল্লাহ  জানান, মামলা তদন্তকালে তথ্য- প্রযুক্তির সহায়তায় এই চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা হয়। তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিয়ান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর