× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আইরিশ ক্যান্সার সোসাইটির রিপোর্ট / স্বপ্ন পূরণের এডভেঞ্চার ড. আরমানের

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(২ বছর আগে) জুন ১৩, ২০২১, রবিবার, ১:৩১ অপরাহ্ন

২৫ বছর আগে ক্যান্সার গবেষণায় ক্যারিয়ার গড়ার জন্য বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন ড. আরমান রহমান। কিন্তু একদিন দূরের দেশ আয়ারল্যান্ডে তার নিজের সম্প্রদায়কে পুরো মাত্রায় সাহায্য করতে পারবেন- এমনটা তখনও তিনি অনুধাবন করতে পারেননি। কিন্তু সেই এডভেঞ্চারকে সত্যে পরিণত করেছেন ড. আরমান রহমান। এই এডভেঞ্চার বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তিনি মাস্টার্স এবং পিএইচডি করেছেন সুইডেনে। প্রথমেই তিনি পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন সুইডেনে। পড়াশোনা করেছেন কার্ডিওথোরাসিস সার্জন হিসেবে। তারপর আয়ারল্যান্ডে ক্যান্সার গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাংলাদেশের এই চিকিৎসককে নিয়ে আয়ারল্যান্ডের আইরিশ ক্যান্সার সোসাইটি একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এতে আরমান রহমানের জীবনের অনেক কথা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তার জন্ম বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায়। কলেজ জীবনের পড়াশোনা করেছেন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে। আরমান রহমান বলেন, জনস্বাস্থ্যে মাস্টার্স সম্পন্ন করার জন্য আমি ১৯৯৬ সালে সুইডেন আসি। আমার ধারণা ছিল এই ডিগ্রি সম্পন্ন করে বাংলাদেশে ফিরে যাব। কিন্তু রোগপ্রতিরোধ বা ইমিউনোলজিতে পিএইচডি সম্পন্ন করার বাসনায় রয়ে যাই। অনাকাঙ্খিত এক ঘটনায় আমার সেই লক্ষ্য পাল্টে গেল। কার্ডিওথোরাসিস সার্জন হিসেবে পিএইচডি পড়া স্থগিত করতে হলো। তখন আমার মনে হলো, আমি তো পিএইচডি অর্ধেকটা সম্পন্ন করেছি। এখন যদি আবার পড়াশোনা শুরু না করি, তাহলে তো এটা আর কখনোই করা হবে না। ২০০৫ সালে আবার আমি গবেষণায় আত্মনিয়োগ করি। ফলে ২০০৭ সালে অর্জন করি পিএইচডি। সার্জারি বা অপারেশন থিয়েটারে আমি ফিরে যাই নি। কারণ, আমি চেয়েছি বিশ্বজুড়ে একজন একাডেমিক বা শিক্ষাবিদ হিসেবে আমার ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে। সেটা করতে ডিসিইউতে পোস্টডক্টরাল ফেলোশিপ সম্পন্ন করতে ২০০৮ সালে আয়ারল্যান্ডে পা রাখি। এখান থেকেই আমার আয়ারল্যান্ড যাত্রা শুরু।
এখানে ইউসিডিতে অনকোমার্কের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে ফুলটাইমের জন্য সিনিয়র গবেষক হয়ে ওঠেন তিনি। ওই ইউনিভার্সিটিতে ২০১৬ সালে গবেষক হিসেবে যোগ দেন। বিস্ময়কর এক প্রকল্পে তার কাজের জন্য আইরিশ ক্যান্সার সোসাইটি রিসার্স এওয়ার্ড বিজয়ী হন ড. আরমান রহমান। তাকে সিনিয়র রিচার্সার হিসেবে নাম ঘোষণা করে এই পুরস্কার দেয়া হয়। তার গবেষণা ক্যান্সার চিকিৎসায় প্রভূত উন্নতি সাধন করেছে। তিনি কাজ করেছেন উদ্ভাবনী টিস্যু ইমেজিং প্লাটফর্ম নিয়ে। এর ওপর ভিত্তি করে রোগীর সুনির্দিষ্ট ক্যান্সারের জন্য কোন চিকিৎসা অধিক কার্যকর হতে পারে তার উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা করেছেন। ড. আরমান বলেন, যদি রোগীর সুনির্দিষ্ট রোগের বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকে তাহলে চিকিৎসায় ভাল হওয়ার চেয়ে রোগীর ক্ষতি হতে পারে। এমন চিকিৎসাও দেয়া হয়ে থাকতে পারে। কারণ, চিকিৎসকদের মাথায় কোনো জাদুর কাঠি নেই যে, তিনি জেনে যাবেন রোগীকে চিকিৎসা দিলে তিনি ভাল হয়েই যাবেন। এর ফলে একজন রোগীর পরিণতি খারাপও হতে পারে। প্রিসিশন অনকোলজি আয়ারল্যান্ডের প্রফেসর উইলিয়াম গ্যালাঘারের তত্ত্বাবধানে নিজের প্রকল্প নিয়ে এসব কথা বলেছেন ড. আরমান। তিনি আরো বলেছেন, যদি আপনি টিস্যুর দিকে দৃষ্টি দেন এবং বলতে সক্ষম হন যে একজন রোগীর কি সমস্যা আছে, তাহলে তা হবে সর্বোত্তম পূর্বাভাস। কারণ, আপনি তো একজন গবেষক বা চিকিৎসক হিসেবে মাইক্রোস্কোপের নিচে ঠিক জিনিসটিই দেখতে পাচ্ছেন।
বর্তমানে তিনি একজন পাকা গবেষক। তিনি যেভাবে পারেন, সেভাবেই নিজ দেশের মানুষদের সফলতার সঙ্গে সেবা দেয়ার চেষ্টা করেন। গত বছর তিনি ‘ইনভিজিবল স্পেক্ট্রাম’ সিরিজে আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যদের উদ্দেশে বক্তব্য রেখেছেন। ওই সিরিজ বক্তব্যে ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো হয়। এর আয়োজক ছিল প্রিসিশন অনকোলজি আয়ারল্যান্ড এবং আইরিশ ক্যান্সার সোসাইটি। এরপর থেকে তিনি দেশি বিদেশি নারী-পুরুষ এবং সাধারণ মানুষকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও এ সংক্রান্ত নানাবিধ তথ্য শেয়ার করে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। লেখালেখি করছেন বাংলা ভাষার মিডিয়ায়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর