বাহুবলে অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে অগ্নিদগ্ধ শিশু ঝরনা আক্তার। ঈদের ছুটিতে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে বাড়িতেই কাতরাতে হচ্ছে ঝরনাকে। গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে চুলায় আগুন পোহাতে গিয়ে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের দিনমজুর তাজুল ইসলামের মেয়ে ঝরনা আক্তার (৮) অগ্নিদগ্ধ হয়। ওইদিনই তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সরজমিন শিশুটির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটি কুঁড়েঘরে শিশুটি শয্যাশায়ী অবস্থায় আছে। গলার নিচ থেকে নাভি পর্যন্ত পুরো পেট ও বুকে দগ্ধের ঘাঁ। তা থেকে এখন পুজ-পানি ঝরছে। শারীরিক যন্ত্রণায় কিছুক্ষণ পরপরই শিশুটি কান্না করে উঠছে।
অগ্নিদগ্ধ শিশু ঝরণা আক্তার স্থানীয় রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্রী। ৫ ভাইবোনের মাঝে সে ৩য়। তার পিতা দিনমজুর হিসেবে যা আয় করতেন- তা দিয়েই কোনোমতে সংসার চলতো। থাকার মধ্যে শুধু ২ শতক জমির উপর একটি ছোট বসতঘর। কিন্তু শিশু ঝরণা আক্তার অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর চিকিৎসা খরচ চালাতে তাও বিক্রি করে দিতে হয়েছে। বসতঘর বিক্রির পর থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে উঠেছেন।
ঝরণা আক্তারের পিতা তাজুল ইসলাম বলেন, অগ্নিদগ্ধ হওয়ায় গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি আমার মেয়েকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে ঈদকে সামনে রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৬ই মে ছাড়পত্র দিয়ে ঈদের পর পুনরায় ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। তখন ডাক্তাররা বলেছিল পুনরায় ভর্তির পর প্লাস্টিক সার্জারি সম্পন্ন করা হবে। কিন্তু প্লাস্টিক সার্জারির জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। টাকার ব্যবস্থা করতে না পারায় মেয়েটিকে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি করতে পারিনি। দিনমজুর হিসেবে কাজ করে যা রোজগার হয়, তা দিয়ে পরিবার-পরিজনের মুখে আহার তুলে দেয়াই কষ্টকর। চোখের জল মুছতে মুছতে তিনি বলেন, ‘শুনেছি, বহু অসুস্থ-অসহায় লোকজনের দুর্দশার কথা মিডিয়ায় প্রচার হওয়ার পর দেশ-বিদেশের লোকজন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমার মেয়েটার জন্য আপনারা এমন কিছু করতে পারেন না?