বিখ্যাত চিত্রশিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চির আঁকা বিখ্যাত চিত্রকর্ম মোনালিসা’র একটি নকল চিত্রকর্ম নিলামে বিক্রি হয়েছে ৩৪ লাখ ডলারে। এ খবরে অনেকেই চমকে উঠেছেন। ভেবেছেন ল্যুভরে জাদুঘরে মোনালিসা ঠিকঠাক জায়গায় আছেন তো! নাকি সেটাই চুরি করে নিয়ে বিক্রি করে দেয়া হলো! তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ফোরবস ম্যাগাজিন জানাচ্ছে, অরিজিনাল মোনালিসা তার স্থানেই আছেন। তবে তার আদলে আঁকা একটি নকল মোনালিসার চিত্রকর্ম বিক্রি হয়েছে শুক্রবার। যে দাম হাঁকা হয়েছিল তার চেয়ে ১০ গুণেরও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে।
ডয়েচে ভেলে’র রিপোর্ট অনুযায়ী, প্যারিসের ক্রিস্টি নিলাম হাউজে শুক্রবার বিক্রি হওয়া মোনালিসার নাম দেয়া হয়েছে ‘হেকিং মোনালিসা’। ক্রিস্টি বলেছে, এই ‘হেকিং মোনালিসা’কে অনলাইনে কিনে নিয়েছেন একজন ইউরোপিয়ান সংগ্রাহক। তিনি এর দাম ৩৪ লাখ ডলার দিতে রাজি হয়েছেন।
নিলামকারী যে দাম হেঁকেছিলেন এই দাম তার চেয়ে ১০ থেকে ১৫ গুন বেশি। ধারণা করা হচ্ছে, মোনালিসার নকল ছবির এটাই এ যাবতকালের সর্বোচ্চ দাম। ক্রিস্টির একজন বিশেষজ্ঞ পিয়েরে ইতিয়েনে বলেছেন, মোনালিসাকে সৃষ্টি করার পর এখনও শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তার প্রতি মানুষের যে অকৃত্রিম ভালবাসা অনলাইন এই রেকর্ড দামে নকল মোনালিসার বিক্রি তাই ফুটিয়ে তোলে।
নকল মোনালিসার নামকরণ করা হয়েছে রেমন্ড হেকিংসের নামে। পুরাকালের ঐতিহ্যবাহী সব জিনিসপত্রের বিক্রেতা ছিলেন রেমন্ড হেকিং। তিনি ফ্রান্সের একজন নাগরিক। তিনি প্রায় ১১০ ডলারে কিনেছিলেন মোনালিসার এই নকল চিত্রকর্মটি। তিনি মনে করেছিলেন, তার কাছে যে চিত্রকর্মটি আছে মোনালিসার তা আসল এবং ভুয়া চিত্রকর্ম ল্যুভরে জাদুঘরে স্থাপন করা হয়েছে। কারণ, ১৯১৪ সালে মোনালিসার মূল চিত্রকর্মটি চুরি গিয়েছিল। ওই সময়ে হেকিংসের যুক্তির সঙ্গে সিরিয়াসলি একমত হয়েছিলেন আর্ট বিষয়ক কিছু ইতিহাসবেত্তা। তবে কিছু বিশ্লেষক এখন মনে করছেন হেকিংসের কাছে যে চিত্রকর্মটি ছিল তা সপ্তদশ শতকের কোনো এক সময় অজ্ঞাত কোনো ইতালিয়ান এঁকেছিলেন। প্রকৃত মোনালিসা আঁকার প্রায় এক শতাব্দী পরে তিনি এই চিত্রকর্ম এঁকেছিলেন।