অনলাইন

চট্টগ্রামে জমজমাট শেষ মুহুর্তের ঈদ বাজার, তোয়াক্কা নেই স্বাস্থ্যবিধির

জালাল রুমি, চট্টগ্রাম থেকে

২০২১-০৫-১৩

করোনা মহামারিতেও বন্দরনগরী চট্টগ্রামে জমজমাট ঈদের বাজার। সীমিত পরিসরে মার্কেট খুলে দেয়ার সুযোগে এখানে চলছে রমরমা কেনাকাটা উৎসব।ছোট ছোট বাচ্চাসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে লোকজন ছুটছেন এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেটে।তবে অভিজাত শপিংমল থেকে শুরু করে ফুটপাত – কোথাও নেই স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই। জানা যায়, লকডাউন শিথিল করার পরেও প্রথম দিকে চট্টগ্রামের শপিংমলগুলো ছিল ক্রেতাশূন্য। তবে ঈদ যতই ঘনিয়ে এসেছে, ততই এখানে বেড়েছে মানুষের ভিড়।সকাল ১০ টা থেকে শুরু করে এই ভীড় মধ্যরাত পর্যন্ত থাকছে।যদিও সরকারি নির্দেশনায় প্রতিদিন বিকেল ৫ টার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছিল। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে সরকার মার্কেট ও শপিংমল খোলার অনুমতি দিলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না কোন নিয়ম কানুন। দেখা যাচ্ছে,অধিকাংশ দোকানদারের মুখে মাস্ক নেই।থাকলেও এদের অনেকের মাস্ক মাথার উপর, কারো থুঁতনির নিচে আবার কারোটা পকেটে।ক্রেতাদের অনেককেও যথাযথভাবে মাস্ক না পড়তে দেখা যায়।এখানে মার্কেটের প্রবেশ মুখে নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা। যদিও দোকান খোলার অনুমতি দেয়ার সময় এইসব বিধিনিষেধ মানার ওয়াদা করেছিল ব্যবসায়ী নেতারা। সরেজমিনে বুধবার নগরীর নিউমার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, রিয়াজুদ্দিন বাজার, স্যানমার ওশান সিটিতে গিয়ে দেখা মানুষের প্রচন্ড ভিড়।অবস্থা দেখে বুঝার উপায় নেই, দেশে করোনা মহামারি চলছে। তরুণ তরুণীদের পাশাপাশি বয়স্করাও এসেছেন শপিং করতে। শিশু সন্তানদের নিয়ে অনেক বাবা মা এসেছেন কেনাকাটা করতে। নগরীর জিইসি মোড়ের স্যানমার ওশান সিটিতে পরিবার নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা সরকারি সিটি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হোসাইন আহমেদ জানালেন, গতবারও নাতি নাতনিদের জন্য কিছু কেনা হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে মার্কেটে আসতে হয়েছে। এদিকে বড় বড় মার্কেট ও শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধি কিছুটা মানা হলেও ফুটপাতের ভাসমান ব্যবসায়ীরা একেবারে বেপরোয়া। তারা কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এমনকি তাদের ক্রেতারাও না। বরং ক্রেতারা গা-ঘেঁষাঘেঁষি দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছেন। নগরীর জহুর হকার মার্কেটে মাস্ক ছাড়া শপিং করতে আসা রুবেল মিয়াকে জিজ্ঞাসা করতেই বলেন, ‘ এভাবে মাস্ক পড়ে থাকলে মুখ চুলাকায়। তাই মাস্ক পড়া হয়নি।আর এভাবে মাস্ক পড়ে থাকলে তো প্রতিদিন ৩-৪ টা মাস্ক লাগবে।এই টাকা কি সরকার দিবে আমাদের? ‘ তামালকুন্ডি লেইনের ফুটপাতে জুতা কিনতে আসা গার্মেন্টস কর্মী জিয়াবুল স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে এসেছেন কেনাকাটা করতে। এসময় তাদের স্বামী -স্ত্রীর মুখে মাস্ক থাকলেও বাচ্চার মুখ মাস্ক নেই। এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মার্কেটে আসার সময় বাচ্চার জন্য দুইটি মাস্ক নিয়ে এসেছেন। কিন্তু সে কোনভাবেই মুখে মাস্ক দিতে চাইনা।দেয়া মাত্রই ফেলা দেয় নগরীর শপিং কমপ্লেক্সের জিয়া ফ্যাশনের মালিক আব্দুল করিম বলেন, ‘ সারাক্ষণ মাস্ক পড়ে থাকতে খুব কষ্ট হয়।এরপরও আইন মানতে এটা পড়ে থাকতে হচ্ছে। তবে মানুষ তো বুঝে না। অনেকেই মাস্ক পড়ে আসেনা। দোকানের মুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা থাকলেও তারা তা দিতে চায়না। আমরা তো এটার জন্য তাদের জোর করে দোকান থেকে বের করে দিতে পারিনা।’ এদিকে মাস্ক না পড়াসহ স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে অবহেলা করায় জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত কয়েক দফা নগরীর বিভিন্ন মার্কেটে অভিযান চালিয়েছে।এছাড়া নগরীর ডবলমুড়িং থানার পুলিশ মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে মাস্ক ছাড়া আসা লোকজনকে ধরে এনে ৩০ মিনিট রাস্তায় দাঁড়িয়ে রাখার অভিনব শাস্তি ব্যবস্থা চালু করেছে । যদিও স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ সামগ্রিক বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ছালেহ আহমেদ সোলেমান জানান, গত বছর থেকে ব্যবসায়ীদের আয় রোজগার নেই। সাধারণ মানুষও কেনাকাটা করতে না পারায় বেশ বিরক্ত ছিলো। তবে সরকার লকডাউন শীতিল করাই বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। ক্রেতা বিক্রেতা সবাই খুশি। তবে ব্যবসায়ীরা চেষ্টা করলেও মানুষ অসচেতন হওয়ায় সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মানা যাচ্ছে না।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status