দোয়া, মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা এবং অসহায়দের মাঝে বস্ত্র ও খাদ্য বিতরণের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস। গতকাল জনসমাগম এড়িয়ে আওয়ামী লীগ ও দলের অঙ্গ-সহযোগী এবং বিভিন্ন সংগঠন দিবসটি পালন করে। ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগ দিবসটি উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ ভাটারা থানার সোলমাইদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দুস্থদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উত্তর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য একেএম রহমতউল্লাহ (এমপি), সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, সংসদ সদস্য হাবীব হাসান বক্তব্য রাখেন।
এদিকে সকাল ১১ টায় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে ১৯ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ সংগঠনের কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। সভাপতিত্ব করেন- স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ। উপস্থিত ছিলেন- সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু। এতে শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। যুবলীগ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাদ আসর শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। এছাড়াও সারা দেশে যুবলীগের উদ্যোগে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করে। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কার্যকরী সভাপতি শিল্পী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন- পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, সাবেক মন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট বলরাম পোদ্দার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা প্রমুখ। আওয়ামী লীগ জানিয়েছে, ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ভোরে আওয়ামী লীগ সভাপতির বাসভবন সুধাসদন থেকে আটক করা হয় শেখ হাসিনাকে। পরে কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত বিশেষ কারাগারে বন্দি রাখা হয় তাকে। এর প্রতিবাদে ফেটে পড়েন দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। ধীরে ধীরে তা তীব্র হয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আট সপ্তাহের জামিনে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তির পরদিনই তিনি চিকিৎসার উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রে যান। চিকিৎসা শেষে ২০০৮ সালের ৬ই নভেম্বর দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। এরপর স্থায়ী জামিন দেয়া হয় তাকে। পরে ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে ২০০৯ সালের ৬ই জানুয়ারি আওয়ামী লীগসহ মহাজোট সরকার গঠিত হয়। দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা।