করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। গতকাল সারা দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে এ কথা জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন দেশের করোনা পরিস্থিতি এখন ঊর্ধ্বগামী। এ অবস্থায় ডেঙ্গু পরিস্থিতিও যদি অবনতি হয় তাহলে আমাদের পক্ষে সামাল দেয়া কঠিন হবে। আর রাজধানীসহ সারা দেশের মশক নিয়ন্ত্রণে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন, তারা যদি নিজেদের জায়গা থেকে নিজেকে উজাড় করে না দেন তাহলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকবে। তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকেও অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। ছাদে ফুলের টব, বাসার আশেপাশের ড্রেনসহ সবকিছু পরিষ্কার রাখতে হবে। বাথরুমের কমোড, বালতিসহ কিছুতেই যেন পানি জমে না থাকে।
বিশেষ করে তিনদিন বা তার অধিক সময়ের জন্য কোথাও চলে গেলে বাসায় কোনো পাত্রে পানি জমিয়ে রাখা যাবে না। লাইন ডিরেক্টর বলেন, আমরা জানি এডিস মশা মূলত দিনের বেলায় কামড় দেয়। তাই দিনের যেকোনো সময় ঘুমালেও মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হবে। তারপরও যদি কারও জ্বর হয় তাহলে করোনা পরীক্ষার পাশাপাশি ডেঙ্গু পরীক্ষাও করতে হবে। অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসা নেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই রেজিস্ট্রার্ড কোনো চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হট লাইন বা স্বাস্থ্য বাতায়নে যোগাযোগ করে চিকিৎসা নেবেন। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৮ জন। বর্তমানে ভর্তি আছেন ৩২৬ জন। এর মধ্যে রাজধানীর ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৩২২ জন। বাকি ৪ জন ঢাকার বাইরে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে ১৮ই জুলাই পর্যন্ত মোট ১ হাজার ২০৭ জন ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাসায় গেছেন ৮৭৯ জন। চলতি জুলাই মাসেই ৮৩৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। জুন মাসে এই সংখ্যা ছিল ২৭২ জন। মে মাসে ৪৩ জন, এপ্রিলে ৩ জন, মার্চে ১৩ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯ জন এবং জানুয়ারিতে ৩২ জন। এ বছর ডেঙ্গু সন্দেহে ২টি মৃত্যুর ঘটনা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে।