অনলাইন

খাবার দেখে মনে হলো আজ তো ঈদ

 মরিয়ম চম্পা

২০২১-০৫-১৪

আমাদের কাছে ঈদের দিন আর অন্যান্য দিন একই সমান। আলাদা করে কাজ করছি বলে মনেই হয় না। সত্যি বলতে কী গত বছর হাসপাতালে ঢোকার পরে ভুলে গিয়েছিলাম আজ ঈদের দিন।

হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসার পরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের সৌজন্যে আমাদের জন্য দুপুরের খাবার পাঠানো হয়েছিল। ওই খাবার দেখে প্রথমে মনে হয়েছিল আজ তো ঈদের দিন।

মানবজমিনের সঙ্গে করোনাকালের ঈদ উদযাপন
সম্পর্কে এমন অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আহমেদ লুৎফুল মোবেন। তিনি বলেন, গতবছরও ঈদের দিন হাসপাতালের করোনা আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে কেটেছে। এ বছর সেকেন্ড ওয়েভে অনেক বেশি চাপের মধ্যে ছিলাম। গতবছরও একই ধরনের কাজের চাপ ছিল। বরং গত দু’সপ্তাহ আগে যে প্রেসারটা গেছে আমাদের ওপর দিয়ে সেটা গত বছর ঈদের সময়ও ছিল।

ডা. লুৎফুল মোবেন বলেন, হাসপাতালের কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র কোনো পরিবর্তন হয়নি। ঈদের দিন যে কাজ থাকে অন্যান্য দিনও কিন্তু একইরকম কার্যক্রম থাকে। এই সময়টায় আমরা যে ঈদের দিন আলাদা করে কাজ করছি সেটা কখনো মনে হয়নি।

এই চিকিৎসক বলেন, এবারের ঈদে আসলে আলাদা করে তেমন কোনো প্রস্তুতি নেই। গতবছর ঈদের সময় আমরা হাসপাতালে ডিউটিরত ছিলাম। এবং হোটেলে থাকতাম। এ বছর অবশ্য বাসা থেকে যাচ্ছি। এ বছর আলাদা করে ঈদের কোনো প্রস্তুতি নেই। গত দেড় বছর ধরে মা ছোট ভাইয়ের বাসায় আছেন। নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে একটু দূরেই রেখেছি। অন্য সময় সাধারণত মা এবং আমরা ভাইয়েরা একত্রে ঈদ উদযাপন  করি। গত দু’বছর ধরে এটা হচ্ছে না। যে যার কর্মস্থলে থাকতে হচ্ছে।

এ বছরও ঈদের দিন ডিউটি থাকবে উল্লেখ করে এই চিকিৎসক বলেন, বাসায় এখন দুই বাচ্চা এবং স্ত্রী রয়েছে। আমার স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। এবারের ঈদের প্রস্তুতি বলতে ছোট দুই বাচ্চার জন্য অনলাইনে অর্ডার দিয়ে দুটো জামা কিনেছি। আমরা কোনো ঈদের পোশাক ক্রয় করিনি। তবে আমার এক বাল্যবন্ধু আমার স্ত্রী ও আমাকে দুটো পোশাক উপহার দিয়েছে। এই হচ্ছে প্রস্তুতি। আমার স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। যেহেতু এবার বাইরে বেড়াতে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রফেশনের দিক থেকে বললে বলতে হয়, এটার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম। এই পেশায় যোগদানের সময় আমরা শপথ করেই এসেছি। তাছাড়া সেনাবাহিনী, পুলিশ, সাংবাদিক যে যখন তার ইমারর্জেন্সি মুহূর্তে থাকে তারা ঠিক এভাবেই দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এবারের মহামারিতে যেহেতু আমাদেরকে সামনে থেকে লড়তে হচ্ছে। খুব স্বাভাবিকভাবে আমাদেরকে এই সেক্রিফাইসটুকু করতে হবে। মাঝে মাঝে যে কষ্ট লাগে না, তা নয়। অন্য সময়ে যে ঈদের আনন্দটা গত দু’বছর ধরে একেবারেই নেই। কখনো কখনো হাঁপিয়ে উঠি। কিন্তু সবশেষে যখন এটা মনে হয় যে, আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি। তখন নিজের ভেতরে একটি ভালোলাগা কাজ করে। এবং নিজেকে আরো বেশি উৎসাহিত করে। সম্ভবত এই উৎসাহটা মাঝে মধ্যে তৈরি হয়ে যায় বলেই লড়াইটা এখনো চালিয়ে যেতে পারছি।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status