× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ইসলামাবাদ চা বাগানের জমি নিয়ে কি হচ্ছে?

বাংলারজমিন

জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
২৫ জুন ২০২১, শুক্রবার

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের ইসলামাবাদ চা বাগানের বেশকিছু ভূমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চলছে। ফলে লিজ গ্রহীতা বাগান কর্র্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিতে পারছে না জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। প্রশাসন বারবার উদ্যোগ নিলেও খাসিয়াদের মনোভাবের কাছে হেরে গিয়ে ব্যর্থ হচ্ছেন তারা।
বুধবার বাগান কর্তৃপক্ষকে লিজ নেয়া ভূমির সীমানা চিহ্নিত করে দেয়ার উদ্যোগে নিয়েছিলেন উপজেলা প্রশাসন। জুড়ী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোস্তাফিজুর রহমান ভূমি সার্ভেয়ার জুড়ী থানার পুলিশসহ দলবল নিয়ে হাজির হন ইসলামাবাদ চা বাগানে। খাসিয়াদের সঙ্গে সমঝোতায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জরিপের কথা ছিল উভয়পক্ষের মধ্যে। কিন্তু হঠাৎ করে ঘটনাস্থলে গিয়ে খাসিয়াদের অবস্থান দেখে বাগান কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের লোকজন হতবাক হন। স্থানীয় খাসিয়ারা দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র চিয়াড়ী, বল্লম নিয়ে প্রস্তুত।
যেন যুদ্ধ করতে তৈরি তারা। এ অবস্থায় এসিল্যান্ড তাদের বোঝাতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু খাসিয়াদের মারমুখো ও অশোভন আচরণে পিছু হঠতে বাধ্য হন। জরিপ না করেই ক্ষুদ্ধ প্রশাসন স্থান ত্যাগ করেন। ইসলামাবাদ চা বাগানের মালিকপক্ষ জানান, তাদের পূর্বপুরুষ থেকে মৌরসী সূত্রে পাওয়া চা বাগানের ৮৩.৮৩ একর ভূমি সরকারের নিয়ম অনুযায়ী সারেন্ডার করে পুনরায় যথাযথ নিয়মে ২০০৫ সালে লিজ গ্রহণ করেন তারা। বাগানের পাশেই রয়েছে আদিবাসী খাসিয়াদের বসবাস। স্থানীয় খাসিয়ারাও বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলেমিশে সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করে নিজ নিজ ভূমিতে চাষাবাদসহ ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। কিন্তু বর্তমান বাগান কর্তৃপক্ষ পুনরায় লিজ নেয়ার পর থেকে স্বার্থান্বেষী একটি মহলের ইন্ধনে খাসিয়ারা প্রায় ৩০ একর জায়গা অবৈধভাবে দখলে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। বাগানের এমডি নজরুল ইসলাম জানান, লা খাসিয়া, উস্তে খাসিয়া, ওয়ান কে ম্যান, রবিন খাসিয়া, ইমন খাসিয়া প্রমুখদের নেতৃত্বে রাতের আঁধারে গাছ কেটে চা গাছ উপড়ে ফেলে দিয়ে বনসই করে সেখানে পান গাছ লাগিয়েছে। খাসিয়াদের সঙ্গে শক্তি প্রদর্শনে তিনি পরাস্ত হয়েছেন। পাহাড়ি ভূমিখেকো খাসিয়াদের নেপথ্য শেল্টারে কিছু ব্যক্তি থাকায় তিনি আইনিভাবে লড়াই করেও পেরে উঠছেন না। তিনি বলেন, আদিবাসী তকমায় তারা অনেকটা শক্তিশালী, তাদের শেল্টারে রয়েছে কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি। আমাদের পরিবার ও গোষ্ঠীর লোকেরা সবাই শিক্ষিত ভদ্র এবং সিলেট শহরের বাসিন্দা থাকায় তাদের মতো অশোভন আচরণ করতে পারি না। বিরোধটি সমাধানে তাই তিনি বারবার আইনের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এ ব্যাপারে তিনি জেলা প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের শক্ত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান।
অপরদিকে খাসিয়াদের দাবি, সম্পদশালী চা বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তারা আইনি লড়াইয়ে পেরে উঠছেন না। তাই জীবন দিয়ে হলেও তাদের বাপ-দাদার ভিটা মাটি রক্ষা করতে প্রস্তুত। খাসিয়ারা আরও বলেন, আমরা লেখাপড়া না জানা অশিক্ষিত জনগোষ্ঠী। আমাদের বাপ-দাদার আমল থেকে এখানে বসবাস করে আসছি। কারো ভূমি দখল করার প্রশ্নই আসে না। এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে চা বাগানের ভূমি জরিপ করে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য গিয়েছিলাম। খাসিয়াদের বাধার মুখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে বলে তা করা সম্ভব হয়নি। খাসিয়ারা চা বাগানের ভূমি অবৈধ দখলে নিতে পারবে না। আজ হোক, কাল হোক, তাদের ভূমিবিরোধ মেটাতেই হবে।

 
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর