ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের পর এবার ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে ভারতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। সরকার অভয় দিলেও সাধারণ মানুষের ভেতর দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। কারণ, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ভারতকে তছনছ করে দিয়েছে। ডেল্টার চেয়ে অধিক শক্তিসম্পন্ন এবং সংক্রমণ ক্ষমতা সম্পন্ন এই ভ্যারিয়েন্টে মঙ্গলবার ভারতের মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়ন জেলায় এক নারী মারা গেছেন। তিনিসহ সেখানে আক্রান্ত হয়েছিলেন দু’জন। এর আগে প্রথম এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয় জম্মু ও কাশ্মীরে। স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন হিন্দুস্তান টাইমস।
সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর ২৩শে মে পতিদ্বার হাসপাতালে মারা গেছেন ওই নারী।
তিনি সহ অন্য ১৪ জনের জিনোম নমুনা পাঠানো হয় ভুপালের একটি গবেষণাগারে। এই ১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে তার মধ্যে দু’জনের দেহে ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এই দু’জনের মধ্যে ওই মৃত নারী রয়েছেন। উজ্জয়নের কালেক্টর আশীষ সিং বলেছেন, তার জেলায় ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে কোনো হুমকি নেই। তবে জনগণকে তিনি সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করার অনুরোধ করেছেন। এর মধ্যে মুখে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং জনাকীর্ণ স্থান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ওদিকে রাজ্যের যেসব জেলায় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান মিলেছে সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মুখ্য সচিবকে লেখা এক চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ কঠোর পদক্ষেপ নিতে এবং টিকাদান কার্যক্রম বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, ডেল্টা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা মঙ্গলবার ছিল ২২। তা বুধবার বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪০।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভারতের তিনটি রাজ্যে ডেল্টা প্লাসের খবর পাওয়া গেছে। তা হলো মহারাষ্ট্র, কেরালা ও মধ্যপ্রদেশ। কেরালায় উচ্চ মাত্রার এই সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর সেখানকার তিনটি গ্রামকে একেবারে সিল করে দেয়া হয়েছে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পরীক্ষা করার জন্য জিনোম নমুনা পাঠিয়েছে মহারাষ্ট্র। গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল শশী সুধন শর্মার মতে, বুধবার প্রথম ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে। ওদিকে চেন্নাইতে ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টের প্রথম ঘটনার কথা রিপোর্ট করা হয়েছে তামিলনাড়ুতে। বুধবার শীর্ষ স্থানীয় একজন সরকারি কর্মকর্তা এ তথ্য দিয়েছেন। কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালুরু এবং মহিশূরে দু’জনের দেহে ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. কে সুধাকর।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত ১১টি দেশে পাওয়া গেছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এবং এতে প্রায় ২০০ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। ভারত সরকার এরই মধ্যে ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বা ভিওসি হিসেবে ঘোষণা করেছে। বিদ্যমান টিকা ব্যবহার করে এই ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিনা তা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্স এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি।