× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভাগ্য বিড়ম্বিত বিধবা রেনুবালা

বাংলারজমিন

ওমর ফারুক সুমন, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) থেকে
২৪ জুলাই ২০২১, শনিবার

বিধবা রেনুবালা। বয়স ৭৭ বছর। ৪১ বছর ধরে বিধবা। বাড়ি ৮নং নড়াইল ইউনিয়নের কুমুরিয়া গ্রামে। তবে কুমুরিয়াতে বর্তমানে কোনো জায়গা জমি নেই। ভূমিহীন ও গৃহহীন দুটোই রেনুবালা। একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। নাম গোপাল চন্দ্র সরকার (৪৫)।
সেও প্যারাইলাইসেস রোগী। শরীরের এক পাশ অচল। অক্ষম। পরের জমিতে থাকেন। এক এক সময় এক এক জায়গায়। তাও আবার বেশিদিন এক জায়গায় থাকার ভাগ্যে জুটেনা। তাড়ানি খেয়ে নতুন করে আশ্রয় খুঁজতে হয় তাকে। ভিক্ষা করে সংসার চলে রেনুবালার। স্বামী যোগেশ চন্দ্র সরকার ১৯৮০ সালে মারা যান। বিধবা রেনুবালার একদিন সবই ছিল। লাল শাড়ি পরে বধূ সেজে স্বামীর সংসারে পা রেখেছিলেন। সুখ-দুঃখের দোলাচলে রঙিন স্বপ্নে বিভোর হয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন কতোদিন। স্বামী সর্বশেষ ৭০ টাকা মাসিক বেতনে হালুয়াঘাট সেন্ট এন্ড্রোস প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করতেন। স্বামী যোগেশ চন্দ্র সরকারের সান্নিধ্যে রেনুবালা যখন সংসার গোছাতে লাগলো, বিধিবাম দুরারোগ্য ব্যাধিতে অকালেই যোগেশ চন্দ্র সরকার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। স্বামীর চিকিৎসায় সামান্য জমি-জমা হাতছাড়া করে হয়ে পড়েন নিঃস্ব। স্বামী মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরতে গিয়ে পড়েন বিপাকে। উপার্জনক্ষম কেউ না থাকায় রেনুবালার ঘাড়ে ওঠে ঋণের বোঝা। শুরু হয় কায়িক পরিশ্রম। বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কাজ করানোর সুবাদে সবাই আদর-স্নেহও করতো। একপেট খাবার দিয়ে আদায় করে নিতো গৃহস্থালির নিত্যদিনের কাজ। কায়িক ও পারিবারিক পরিশ্রমে রেনুবালা দিন দিন দুর্বল হতে থাকে। এভাবে কাটিয়ে দেয় প্রায় ৪ যুগ। ভিটে-বাড়ি হারিয়ে ৩ যুগের অধিক সময় ধরে ঠিকানাবিহীন চলছে এই নারীর সময়। যদি কেউ দয়া করে আশ্রয় দেয় সেখানেই হয় মাথা গোঁজার ঠাঁই। প্রতিবন্ধী ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ভিক্ষে করে চলে সংসার। জানা যায়,  উপজেলার রঘুনাথপুর এলাকায় সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ তার পরিত্যক্ত ভিটায় আশ্রয় দিয়েছেন। এ বিষয়ে আব্দুল হামিদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভিটে বাড়িহীন প্রায় ৮০ বছর বয়সী একজন মহিলার অসহায়ের কথা ভেবেই আমি আশ্রয় দিয়েছি। তার জন্যে একটা গৃহের খুবই প্রয়োজন। স্থায়ী একটি আবাসনের ব্যবস্থা হলে শেষ সময়টা অন্তত একটু শান্তি পেতো। জীবন ছায়াহ্নে এসে বিধবা রেনুবালার হবে একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই এমনটাই চাওয়া সচেতন মহলের।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর