ট্যানারি মালিকের কাছ থেকে বকেয়া টাকা আদায় না হওয়ায় পুঁজি সংকটে পড়েছেন ঈশ্বরদী উপজেলার চামড়া ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে ন্যায্য দাম না মেলায় এ ব্যবসায় চলছে মন্দাভাব। ফলে কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে এলেও তারা চামড়া কেনা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। ঈশ্বরদী চামড়া মোকামের নিয়মিত ব্যবসায়ী আশাদুজ্জামান জানান, কোরবানিতে ঈশ্বরদীতে কমপক্ষে ২২ হাজার পিস চামড়া কেনাবেচা হয়। এলাকার ব্যবসায়ীরা এসব কিনে ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। এজন্য তারা প্রতি ঈদে বকেয়া পাওনা পরিশোধ করেন। কিন্তু গত বছরের মতো এবারো ট্যানারি মালিকরা নিশ্চুপ। ট্যানারি মালিকদের কাছে চলতি ব্যবসার এবং বিগত তিন বছরে ঈশ্বরদীর প্রায় ১৫ ব্যবসায়ীর মূলধনের লাখ লাখ টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গতবারের মতো এবারো চামড়ার দরপতন ঘটিয়ে সস্তায় কেনার পাঁয়তারা করছেন ট্যানারি মালিকেরা। কারণ প্রকৃত ব্যবসায়ীদের পাওনা পরিশোধের নিশ্চয়তা দিলেই তারা চামড়া কিনবেন। তবে পাড়া-মহল্লার মৌসুমি ব্যবসায়ীরা না বুঝে তা কেনায় সমস্যা হয় প্রকৃত ব্যবসায়ীদের। কারণ, তারা দর না মেনে বেশি দামে কেনেন। এতে ভালোমানের চামড়া কিনতে বেশি দাম দিতে হয় ব্যবসায়ীদের। এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে তারা কেনা ও বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাদের সংশয় সরকারি দরে চামড়া কেনা সম্ভব হবে না। আবার ঝুঁকি নিয়ে কিনলে লাভের বদলে লোকসান গুনতে হতে পারে।
ঈশ্বরদী চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি হায়দার আলী জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দর বেড়েছে। তবে দেশি বাজারে এর প্রভাব পড়েনি। ট্যানারি মালিক ও আড়তদাররা দর কমিয়ে লাভবান হচ্ছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নিজের পুঁজি দিয়ে তা কিনবেন না। এক্ষেত্রে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চামড়া কেনার প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে ধরা খেতে পারেন বলে সংশয় প্রকাশ করেন হায়দার।
উল্লেখ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বছর কোরবানির গরুর লবণযুক্ত চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকাতে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। আর ঢাকার বাইরে ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা দর নির্ধারণ করেছে। খাসির চামড়ার দাম সারা দেশে প্রতি বর্গফুট ১৫ থেকে ১৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।