শুক্রবার ১ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৭৭আওয়ামী লীগের বিশেষ সম্মানীয় একজন নেতা ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। তিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তার নেতৃত্বেই স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালিত হয় ও বিজয় অর্জিত হয়। প্রবাসী সরকারের প্রধান হিসেবে তার গতিশীল নেতৃত্বের গুণাবলীর কারণেই তাজউদ্দীন দেশের ভেতরে ও বাইরে প্রবল সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তেজোদীপ্ত ও গতিময় নেতা হিসেবে তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে জাতির অন্যতম স্থপতি হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
কিন্তু হায়! ২৩ জুলাই ছিল এই মহান নেতার ৮৩তম জন্মদিবস। আওয়ামী লীগ এই দিনটি উদযাপনও করেনি কিংবা তার প্রতি কোনোরকম সম্মান দেখাতে গিয়ে একটা বিবৃতি পর্যন্ত প্রকাশ করেনি। এতে আওয়ামী লীগের হীনমন্যতারই শুধু পরিচয় মেলে। তারা মনে করেন, আওয়ামী লীগের ধারণায়, যা তাদের সুশীল সমাজও মনে করেন যে, তাজউদ্দীন আহমদকে কোনোভাবে প্রশংসা করা হলে ইতিহাসে শেখ মুজিবের একক আসন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠবে যা তাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে বিব্রত করবে।
এটি সত্যি দুর্ভাগ্যজনক।
শনিবার ২ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৭৮আজ পিজি হাসপাতালে আমার ডান চোখের পাতার উপর অপারেশন করে ছোট্ট দানাটি বের করা হয়েছে। ফলে সারাদিন আমার এক চোখ ছিল ব্যান্ডেজকৃত। কোনো এবাদত কিংবা পড়াশোনা করতে পারিনি। লক্কড়ঝক্কড়মার্কা প্রিজন ভ্যানে করে হাসপাতাল থেকে জেলখানায় ফিরে যাওয়ার সময়টা ছিল বেদনাদায়ক।
রবিবার ৩ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৭৯আমার স্বাস্থ্য পরিস্থিতির অবনতি প্রতিদিনই ঘটছে। ওজন কমার সাথে সাথে আমি ভেতরে ভেতরে দারুণভাবে দুর্বল বোধ করছি এবং জীবনের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ আমি আর উপভোগ করতে পারছি না।
দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসছে দ্রুত। জেলখানার ডাক্তার আমাকে অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট দেওয়ার সাথে সাথেই আমার দেহে তার প্রতিক্রিয়া হয়। সকালে আমি দেখতে পাই যে, আমার ওপরের ঠোঁট ফুলে গেছে ও প্রচ- ব্যথা হচ্ছে তাতে। হাসপাতালে আমার চোখ থেকে ব্যান্ডেজ খুলে নেওয়ার পর ভুল ওষুধটিও প্রত্যাহার করা হয়।
সোমবার ৪ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৮০প্রায় সারাটা দিন কেটেছে পানি ও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায়। কাজেই আমার প্রায়ান্ধকার ঘরে মোমবাতি ছিল একমাত্র ভরসা। অনেকদিন পর আমাদের দুপুরের খাবারের সময় দেওয়া হয়েছে মহার্ঘ্য ইলিশ মাছের একটা টুকরো। কিন্তু অন্ধকার-প্রায় কক্ষে কাটা বাছা অসুবিধাজনক বলে শেষ পর্যন্ত আমি আর তা মুখে দেইনি।
প্রায় মাস খানেক পরে ড. হেলালের মাধ্যমে হাসনার ব্যাপারে কিছুটা খবর পেয়েছি গতকাল। সঙ্গত কারণেই মানসিক বিপর্যয়তায় আমার কন্যা আনা গত মে মাসে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। আমার জন্যই এমনটি ঘটায় একরকম অপরাধবোধে ভুগছি আমি। আমার কারণে আমানও ওজন হারাচ্ছে দ্রুত। আমার জন্য সে কতটা উদ্বিগ্ন তা আমি বুঝি, কিন্তু এও জানি যে, সে অনুভূতি আমান ভাষায় প্রকাশ করতে অক্ষম।
মঙ্গলবার ৫ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৮১আমি ছিলাম হাসপাতালে। ওপরের ফোলা ঠোঁট আরো বেশি ফুলে যাওয়ায় ব্যথার চোটে ভালো করে খেতে বা ঘুমাতে পারিনি। অত্যন্ত অস্বস্তিকর, দুর্বল ও পরিশ্রান্ত মনে হচ্ছে নিজেকে।
