বাংলাদেশ থেকে আশঙ্কাজনক ভাবে কমে যাচ্ছে কাঁচাপাট রপ্তানি। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনও কমছে। অনেকেই ব্যবসা থেকে সরে যাচ্ছেন। করোনার প্রভাব, বিদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী কাঁচাপাট সরবরাহ না করা এবং দেশেই কারখানার চাহিদা মেটানোর কারণে কাঁচাপাট রপ্তানি কমে যাচ্ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশনের (বিজেএ) তথ্য মতে, ২০০৭-০৮ অর্থবছর থেকে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের (এপ্রিল) মধ্যে দেশের কাঁচাপাট রপ্তানিতে ব্যাপক পতন হয়েছে। রপ্তানি কমে যাওয়ায় ব্যবসা ছেড়ে দেয়ার পাশাপাশি ব্যাংকের লোন সমন্বয় করতে না পারায় অনেকে জেলে, আবার কেউবা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বিজেএ’র সূত্র জানায়, এমনও অর্থবছর ছিল যে সময় বাংলাদেশ থেকে ২৮ লাখ বেলের বেশি পাট রপ্তানি করতো ব্যবসায়ীরা। কিন্তু নানা প্রতিকূলতার কারণে পাট রপ্তানিতে ধস হওয়ায় আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে পাট রপ্তানি। সর্বশেষ অর্থবছরে মাত্র ৫ লাখ বেল কাঁচা পাট রপ্তানি করেছে।
এদিকে বিশ্বের ৩০টির বেশি দেশে পাট রপ্তানি হলে সেটি কমে এসেছে মাত্র ১৩টি দেশে। তবে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এখনো বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চ পরিমাণ পাট আমদানি করছে। খুলনার পিনিতাহ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির স্বত্বাধিকার ও প্রগতি জুট সাপ্লাইয়ের সিইও এস এম সাইফুল ইসলাম পিয়াস বলেন, করোনার প্রভাবে কাঁচাপাট রপ্তানি কমেছে। এ ছাড়া দেশে কাঁচাপাট উৎপাদনও কমে যাওয়ায় পাট রপ্তানি হ্রাসের প্রধান কারণ। ২০২০-২১ অর্থবছরে যে পাট রপ্তানি করা হয়েছে তাতে রপ্তানিকারকরা বেশি লাভ করতে পারেনি। তাছাড়া পাটের দামও ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা মণ প্রতি বেশি হওয়ায় পাট কিনতে অনীহা ছিল ব্যবসায়ীদের। তিনি আরও বলেন, দেশেই অনেক কারখানা তৈরি হয়েছে। যার ফলে উৎপাদিত কাঁচাপাটের বড় একটি অংশ দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদা মেটানোর কারণেও পাট রপ্তানি কমেছে। খুলনা ও নারায়ণগঞ্জের কাঁচাপাট ব্যবসায়ীরা আশঙ্কার মধ্যে আছে। বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশনের (বিজেএ) সভাপতি শেখ সৈয়দ আলী জানান, করোনায় কাঁচাপাট ব্যবসায়ীদের খুবই খারাপ অবস্থা। সরকার থেকে কোনো প্রণোদনাও দেয়া হয়নি। দিনে দিনে দেশ থেকে কাঁচাপাট রপ্তানি কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা হতাশায় পড়েছে। অনেক ব্যবসায়ীরা ব্যাংক লোন করে সমন্বয় করতে পারেনি এটা সঠিক তবে তাদের তালিকা আমার কাছে নেই। রপ্তানি কমে যাওয়ায় আয়ও কমছে। ফলে ব্যবসায়ীদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।