নামে পাকা সড়ক হলেও পাকার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে বেশ কয়েক বছর আগে। সড়কটির দৃশ্যমান অবস্থা দেখে এখন এটিকে মাটির সড়কই মনে হয়। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় এভাবেই অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে বালাগঞ্জ ইউনিয়নের আদিত্যপুর-রিফাতপুর-গহরমলী সড়কটি। সড়কের পিচ ওঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। চলতি বর্ষায় বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কটি কাদাজলে একাকার। ফলে এ সড়কে চলাচলকারী দশ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, বালাগঞ্জ-তাজপুর সড়কের আদিত্যপুর মোড় থেকে শুরু হওয়া প্রায় চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি সিলেট-সুলতানপুর-বালাগঞ্জ সড়কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ২০০৪ সালের প্রথম দিকে আদিত্যপুর মোড় থেকে রিফাতপুর গ্রাম পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ কাজ করা হয়েছিল।
পাকাকরণের সঙ্গে সঙ্গেই ওই বছরের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় রাস্তাটি সম্পূর্ণ ভেঙে যায়। কিন্তু প্রথম দফায় রাস্তাটি পাকাকরণের পর এখন পর্যন্ত আর কোনো সংস্কার কাজ করা হয়নি। যোগাযোগ অব্যাহত রাখার স্বার্থে ২০১৭-১৮ সালে স্থানীয়দের উদ্যোগে রাস্তার পিচ করা অংশে ইটের কংক্রিট বিছিয়ে দেয়া হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রিফাতপুর জামে মসজিদ হতে দক্ষিণ রিফাতপুর পর্যন্ত প্রায় অর্ধ কিলোমিটার
এবং সিলেট-সুলতানপুর-বালাগঞ্জ সড়ক হতে চরসুবিয়া গ্রাম পর্যন্ত আরও প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ কাজ করা হয়েছিল। পাকাকরণের পর সংস্কার না হওয়ায় পিচ ওঠে গিয়ে পুরো সড়কজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের চরম অবহেলা আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে দীর্ঘদিন ধরে সড়কের সংস্কার কাজ করা হচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
এদিকে, রাস্তার মধ্য অংশে চরসুবিয়া গ্রাম থেকে দক্ষিণ রিফাতপুর গ্রাম পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা এখনো পাকাকরণ কাজ না হওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এলাকার লোকজন। স্থানীয়রা জানান, রিফাতপুর, দক্ষিণ রিফাতপুর, চর হাড়িয়া, চরসুবিয়া, মানন, গহরমলি, রহমতপুর, কোষারগাঁওসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রায় দশটি গ্রামের মানুষের চলাচলের সড়কটি চরম অবহেলায় পড়ে রয়েছে। বালাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মুনিম ও ইউপি সদস্য মো. মোশাহীদ আলী ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দ থেকে ২০২০ সালের শুরুর দিকে এই সড়কের দেড় কিলোমিটার অংশে মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন করেন। যদিও মাটি ভরাট কাজে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পর্যাপ্ত বরাদ্দ মেলেনি। এলাকার মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত অর্থায়নে মাটি ভরাটের কাজ সম্পূর্ণ করেন।
এ বিষয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এস আর এম জি কিবরিয়া বলেন- বিগত দিনে এই সড়কের সংস্কার কাজের জন্য অনুমোদিত প্রকল্পে পর্যাপ্ত বরাদ্দ মেলেনি, তাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ নিতে আগ্রহী নয়। সংস্কার কাজে পর্যাপ্ত চাহিদার কথা উল্লেখ করে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হলেও সিলেট বিভাগে এ ধরনের প্রকল্পগুলোর অনুমোদন বন্ধ থাকায় বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না।