বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আত্মীয়তার। একাত্তরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর নিধনযজ্ঞের খবর যিনি পৌঁছে দিয়েছিলেন বিশ্বের কাছে। বাংলাদেশ দরদি ব্রিটিশ সাংবাদিক সায়মন ড্রিং মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
গত শুক্রবার রোমানিয়ার একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় সায়মন ড্রিংয়ের মৃত্যু হয় বলে তার আত্মীয় ক্রিস বার্লাস গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
১৯৪৫ সালের ১১ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের নরফোকে জন্ম নেওয়া সায়মন ড্রিং সাংবাদিকতা শুরু করেন একেবারে তরুণ বয়সে। তখন মাত্র ১৮ বছর। দুনিয়া বদলে অনেক ঘটনার স্বাক্ষী ছিলেন এই মানুষটি।
দেখেছেন ২২টি যুদ্ধ, অভ্যুত্থান ও বিপ্লব। যুদ্ধক্ষেত্রের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আহতও হয়েছেন একাধিকবার।
রয়টার্স, টেলিগ্রাফ ও বিবিসির হয়ে সাইমন ড্রিং দীর্ঘদিন কাজ করেছে বৈদেশিক সংবাদদাতা, টেলিভিশন উপস্থাপক এবং তথ্যচিত্র নির্মাতা হিসেবে। অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী হিসাবে বাংলাদেশের ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বিকাশে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। চলতি শতকের গোড়ায় বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন স্টেশন একুশে টেলিভিশনের যাত্রা শুরুর সময় সাইমন ড্রিংয়ের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর হাত ধরেই এ দেশে টেলিভিশন সাংবাদিকতা নতুন মাত্রা পায়।
একাত্তরে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় সায়মন ড্রিংকে ২০১২ সালে মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননায় ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার।
তার কাজিন ক্রিস বার্লাস গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে সায়মন ড্রিংয়েংর স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না। গত কিছুদিন ধরে তিনি হার্নিয়ার সমস্যায় ভুগছিলেন, সে কারণেই রোমানিয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। সেখানে অস্ত্রোপচারের সময় তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়।