ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিলেও নর্থ মেসিডোনিয়ার অর্জন কম নয়।। ‘সি’ গ্রুপে ইউক্রেন, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেনি তারা। কিন্তু প্রথমবারের মতো বড় আসরে খেলতে আসাটাও ইউরোপের নবীন দেশটির জন্য অনেক গৌরবের। ১৯৯৪ সালে ফিফা-উয়েফায় অন্তর্ভুক্ত হয় মেসিডোনিয়া। অল্প দিনেই পৌঁছে যায় তারা ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের মতো বিশাল মঞ্চে। এই আসর দিয়েই ফুটবলের পাঠ চুকালেন দেশটির কিংবদন্তির খেলোয়াড় গোরান পানদেভ। গত ২১শে জুন তৃতীয় ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মাঠে নামে নর্থ মেসিডোনিয়া। সেটিই ছিল ৩৭ বছর বয়সী পানদেভের শেষ ম্যাচ।
মাঠে নামার আগে তিনি বলেন, ‘দেশের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলতে নামছি। আমার মনে হয়, এটিই অবসরের মোক্ষম সময়। আশা করি এই দল বিশ্বকাপেও যোগ্যতা অর্জন করবে। নর্থ মেসিডোনিয়ার মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে ওরা। বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা আছে ওদের।’ ২০১৪ সালেই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছিলেন পানদেভ। তবে কোচ ইগর অ্যাঞ্জেলোভস্কির আহ্বানে ২০১৬ জাতীয় দলের জার্সি আবারো গায়ে জড়ান তিনি। ইউরো খেলার স্বপ্ন নিয়ে আবারও নর্থ মেসিডোনিয়ার অধিনায়কত্ব কাঁধে নেন। ইউরো কাপে গ্রুপ ‘সি’র সবকটি ম্যাচ হেরে চতুর্থস্থানে থেকে শেষ করে নর্থ মেসিডোনিয়া। কোনও পয়েন্ট না পেলেও এবারের প্রতিযোগিতায় তাদের প্রাপ্তি দু’টি গোল। তার মধ্যে প্রথমটি অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে করেছিলেন পানদেভই। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ১২২ ম্যাচ খেলেছেন পানদেভ। যা নর্থ মেসিডোনিয়ার ফুটবল ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ৩৮ গোল করে দেশের সর্বাধিক গোলের মালিকও তিনি। দেশটির সেরা ফুটবলার বলেই নন, গোরান পানদেভ মানবিক দিক দিয়েও বেশ সমাদৃত। ১০০তম ম্যাচের জার্সি নিলাম করে প্রাপ্ত অর্থ করোনাখাতে ব্যয় করতে একটি হাসপাতালে দান করেন তিনি। পানদেভের একটি ফুটবল একাডেমি রয়েছে। সেই দলটি দেশের প্রথম সারির ফুটবলে খেলে এবং সেই দলের একজন ফুটবলার এবারের ইউরো দলে গুরু পানদেভের সতীর্থ ছিলেন। ২০১৬ সালে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১৬২তম স্থানে ছিল নর্থ মেসিডোনিয়া। ইউরো কাপ শুরুর আগে তারা উঠে আসে ৬২ নম্বরে। ফুটবল বিশ্বে নর্থ মেসিডোনিয়া কোনো বড় নাম না হলেও, অনেক আগেই ইতালিতে যশখ্যাতি কুড়ান পানদেভ। ২০০৯-১০ সালে ইন্টার মিলানের ত্রিমুকুট জয়ের (সিরি আ, কোপা ইতালিয়া এবং উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ) অন্যতম কাণ্ডারি তিনি। এ স্ট্রাইকারের ওপরেই ভরসা রেখেছিলেন কোচ হোসে মরিনহো। ইতালির ক্লাব ল্যাজিও’র হয়ে ১৫৯ ম্যাচ খেলেছেন পানদেভ। আরেক ইতালিয়ান দল নাপোলির জার্সি গায়ে খেলেছেন ৬২ ম্যাচ। ১৯৯১ সালে যুগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীনতা লাভ করে মেসিডোনিয়া। আর ২০১৯ সালে দেশটির নামকরণ হয় নর্থ মেসিডোনিয়া।