রাজধানীর আগারগাঁওয়ের সংসদ সচিবালয় কোয়ার্টার থেকে খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগ নেত্রী নুসরাত জাহান (২৮) নামে এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। গত শনিবার বিকালে বি-২ নম্বর কোয়ার্টারের বাসার দরজা ভেঙে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, নুসরাত ২০১৯ সালে মামুন মিল্লাত নামে ওই যুবককে বিয়ে করেন। ওই সময় মামুন নিজেকে ৩৮তম বিসিএসের পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে নুসরাত তার স্বামী মামুন মিল্লাতের সঙ্গে আগারগাঁওয়ের সংসদ সচিবালয় বি-২ নম্বর কোয়ার্টারে সাবলেট ভাড়া ওঠেন। ঘটনার দিন বেলা ১১টা পর্যন্ত স্বামী মামুন মিল্লাতকে বাসায় দেখতে পান প্রতিবেশীরা। এর কিছুক্ষণ পর তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে যান।
দুপুর ১২টার দিকে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করে নুসরাতের সাড়া না পেলে এতে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। এ সময় এক প্রতিবেশী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে আগারগাঁও থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। বাসার দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় নুসরাতকে ঝুলতে দেখে। মরদেহ নামিয়ে ওইদিন বিকালে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। প্রতিবেশীরা জানায়, নুসরাত ও তার স্বামীর মধ্যে প্রায়ই কলহ হতো।
শনিবার সকালেও তারা নুসরাত ও তার স্বামীর ঝগড়া শুনেছেন। এ ছাড়া তারা প্রায় দিনই ঝগড়া করতেন। গত তিন মাস ধরে ওই দুইজন সাবলেট ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী মামুন মিল্লাত পলাতক রয়েছেন। পুলিশ জানায়, নিহত নুসরাতের স্বামী মামুন মিল্লাত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সাবলেটে ভাড়া নিয়েছিলেন। তবে পুলিশ যাচাই বাছাই করে ইতিমধ্যে নিশ্চিত হয়েছে মামুন মিল্লাত পুলিশের কেউ নন। তিনি একজন প্রতারক। প্রতারক মামুনের প্ররোচনায় নুসরাত আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মেয়ে নুসরাত পলাতক মামুন মিল্লাতকে বিয়ের পর ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত হন। তার বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলায়।
তিনি জেলা ছাত্রলীগের নেত্রী ছিলেন। এ বিষয়ে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুন্সী মানবজমিনকে বলেন, নিহত নারীর বাড়ি চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলায়। তার বাবা এবং ভাই খবর পেয়ে ঢাকায় এসেছেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতের পলাতক স্বামীকে আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।