একতরফা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রত্যাশিতভাবে সবকয়টা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে জিতেছে। রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেটে মেয়র পদে এবং ৯টির মধ্যে ৮টি পৌরসভা মেয়র পদে। আরো মজার ব্যাপার হলো সিলেটে দুর্নীতির অপরাধে অভিযুক্ত বদরুদ্দিন আহমেদ কামরান জেলখানায় বসে আগেরবারের চাইতে ৭০ হাজার ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনের মাত্র দু’দিন আগে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন নতুন একটি চার্জশিট দাখিল করে, যার ফলে যেখানে তার ভোট কমে যাওয়ার কথা সেখানে তা আরও বেড়ে যায়। উপরন্তু নির্বাচন কমিশনসহ সরকার অব্যাহতভাবে যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিদের পক্ষে ভোটদানের জন্য প্রচারণা চালালেও এবং দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানালেও সিলেটের জনগণ সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে বদরুদ্দিন কামরানকেই ভোট দিয়েছে। এমনটি তাহলে ঘটলো কীভাবে? এই ঘটনাসমূহ বর্তমান সরকারের প্রবঞ্চনা এবং প্রতারণার মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছে।
বুধবার ৬ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৮২কেবলমাত্র সিলেটের মেয়রই নন, মানিকগঞ্জ পৌরসভার রমজান আলীও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটকাবস্থায় থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছে। তিনিও আটক রয়েছেন কথিত দুর্নীতির অভিযোগে। সব মিলিয়ে ১৩টি মেয়র, ৪টি করপোরেশন এবং ৯টি পৌরসভায় ৯ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির ২৮টি মামলা এখনো ঝুলে আছে। ফলে জনগণ শুধু সরকারের অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিরাজনীতিকরণের ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থই করে দেয়নি, উপরন্তু রাজনীতিবিদদের দুর্নীতিমুক্ত যে সমাজব্যবস্থার পক্ষে সরকার জোর গলায় প্রচার চালাচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে জনগণ সামনা-সামনি রুখে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে আমি বহুবার যেমনটি বলেছি, এ সরকার শুধু একটি ধড়হীন এবং নেতৃত্বহীন সরকারই নয়, একটি লজ্জাহীন সরকারও বটে। এর উদ্ভবই ঘটেছে আমাদের সকল অর্জন বিনষ্ট করে দেওয়ার জন্য, আফ্রিকার জঙ্গল ছাড়া সুসভ্য কোনো সমাজে এ ধরনের সরকারের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।
বৃহস্পতিবার ৭ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৮৩সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদবলে জনগণই যেখানে সকল ক্ষমতার উৎস, সেখানে জনগণ যাকেই ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করুক না কেন, ধরে নিতে হবে যে, তারা তাদের পছন্দমতো যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছে এবং সে প্রতিনিধিকেই তাদের জন্য সৎ ও যোগ্য প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচনা করে নিতে হবে। জনগণের রায়ের বাইরে সৎ ও যোগ্যতার জন্য কোনো বাণী, মন্তব্য বা স্বঘোষিত কোনো মাপকাঠি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
আওয়ামী লীগ যদি সমঝোতার পথে না গিয়ে আন্দোলনের পথ বেছে নিত, তাহলে অনেকদিন আগেই এ সরকারের পতন ঘটতো। দু’টি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের যৌথ চাপে সরকার একটি নির্বাচন দিতে বাধ্য হতো এবং গোড়াপত্তন ঘটতে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত একটি সরকারের। এখন যেহেতু জরুরি আইনের অধীনে নির্বাচন করে তারা ৪টি কর্পোরেশনে নির্বাচিত হয়েছে, তাহলে মুখে যাই বলুক না কেন এখন তাদের অগণতান্ত্রিক জরুরি অবস্থার অধীনেই অন্যসব নির্বাচনে অংশ নিতে হবে, যেমনটি তারা করেছিল ১৯৮৬ সালে। সে সময় তারা জনগণের সামনে দেওয়া ওয়াদা ভঙ্গ করে সামরিক আইনের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল।
শুক্রবার ৮ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৮৪অনেকে বলে থাকেন যে, বিএনপি’রও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত ছিল এবং তাতে করে ৪টি সিটি করপোরেশনের মধ্যে তিনটিতে রাজশাহী, খুলনা ও বরিশালে তাদের জয় ছিল সুনিশ্চিত এবং অতীতেও এ আসনগুলোতে তারা জিতেছে। এজন্য তারা অন্যান্য নেতার সাথে আলোচনা না করে নির্বাচন বয়কটের একক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করায় খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে একান্তভাবে দায়ী করেন। তিনি যখন শুধু নির্বাচনে অংশগ্রহণ নয়, উপরন্তু নির্বাচনকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন। তখন নাইকো মামলায় আদালতে উপস্থিত হলে আমি বেগম জিয়াকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেন যে, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে আমার সঙ্গে একমত হন যে, খোন্দকার দেলোয়ার একটি ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এবং নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি ভুল করেছে। পরবর্তীকালে দেখা গেছে যে, বয়কট করা সত্ত্বেও করপোরেশন ও পৌরসভার নির্বাচনে ১৩টি আসনের মধ্যে বেশির ভাগ কমিশনার পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের ব্যাপক সমর্থন পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
শনিবার ৯ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৮৫আমার ঠোঁটের অবস্থার কোনো উন্নতি ঘটেনি। জ্বালাপোড়া খুবই বেদনাদায়ক। প্রত্যেকবার কথা বলার সময় বা মুখ খুললে ব্যথা লাগে। শক্ত যে কোনো কিছু খেতে গেলে বা কামড় দিলে ব্যথা লাগে। ফলে ওজনও আমার দ্রুত কমছে। কোনো ওষুধেই এখন পর্যন্ত ভালো কাজ হয়নি। আমার ফালতু জিয়াউদ্দিন আমার এই অবস্থা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন এবং ভুল অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট দেওয়ায় জেল ডাক্তারকে প্রতিনিয়ত গালমন্দ করছে।
রবিবার ১০ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৮৬অবৈধ এই সরকার দেশ চালাচ্ছে বিগত প্রায় ২০ মাস ধরে। খবরের কাগজে প্রথম পৃষ্ঠার প্রায় পুরোটা জুড়ে রাজনীতিবিদদের দুর্নীতি এবং তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বিভিন্ন দুর্নীতি বিষয়ক মামলার বিবরণী বের হয় যার ফলে সাধারণ জনগণের অন্যান্য জরুরি বিষয়গুলোকে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। সরকার কিংবা সংবাদপত্র কেউই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য সংকট, গ্যাস ও পানি সরবরাহ, বেকারত্ব, ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস কিংবা দারিদ্র্যবিমোচনের মতো জনসম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে তেমন একটা অগ্রাধিকার দিচ্ছে না।
