কাজ শুরুর পর সময় অতিবাহিত হয়েছে এক যুগ। ১২ বছরেও শেষ হয়নি দিরাই-শাল্লা সড়কের কাজ। সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছেন কয়েক লাখ মানুষ। জানা যায়, দিরাই-শাল্লার দূরত্ব ১৯ কিলোমিটার। সুনামগঞ্জ থেকে দিরাই পর্যন্ত সড়ক রয়েছে। কিন্তু দিরাই থেকে শাল্লার ১৯ কিলোমিটার অংশে যোগাযোগ সড়ক স্থাপনের জন্য ২০১১ সালে শুরু হয় দিরাই-শাল্লা সড়কের কাজ। প্রধানমন্ত্রী’র প্রতিশ্রুত এই প্রকল্পে বরাদ্দ হয় ১১৯ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল সড়কের কাজ।
কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। এই সড়কের প্রায় ১শ’ কোটি টাকার বিলও উত্তোলন করেছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা। কিন্তু এখনো বেহাল অবস্থায় আছে সড়কটি। বছর খানেক আগে সড়কের কাজ করার জন্য আবারো প্রায় সাড়ে ৫ শ’ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা স্থানীয় সড়ক বিভাগ সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠালেও এখনো প্রকল্পটি অনুমোদন হয়নি। এমনি সময়ে শাল্লা থেকে সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে জনপ্রতি ১৫০ টাকা। আর বর্ষায় ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা লাগে। সরজমিন দেখা যায়, সড়কের অনেক স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সড়কের স্লোপ ঠিকভাবে না হওয়ায় বেশির ভাগ অংশ সরু হয়ে গেছে। হাওরের ঢেউ থেকে সড়ক রক্ষা করার জন্য দেয়া ব্লক০ অনেক স্থানে ছুটে গেছে। সড়কের ছোট ছোট ৩টি সেতুতে অ্যাপ্রোচ সড়ক নেই। ১৭টি কালভার্টের বেশিরভাগের অ্যাপ্রোচে মাটি নেই। স্থানীয়রা বলছেন- যেখানে সেতু বা কালভার্ট প্রয়োজন সেখানে হয়নি, আবার যেখানে প্রয়োজন নেই, সেখানে সেতু ও কালভার্ট হয়েছে। শাল্লা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলামিন চৌধুরী বললেন, প্রকল্প অনুমোদনও হবে না, যোগাযোগের স্বপ্নেরও বাস্তবায়ন দেখবে না শাল্লার মানুষ। তিনি বললেন, দিরাই থেকে মিলন বাজার পর্যন্ত সড়ক আছে, ওই সড়ক থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার হাওর অংশেও প্রতিবছর হাওর রক্ষা বাঁধ হয়। এই হাওর রক্ষা বাঁধকে স্থায়ী বাঁধে রূপ দিয়ে সড়ক করলেই দিরাই-শাল্লার হেমন্তে-বর্ষার মন্দের ভালো যোগাযোগ সড়ক হয়। সেটাও হচ্ছে না। সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, এই সড়কটির প্রকল্প প্রস্তাবনা অনেক আগেই সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অভ্যন্তরীণ যাচাই-বাছাই কমিটিতে সড়ক নির্মাণের জন্য ৫৫১ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা নির্ধারণ করা হয়। পরে ডিজাইন সেকশন থেকে সরজমিন পরিদর্শন করে প্রকল্প প্রস্তাবনা ৮৫৭ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। প্রকল্প ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. জাকির হোসেনের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ দল গত ১৭ই মে সরজমিন এই সড়ক পরিদর্শন করেন। তাদের যাচাই-বাছাই রিপোর্ট দেয়ার পর পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ হবে।