শ্বশুরালয়ের নির্যাতনের কারনে এক সন্তানসম্ভবা নারী ঈদের আগের দিন স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে ফেরার পথে চলন্ত বাসেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন। এসময় অন্য কোন নারী যাত্রী সে বাসে না থাকায় তার সহায়তায় এগিয়ে আসে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ। প্রসূতি ও তার সন্তানকে উদ্ধার করে ভর্তি করান হাসপাতালে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলায় গোলাকান্দাইল ফ্লাইওভার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) নাজিমউদ্দীন মজুমদার জানান, সরকারি জরুরী পরিষেবা ৯৯৯ এ একটি বার্তা পেয়ে জানতে পারি নাটোর থেকে আসা ঢাকাগামী আর-পি পরিবহনের (নাটোর ব-১১-০০৪৯) গাড়িতে এক সন্তানসম্ভবা মা প্রসব বেদনায় চিৎকার করছেন। সেসময় গাড়িতে কোন নারী যাত্রী না থাকায় কোন পুরুষ মানুষ ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তাকে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে যেতে পারছিলেন না। পরে বাসের চালক নাইম মিয়া ৯৯৯ এ কল করে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। বার্তা পেয়ে আমি, সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) উত্তম কুমার ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঢাকা সিলেট মহাসড়কের গোলাকান্দাইল মোড়ে গাড়িটি থামাই। ততোক্ষণে ওই মা বাসেই একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
কিন্ত চলন্তবাসে সন্তান প্রসব করায় মা-সন্তান উভয়ে ছিলেন অসুস্থ্য। এ অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে দ্রুত অসুস্থ্য মা ও সন্তানকে পুলিশ ভ্যানে স্থানীয় ইউএস বাংলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করাই এবং তাদের পরিবারকে ফোনে খবর দেই। তিনি আরো বলেন, ওই যাত্রীর নাম ফাতেমা খাতুন (২২)। তিনি নাটোর জেলার আটঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শাহীন মিয়ার স্ত্রী। তার আরো একজন ২ বছরের সন্তান রয়েছে।
চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ফাতেমা খাতুনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, তার স্বামী ও শ্বশুরের অত্যাচারে নাটোর থেকে নিজ পিত্রালয় রাজধানীর
ডেমরায় ফেরার পথে বাসের মধ্যেই প্রসব ব্যথা উঠে। এমন জরুরি অবস্থায় তার পাশে কেউ ছিলো না। তার স্বামী রাজধানীর সানারপাড় এলাকায় মালেক স্বর্ণকারের বাসায় ভাড়া থাকে। স্বামী দিন মজুর। এসময় একাই প্রাকৃতিক নিয়মে আমার ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। তবে আমি ও ছেলে অনেক অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিলাম। পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে না পাঠালে আমি কিংবা আমার সন্তান হয়তো মারা যেতো। আমি পুলিশের আন্তরিক ভূমিকায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।