হাইকোর্ট ডিভিশনের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এক রায়ে ঘোষণা করেছেন যে, সংবিধান অনুসারে ৯৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো অধ্যাদেশ জারি করার ক্ষমতা নেই এবং এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হবে শুধু নির্বাচন সংক্রান্ত অধ্যাদেশ। কাজেই, রায় অনুসারে এ যাবৎ ঘোষিত সকল অধ্যাদেশই অকার্যকর হয়ে যাওয়ার কথা। আইন প্রণয়ন করে বা অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নীতি-প্রক্রিয়াসংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে না। কিন্তু সংবিধানে যা-ই বলা হোক এবং সুপ্রিম কোর্ট থেকে যে রায়ই দেওয়া হোক, তাতে এ সরকারের কিছু যায় আসে না। তারা অনবরতভাবে অধ্যাদেশ জারি করে আসছে। এবং সুদূরপ্রসারী ফলাফল নিয়ে আসতে পারে এমন সব নীতি নির্ধারণী বিষয়ে আইনও প্রণয়ন করছে। তারা ভালো করেই জানেন যে, তাদের হাতে রয়েছে বন্দুক এবং তারা কারো কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নন।
সোমবার ১১ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৮৭আমার লেখা দ্বিতীয় বইটিতে অন্তর্বর্তীকালে কী কী পরিস্থিতি জরুরি আইন ঘোষণার ক্ষেত্র প্রভাবিত করেছে তার বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা হবে এবং বাংলাদেশ কেন পর্যায়ক্রমে একটি নতজানু, দুর্বল ও ভঙ্গুর রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে তা পুনঃনিরীক্ষণ ও পর্যালোচনা করা হবে। আমি জানি না দেশে এ বইটি প্রকাশ করতে পারবো কি না- কারণ ভবিষ্যতে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার দ্বার আজকের চাইতেও অনেক বেশি অবরুদ্ধ হয়ে যেতে থাকবে। আমার আশঙ্কা যে, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে অনিরবচ্ছিন্ন গণতন্ত্রের তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। ত্রাস, ভয়, সন্ত্রাস, নিরাপত্তাহীনতা ও আশঙ্কা প্রতিনিয়ত দেশের রাজনৈতিক আবহকে নিয়ন্ত্রণ করে চলবে। দেশে এক পর্যায়ে নির্বাচিত একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও রাজনৈতিকভাবে তা হবে একটি দুর্বল সরকার। ভারত হবে বাংলাদেশের রাজনীতি পরিচালনার মূল নিয়ামক শক্তি। এ হবে এমন এক ধরনের গণতন্ত্র যেখানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র থাকবে নিয়ন্ত্রিত এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিরোধী দলকে দমিয়ে রাখা হবে। সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ তার নিজস্ব রাজনৈতিক শক্তি হারিয়ে ফেলবে ও বৃহৎ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ক্রীড়নক হয়ে পড়বে। জাতীয়তাবাদী শক্তিসমূহের ক্ষমতা ক্রমশ ক্ষীণ হতে থাকবে। সামরিক বাহিনী পরিণত হবে একটি দুর্বল এবং স্বার্থপর প্রতিষ্ঠানে; রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের একটি যন্ত্রে।
এক পর্যায়ে এসে দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো পরস্পরের সঙ্গে জড়িয়ে পড়বে তুমুল বিবাদ, দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষে এবং অন্যদিকে সুসংহত হবে ইসলামী মৌলবাদ- যারা সমাজে সৃষ্টি করবে অরাজকতা, আইনহীনতা এবং সামাজিক অস্থিতিশীলতা। সামরিক বাহিনীকে তখন দাঁড় করানো হবে জনগণের মুখোমুখি ও এভাবে সামরিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা হবে। বাংলাদেশের তখন একমাত্র সম্বল হবে একটি জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত ও একটি দুর্বল সরকার- তা নির্বাচিত বা অনির্বাচিত যাই হোক না কেন। এর বেশি আর কোনো কিছুর অস্তিত্বই থাকবে না।
আমি জানি আমাকে অনেকটাই নৈরাশ্যবাদী বলে মনে হচ্ছে এবং আমার এ মনোভাব হতে পারে ভ্রমাত্মক এবং কল্পনাপ্রসূত। তবে আমার নিদারুণ প্রত্যাশা যে আমার এ আশঙ্কাময় ভবিষ্যদ্বাণী মিথ্যা বলে প্রমাণিত হবে এবং কখনোই তা বাস্তবতার মুখ দেখবে না।
(চলবে...)