× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আমার কটা প্রশ্ন আছে

মত-মতান্তর

পিয়াস সরকার
১৭ জুন ২০২১, বৃহস্পতিবার

হঠাৎ বিশ্বজুড়ে এক আতঙ্ক। অচেনা এক ভাইরাসের আঘাতে থমকে যায় গোটা বিশ্ব। করোনা ধরণ বদলাচ্ছে বারবার। আরো শক্তিশালী আকার ধারণ করলেও বিশ্বজুড়েই কমছে আতঙ্ক। বেরিয়েছে টিকা। বিজ্ঞানীরা ঘাম ছুটাচ্ছেন অদৃশ্য এই ভাইরাসটি রুখতে। বিশ্ব ও দেশে সবই সচল, তবে সাবধানী পায়ে। বাংলাদেশে করোনা যেন থমকে আছে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালায়।

শিক্ষার তালায় জং ধরছে।
এ তালা খুলতে হচ্ছে আন্দোলন। কিন্তু খুলছে আর কই? বারবার বাড়ানো হচ্ছে ছুটি। এমনকি তিনবার ঘোষণা দিয়েও খোলা হয়নি শিক্ষার দুয়ার। শিক্ষার প্রতিটি স্তরে বাড়ছে শঙ্কা। ঝড়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাবধানী বার্তা। কিন্তু অন্যান্য স্থানে তা কই? মাস্ক উধাও। প্রশাসন চুপ। সাগর কণ্যা কুয়াকাটা থেকে ফেরা এক বন্ধুর কাছে শুনলাম নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই জমজমাট সাগর পাড়। উত্তাল সাগরেও পর্যটকদের ভিড়। ঠিক পাশেই ট্যুরিস্ট পুলিশের ক্যাম্প। তাদের কাজ শুধুই মাইকে কয়েকবার সতর্ক বার্তা দেয়া। বার্তা কিন্তু দেয়া হয় আবাসিক হোটেল চালু রেখেই। এমনকি আজ রাতে রাজধানীতে ফিরলাম রংপুর থেকে। সিংহভাগ বাসে মানা হচ্ছে না দুই সিটে এক যাত্রীর আইন। আর বাসে মাস্ক পরিহিত ব্যক্তি মেলা দায়।

যাই হোক এবার আসি শিক্ষার পাতায়। দেশে সব এলাকায় যেখানে মোবাইল নেটওয়ার্কই নেই সেখানে অনলাইনে শিক্ষা কেমন পর্যায়ে আছে তা অনুমেয়। প্রাথমিকের ছোট্ট শিক্ষার্থীদের বদলে যাচ্ছে আচরণ। শহরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা পা ফেলছে ইন্টারনেটের জালে। গেমিং জোন তাদের পদচারণায় জমজমাট। আর গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের হাতে খড়ির বয়সটায় হ-য-ব-র-ল অবস্থা।

মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিকের শহরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কাজ করছে হতাশা। জড়িয়ে পড়ছে মাদকসহ নানা অপরাধে। কিছুদিন আগে রাজধানীর কাজীপাড়া এলাকায় দেখলাম বৃষ্টির মাঝে ওভারব্রিজে ২০-২৫ জনের আড্ডা বসেছে। এই বয়সে দু’আঙ্গুলের ফাঁকে জলন্ত সিগারেট। তাদের কাজই মেয়েদের উত্যক্ত করা। ভয়ে অনেকেই বৃষ্টির পানি মাথায় নিয়েই নিচ দিয়ে সড়ক পাড়ি দিচ্ছেন। আর গ্রামাঞ্চলের ছাত্ররা জড়াচ্ছেন আয়ের সন্ধানে। বাল্য বিবাহের কবলে জীবন ধ্বংস হচ্ছে ছাত্রীদের। ভয়াবহ দুঃচিন্তার মুখে আছেন চলতি বছরের এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীরা। চিরায়ত পরীক্ষা ভীতির পাশাপাশি যোগ হয়েছে হতাশা, উদ্বেগ- পরীক্ষা কবে হবে?

উচ্চ-শিক্ষায় সংকটটা আরও ভয়াবহ। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে মানহীনভাবে শিক্ষা নিয়ে শিক্ষা জীবন পাড়ি দিচ্ছেন। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপাড়া থমকে আছে। করোনায় বন্ধের ১৫ মাস পরে তাদের অনলাইনে পরীক্ষা শুরু হলো। এখন প্রশ্ন উঠছে, কেন এতো দেরিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো? কেন তাদের সেশন জটের মুখে ফেলা হলো? বলা হচ্ছে করোনা টিকা প্রদানের পরই খুলে দেয়া হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এখন অব্দি কোন তথ্য সংগ্রহ করা হলো না কেন? আর টিকা প্রাপ্তি নিয়ে জটিলতাতো আছেই। আর সামগ্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণের বই-খাতা, ক্লাসের বাইরে জীবনমুখি জ্ঞান থেকে তারা আজ অনেক দূরে। আর চলতি বছরের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছুদের কথা না হয় নাই বললাম।

সমস্যা আসবে। তা মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু সমস্যা সমাধানের পথ বেছে নিতে এতো কালক্ষেপণ কেন? পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের দৌড়ের ময়দান থেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেবার সামিল নয় কি? আমরা উপমহাদেশে সর্বোচ্চ সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা দিয়ে রেখেছি কিন্তু কেন? অন্যান্য দেশ পারলে আমরা কেন পারলাম না?

করোনার সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে এলেই খোলা হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে ২৬শে মে ঘোষণা দিলেন ১৩ই জুন খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু তার আগের এক সপ্তাহের শনাক্তের গড় ছিল আট শতাংশের বেশি। তবে কেন জোড় দিয়ে এ ঘোষণা? এমনতো না যে, ঘোষণা দেবার আগে পাঁচ শতাংশের কম ছিল এরপর তা বৃদ্ধি পেয়েছে।

শেষ প্রশ্ন- করোনাকালে ১৫ মাসে ১৫১ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। কেন শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যার পথে হাঁটছেন? এর কারণ আপনারা কী জানেন?
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর