খুলনা বিভাগের একমাত্র শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, ৫০০ শয্যার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনস, বিজিবি’র খুলনা সেক্টর সদর দপ্তর, খুলনার শীর্ষস্থানীয় দু’টি স্কুল-কলেজসহ অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ের কেডিএ’র দু’টি বৃহৎ আবাসিক এলাকা। এ সবই খুলনা সিটি করপোরেশনের মুজগুন্নী মহাসড়কের দুই পাশে অবস্থিত। প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম মহাসড়কটি। কিন্তু সংস্কারের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির অবস্থা চরম ঝুঁকিপূর্ণ ও শোচনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে। মহাসড়কের কিছুদূর গেলেই লাল নিশান টানানো সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দেখলেই সড়কের প্রকৃত চিত্র বোঝা যায়। সম্প্রতি সরজমিন দেখা গেছে, সড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে বিটুমিন উঠে গেছে আরও বছর খানেক আগে। সেখানে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। বৃষ্টিতে গর্ত রূপ নিয়েছে বড় ডোবায়।
সেই গর্ত দিয়ে হেলেদুলে চলছে যানবাহন। প্রায় সেখানে ইজিবাইক উল্টে যাচ্ছে। কাদাপানিতে নাকাল হচ্ছেন মানুষ। মুজগুন্নীসহ আশপাশের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের কষ্টের নাম এখন ‘মুজগুন্নী মহাসড়ক’। এদিকে এমন দুর্ভোগের মধ্যে সড়কের একপাশ খুঁড়ে বিদ্যুতের তার বসাচ্ছে পিডিবি। এতে চার লেনের সড়কের দুই লেন বন্ধ হয়ে গেছে। দুর্ভোগ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সড়ক দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। উল্টে যাওয়ায় রিকশা চলাচলও প্রায় বন্ধ। এখন ইজিবাইকে করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ।
মুজগুন্নী মহাসড়কের বিপরীতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার নাহিদ পারভীনের বাসভবন। তিনি জানান, প্রতিদিন কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসেই যাতায়াত করতেন। কিন্তু খানাখন্দের কারণে গত সপ্তাহ থেকে এই সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ প্রায় ১০/১২ কর্মকর্তা এখন বয়রা বাজার পর্যন্ত ইজিবাইকে যান। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে উঠতে হয়। মহাসড়কের পাশে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) লাইনস। এর প্রধান ফটকের সামনে বিশাল দু’টি গর্ত। ওই গর্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয় পুলিশ সদস্যদের। কেএমপির উপ-কমিশনার (সদর দপ্তর) এহসান শাহ্ বলেন, প্রতিদিন সড়ক দিয়ে আসা-যাওয়া কত যে দুর্ভোগের এটা বলে বোঝাবার নয়। দ্রুত সড়ক সংস্কারের জন্য আমরা অনুরোধ জানিয়েছি।
কেসিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী লিয়াকত আলী খান বলেন, ড্রেন না থাকার কারণে বৃষ্টিতে পানি জমে সড়কটি দ্রুত নষ্ট হয়ে গেছে। এ জন্য আগে ড্রেন নির্মাণের পরেই সড়ক সংস্কার করা হবে। দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করে চলতি শীতেই ড্রেনের কাজ শুরু হবে। আর এই কাজ শেষে আগামী বছর সড়ক সংস্কার হবে। অবশ্য এর আগে ইট ও সুড়কি দিয়ে সড়কটি মেরামত করে চলাচল উপযোগী করা হবে।