খাওয়া, ঘুম এবং মোবাইল নিয়ে কোনোমতে বিরক্তিকর সময় কাটছে। করোনার আগের সময়টা ক্লাস, পরীক্ষা, একাডেমিক পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সাঙ্গে আড্ডা, বিকেলে ক্রিকেট খেলে সময় কাটতো। এখন আর সে সুযোগ কই? প্রতিটি মুহূর্তই বিরক্তিকর বলে আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন সরকারি বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী এবি আরিফ।
তিনি বলেন, করোনাকালে প্রত্যেকেই কমবেশি সমস্যায় আছেন। এর মধ্যে আর্থিক ও মানসিক সমস্যা বেশি। আমরা যারা ঢাকাতে আছি তাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থী পড়াশুনার পাশাপাশি টিউশনি করে নিজেদের হাত খরচ বহন করে থাকি। কিন্তু দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না।
টিউশনি পাওয়া আর সোনার ডিম পাড়া হাঁস পাওয়া একই কথা। এছাড়াও অনেকের অনার্স শেষ করে চাকরি করার কথা। কিন্তু ক্লাস, পরীক্ষা বন্ধ থাকায় সেটা আর সম্ভব হয়নি। বাড়ছে বেকারত্ব, বাড়ছে চাপ।
আরিফ বলেন, আমার এক বন্ধু ফ্রি ফায়ার গেমের প্রতি একটাই আসক্ত যে ওর চোখে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমার একাডেমিক পড়াশুনা না থাকায় রুটিন বলতে ঘুমানো, খাওয়া আর মোবাইলে সময় কাটানো ছাড়া কিছুই নাই। একটা সময়ে গল্প, উপন্যাসের বই পড়ে সময় কাটলেও এখন বাসায় থাকতে থাকতে এগুলোও বিরক্তিকর হয়ে গেছে। পড়াশুনা থেকে দূরে থাকায় মানসিক দুশ্চিন্তার পরিমাণ গাণিতিক হারে বাড়ছে।
আরিফ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জোর দাবি তুলে বলেন, হাট-বাজার, অফিস-আদালত সবকিছু চললেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। আমি মনে করি এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। আর আমরা যারা ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থী তাদের সেশনজট, সঠিক সময়ে পরীক্ষা না দিতে পারা, ফলাফল দেরিতে পাওয়া এবং ফলাফলে ত্রুটির মত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। এছাড়াও নিয়মিত ক্লাস না হওয়া এবং ভালোমানের শিক্ষক সংকট রয়েছে। সরকার শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য এ কলেজগুলো ঢাবির অধিভুক্তি করেছেন। কিন্তু সেখানে যদি নিয়মিত ক্লাস না হয়, শিক্ষকের অভাব থাকে তাহলে শুধু পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব না।