মা,
আমরা বড়ই অভাগা তোমাকে ছাড়া থাকি। ছোট্টটি যখন ছিলাম কতোই না শাসন করতে। কিন্তু সেই শাসনে ছিলো মায়া, ভালোবাসা। যতই বড় হচ্ছি আর তুমি বুড়ো হচ্ছো। শাসন যেন উল্টো এখন আমিই করছি। চারটা ডাল, ভাত কিংবা ক্যারিয়ার গড়তে তোমায় ছেড়ে কতো দুরে বাস। কিন্তু কখনো ভাবিনি তোমায় ছেড়ে ঈদ করতে হবে।

তাও রক্ষা বিশ্বে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটেছে। দুরে থাকলেও যোগাযোগটাতো হচ্ছে। হতো যদি সেই চিঠির যুগ। না ভাবতেই পারছি না। যেমনটা ভাবতে পারছি না তোমাকে ছাড়া ঈদ।

মা যারা বাড়ি ফিরেছে তাদের দেখে নিশ্চয়ই ভেবেছো আমার সন্তানও ফিরবে। কিন্তু কেউ ফিরতে পারেনি দায়িত্বের ছোবলে। আর কেউবা করোনার ভয়ে। মা দেশে লকডাউন চলছে। অনেকেইতো বাড়ি ফিরেছে। আমি ফিরিনি। আমি ইচ্ছা করেই ফিরিনি। মা তোমার জন্য কিছুই কিনিনি। ঈদে বাড়ি গেলে অবশ্যই কিনতাম। যারা গাদাগাদি করে বাড়ি গেছেন তাদের সঙ্গে আমি গা ভাসাইনি। তোমার জন্য ঈদের উপহারের সঙ্গে করোনাকে যুক্ত করতে চাইনি।

মা এবারের ঈদের দিনেও সেমাই রান্না করিও। সে সেমাইটা না হয় একাই খেয়ো আব্বুর সঙ্গে। আব্বু নামাজ শেষে বাড়িতে এলে টেবিলে বসিয়ে খেতে দিও। আর মনে রেখো- তোমার সন্তান তোমার জন্যই ঈদে বাড়ি ফেরেনি। চায়নি শহর থেকে ভাইরাস নিয়ে যেতে।

মা দোয়া করিও- এমন ঈদ যাতে আর না আসে। তোমাকে ছাড়া যাতে আর ঈদ পালন করতে না হয়। মা আমরা বাড়ি ফিরবো। অবশ্যই ফিরবো। একটু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই ফিরবো।

ইতি
তোমার আদরের সন্তান