× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

করোনায় বিনিয়োগ কমেছে ১১ শতাংশ

প্রথম পাতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২২ জুন ২০২১, মঙ্গলবার

গত বছর (২০২০ সালে) সারা বিশ্বে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কমেছে আগের বছরের চেয়ে ৩৫ শতাংশ। পাশাপাশি একই সময়ে বাংলাদেশেও কমেছে প্রায় ১১ শতাংশ। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বে এফডিআই-এ বিপর্যয় হয়েছে। এ নিয়ে পরপর দু’বছর বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমলো। সোমবার বিশ্বব্যাপী প্রকাশিত জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাডের সর্বশেষ বিশ্ব বিনিয়োগ রিপোর্টে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। জেনেভা থেকে প্রকাশ করা বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রতিবেদন ২০২১ (ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট ২০২১) থেকে এ তথ্য জানা গেছে। করোনার মহামারির নেতিবাচক প্রভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ লকডাউনে যাওয়ায় বিদ্যমান বিনিয়োগ প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন শ্লথ ও স্থবির হয়ে পড়ে, মন্দার আশঙ্কায় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন প্রকল্প গ্রহণেও সতর্কতা অবলম্বন করছে বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে। তবে উন্নয়নশীল বিশ্বে বিদেশি বিনিয়োগের পতন তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে (৮ শতাংশ), আর তা হয়েছে এশিয়ায় সার্বিকভাবে বিনিয়োগ প্রবাহ জোরালো থাকায়।
আঙ্কটাডের তথ্য অনুযায়ী, বৈশ্বিক প্রবণতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে গত বছর বাংলাদেশেও প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ প্রবাহ কমেছে ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ।
বাংলাদেশে গত বছর বিনিয়োগ এসেছে ২৫৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এর আগের বছর ২০১৯ সালে এফডিআই এসেছিল ২৮৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার বা বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী ২৪ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত বছর ৩.১০ বিলিয়ন ডলার এফডিআই প্রবাহ কমেছে। বাংলাদেশে ২০২০ সাল শেষে মোট বিদেশি বিনিয়োগের স্থিতি ১ হাজার ৯৩৯ কোটি ডলার। যা এর আগের বছর শেষে ছিল ১ হাজার ৭৭৮ কোটি ডলার। আর ২০১৯ সালে রেকর্ড ২০.৪৫ শতাংশ এফডিআই প্রবাহ কমেছিল। ২০১৮ সালে হঠাৎ এ খাতে বড় ধরনের উত্থান হয়। সে বছর বাংলাদেশে এফডিআই প্রবাহ বাড়ে প্রায় ৬৮ শতাংশ। এতে প্রথমবারের মতো সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায় এফডিআই প্রবাহ। তবে সে ধারা স্থায়ী হয়নি। এরপর টানা দুই বছর ধরে কমছে বিদেশি বিনিয়োগ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে করোনার প্রভাবে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ প্রায় তিন বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি আদেশ বাতিল করেছে। এতে বাংলাদেশের সাধারণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও এফডিআই সংকুচিত হয়েছে। এ সময় তৈরি পোশাক খাত থেকে এফডিআই মূলত অনবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ফিনটেক (আর্থিক খাতে প্রযুক্তি) প্রকল্পে স্থানান্তরিত হয়েছে।
এফডিআই প্রবাহের মধ্যে গত বছর বাংলাদেশে ইক্যুইটি ক্যাপিটাল হিসেবে এসেছে ৮৪২ মিলিয়ন ডলার, মুনাফা পুনর্বিনিয়োগ (রি-ইনভেস্ট) হয়েছে এক হাজার ৫৬৬ মিলিয়ন ডলার ও আন্তঃকোম্পানি ঋণ হিসেবে এসেছে ১৫৫ মিলিয়ন ডলার। তবে কয়েক বছর ধরে দেশে গ্রিন ফিল্ড বিদেশি বিনিয়োগ কমছে। কয়েক বছরে তা প্রায় ৮৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে এফডিআই প্রবাহে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ২০২০ সালে শীর্ষে রয়েছে কম্বোডিয়া। এশিয়া মহাদেশের এ দেশটিতেও গত বছর বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে এক শতাংশ। এতে দেশটি ৩.৬৩ বিলিয়ন ডলার এফডিআই পেয়েছে। এ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ইথিওপিয়ার এফডিআই প্রবাহ ছিল গত বছর ২.৪০ বিলিয়ন ডলার। আর চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে থাকা মোজাম্বিক ও মিয়ানমারে এফডিআই প্রবাহ ছিল যথাক্রমে ২.৩৪ বিলিয়ন ও ১.৮৩ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে বিদেশি বিনিয়োগ প্রবাহ সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় ২০২০ সালে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে শীর্ষে থাকা ভারতে গত বছর বিদেশি বিনিয়োগ প্রবাহ ছিল ৬৪.০৬ বিলিয়ন ডলার। এ সময় দেশটিতে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। আর তৃতীয় অবস্থানে থাকা পাকিস্তানে ২.১১ বিলিয়ন ডলার এফডিআই যায় গত বছর। দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলো এক বিলিয়ন ডলার করেও এফডিআই পায়নি।
এদিকে আঙ্কটাডের এই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর সারা বিশ্বে এফডিআই কমেছে আগের বছরের চেয়ে ৩৫ শতাংশ। গত বছর এফডিআইয়ের পরিমাণ ছিল এক ট্রিলিয়ন ডলার। ২০১৯ সালে যা ছিল দেড় ট্রিলিয়ন ডলার, যা ২০০৯ সালের অর্থনৈতিক সংকটে যে অবস্থা হয়েছিল, তার চেয়েও ২০ শতাংশ কম। গত বছর দক্ষিণ এশিয়ায় শুধু ভারত ছাড়া সব দেশের এফডিআই কমেছে।
তবে চীন ও হংকংয়ের কারণে সার্বিকভাবে এশিয়াতে বিনিয়োগ আগের বছরের চেয়ে ৪ শতাংশ বেড়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বেড়েছে ২০ শতাংশ। ভারতে এফডিআই বেড়েছে ২৭ শতাংশ।
আঙ্কটাড মনে করে, এফডিআই প্রবাহ আগের অবস্থায় আসতে সময় লাগবে। কারণ বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি এখনো দুর্বল। তৈরি পোশাক উৎপাদনে বিনিয়োগে আগ্রহ কম বলে মনে করছে আঙ্কটাড। ২০২০ সালে প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ বাতিল হয়েছে বাংলাদেশের।
জাতিসংঘের এই সংস্থাটি অবশ্য আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছে যে চলতি বছর, অর্থাৎ ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগের পতন থামবে এবং তা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর