বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোকে ১০০ কোটি ডোজ করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর নেতারা। বৃটেনের কর্নওয়ালে সমাপ্ত তিন দিনের জি-৭ সামিটের সমাপনী দিনে এ কথা বলেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সম্মেলন শেষে তিনি বলেন, টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে জাতীয়তাকে অগ্রাধিকার দেয়ার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, বিশ্বকে টিকা দেয়ার মধ্য দিয়ে জি-৭ এর গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সুযোগ প্রদর্শিত হবে। সম্মেলনে চীনের সিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিমদের বিরুদ্ধে নির্যাতন, হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থিদের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন সহ নানা অভিযোগ আনা হয়। করোনা মহামারির কারণে দুই বছরের মধ্যে বিশ্ব নেতাদের এটা প্রথম কোনো বড় সম্মেলন। এতে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, স্বার্থপরদের যেন আমরা প্রত্যাখ্যান করি এ জন্য আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে বিশ্ব। জাতীয়তাবাদী ধ্যানধারনার কারণে প্রাথমিকভাবে করোনা মহামারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া বিঘিœত হয়েছে।
করোনাকে পরাজিত করার জন্য আমাদের কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা বিঘিœত হয়েছে। তবে আশার বাণী শুনিয়েছেন বরিস জনসন। তিনি বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অধীনে কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় অথবা সরাসরি দরিদ্রদের কাছে টিকা সরবরাহ দেয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে জি-৭। এর মধ্যে বৃটেন দেবে ১০ কোটি ডোজ টিকা।
জি-৭ সম্মেলন থেকে নি¤œ ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে অবকাঠামো নির্মাণে সমর্থন দেয়ার পরিকল্পনার কথা বলেন নেতারা। প্রতিদ্বন্দ্বী চীন এদিক দিয়ে অনেকটা অগ্রসর হয়েছে। তাদের সেই ধারাকে কাউন্টার দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জি৭ নেতারা। সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, চীন যেখানে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)- উদ্যোগ নিয়েছে, তার মতো করে বিকল্প হিসেবে অধিক গুনগত মানসম্পন্ন একটি পরিকল্পনা নেয়া যেতে পারে। এমন উদ্যোগের নাম হতে পারে বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড (বিথ্রিডব্লিউ)। এতে সমর্থন থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের। উল্লেখ্য, এরই মধ্যে বিআরআই কর্মসূচির মাধ্যমে বহু দেশে রেল, সড়ক এবং বন্দর নির্মাণে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে চীন। তবে এই ঋণ দেয়ার মাধ্যমে ওইসব দেশকে ঋণের ফাঁদে চীন আটকে ফেলছে বলে সমালেচনা আছে।