× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ছয় মাসে ২১০ কোটি টাকা ভর্তুকি গুনেছে আলেশা মার্ট

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৯ জুলাই ২০২১, সোমবার

ব্যবসা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশেষ মূল্যছাড়ে মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি করে অন্তত ২১০ কোটি টাকা লোকসান গুনেছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্ট লিমিটেড। চলতি বছরের ২১শে জানুয়ারি থেকে ৬ মাসে মোট ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার পণ্য কেনাবেচায় এ লোকসান হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. মনজুর আলম সিকদার। তিনি বলেন, মূল্যছাড়ে পণ্য বিক্রি করায় প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা লোকসান দিতে হয়েছে। আর অন্যান্য পণ্য বিক্রিতে মুনাফা হয়েছে ১৪০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আমাদের লোকসানের পরিমাণ প্রায় ২১০ কোটি টাকা। গতকাল রোববার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
এ সময় প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আরও বলেন, গত ছয় মাসে আলেশা মার্টের টার্নওভার ১ হাজার ১শ’ কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি দিতে হয়েছে মোটরসাইকেলে।
আমরা সরবরাহকারীদের কাছ থেকে বাকিতে কোনো পণ্য আনি না। অগ্রিম দাম পরিশোধ করে পণ্য এনে গ্রাহককে ডেলিভারি দেই। ভেন্ডার (সরবরাহকারী)কে অগ্রিম ৩৫০ কোটি টাকা দিয়ে রেখেছি। তিনি বলেন সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য নিয়েছে। বেশ কয়েকটি ব্যাংক আমাদের ওয়েবসাইটে পেমেন্ট সার্ভিস বন্ধ করে রেখেছে। অথচ আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী সেটাই জানি না। গত ৬ মাসে আমরা সরকারকে ৩৪ কোটি টাকা ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়েছি। অন্য কয়েকটি ই-কমার্স প্ল্যাটফরমের কারণে আমাদের ব্যবসা ও সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান জানান, নিজের সম্পত্তি বিক্রি করে ব্যবসার অর্থের সংস্থান করেছেন তিনি। এর জন্য কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ নেননি বলেও জানান তিনি। তবে মূল্যছাড় দিয়ে আর ব্যবসা করা সম্ভব নয় জানিয়ে মনজুর আলম সিকদার বলেন, মূল্যছাড় দিয়ে দীর্ঘ সময় ব্যবসা করা সম্ভব নয়। আমরা বাজার ধরতে ভর্তুকি দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলাম। এখন থেকে আমরা আর ভর্তুকি দেবো না।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, আপনাদের জানার জন্য বলছি, আমি ব্যবসা করছি ১৯৯৪ সাল থেকে। তবে পরিবারকে সময় দিতে ২০১৩ সালে ব্যবসায়িক কার্যক্রম থেকে সরে আসি। কিন্তু ২০১৮ সালে আলেশা এগ্রো আর আলেশা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে আবারো ব্যবসায় ফিরে আসি। এর অংশ হিসেবে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ই-কমার্স প্ল্যাটফরম আলেশা মার্ট শুরু করি। আমার এ উদ্যোগটির কথা আপনারা সবাই জানেন আশা করি। ই-কমার্স নিয়ে কাজ শুরু করে দেখতে পেলাম, দেশে এ সেক্টরটি নিয়ে জনমনে কিছু নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়ে আছে। আগে থেকে চলমান এক বা একাধিক অন্য ই-কমার্স প্ল্যাটফরমের কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য এমন হয়ে থাকবে হয়তো। কিন্তু এর কনসিকোয়েন্স যা দাঁড়িয়েছে, তার ফলে আমার প্রতিষ্ঠানকে অন্য সকল ই-কমার্সের সঙ্গে এক পাল্লায় মাপা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আমি আলেশা মার্টের কিছু তথ্য আপনাদের জানাতে চাই। এতে আলেশা মার্টসহ আরও অন্যান্য যেসব ই-কমার্স প্ল্যাটফরম সততার সঙ্গে ব্যবসার পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখছে, তাদের সম্পর্কে মানুষের ধারণা পরিষ্কার হবে।
তিনি বলেন, আলেশা মার্ট একজন সাপ্লায়ারের টাকাও বাকি রাখেনি। এ পর্যন্ত সকল সাপ্লায়ার শতভাগ পণ্যের মূল্য পেয়েছেন। কখনো কখনো অ্যাডভান্স পেমেন্টও করে থাকি। আজ পর্যন্ত আমরা আমাদের কাস্টমারদের প্রায় সাড়ে ৩ লাখ অর্ডার সার্ভ করেছি। এর মধ্যে ভোক্তা অধিকার আইনে অভিযোগ পেয়েছি মাত্র ১০টি। অভিযোগগুলোর বেশির ভাগই এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।
মনজুর সিকদার আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশসহ পৃথিবীজুড়ে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির ব্যবসার ধরনই হচ্ছে ডিসকাউন্ট অফার দিয়ে কাস্টমারকে আকৃষ্ট করা। কিন্তু কেউ কেউ এ ডিসকাউন্ট দিতে গিয়ে ক্রেতাদের টাকা ব্যবহার করেই অফারগুলো দিয়ে যাচ্ছে। অনেকের প্রশ্ন, ডিসকাউন্ট অফারে টাকার ভর্তুকি কোথা থেকে দিচ্ছি? আমরা আলেশা মার্ট ক্রেতাদের টাকায় নয়, সম্পূর্ণ নিজস্ব ফান্ড থেকে এই ডিসকাউন্টের টাকা ভর্তুকি হিসেবে প্রদান করে যাচ্ছি। এটি ব্যবসার কৌশল। বিশ্বজুড়ে বাজার ধরতে এটি সবাই করছে। সবার চেনা গ্লোবাল ই-কমার্স প্ল্যাটফরম আলিবাবাকেও অনেক বছর ধরে ভর্তুকি দিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের কাছে মোটরবাইকের চাহিদা বেশি বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে। তাই কাস্টমারদের আকৃষ্ট করতে অন্য পণ্যের পাশাপাশি এ পণ্যে আমরা একটু বেশি ডিসকাউন্ট দিয়েছি। তবে এখানে আমি আরও জানাতে চাই, শুধু ডিসকাউন্ট দিয়ে আমরা বাজার দখল করতে চাইছি না। আমরা আমাদের কাস্টমারদের সেবা দিয়ে বাজার দখল করবো। এ লক্ষ্যে কাস্টমারদের সুবিধার জন্য আমরা গড়ে তুলেছি নিজস্ব বাইক ডেলিভারি পয়েন্ট। ওভার দ্য ফোন কাস্টমার কেয়ার সেবা অনেক প্রতিষ্ঠানই দিয়ে থাকে। আমাদেরও এ সেবা আছে, যা শুরু থেকেই নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। অচিরেই আলেশা মার্ট নিয়ে আসবে ফিজিক্যাল কাস্টমার কেয়ার সেবা। ইতিমধ্যে এর কাজ আমরা শুরু করে দিয়েছি। আমার জানামতে বাংলাদেশে এটি এর আগে আর কেউই করেনি। যেহেতু আমাদের মোটো ক্লিক. রিলাক্স. এনজয়. তাই আপনাদের জীবনকে সহজ করতে আরও অনেক সেবা নিয়ে আমরা ভবিষ্যতে আপনাদের সামনে হাজির হচ্ছি।
অনুষ্ঠানে দেয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনাকালে আলেশা মার্ট ৫০ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। ২২ হাজার ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা আলেশা মার্টের অনলাইন কমার্শিয়াল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফরমের হয়ে কাজ করছে। ক্লিক, রিল্যাক্স, এনজয় স্লোগানে উজ্জীবিত প্রতিষ্ঠানটি কাস্টমারদের জন্য বিশ্বস্ততার পাশাপাশি নিশ্চিত করেছে মানসম্পন্ন পণ্য, দ্রুত ডেলিভারি, আকর্ষণীয় মেম্বারশিপ প্যাকেজ, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য রপ্তানির সুযোগ। সংবাদ সম্মেলনে মনজুর আলম সিকদার আলেশা হোল্ডিংয়ের ১৯টি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। এসময় আলেশা মার্টের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর