কুলাউড়ায় ঈদুল আজহার দিন ঘাতক বড় ভাইয়ের ধারালো ছুরির আঘাতে সুমন মিয়া (২২) নিহত হয়েছেন। সুমন উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মনছড়া গ্রামের মতিন মিয়ার ছেলে এবং পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক। গত বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টায় এ ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ওইদিন রাতেই ঘাতক আনফর মিয়াকে আটক করে। এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র জানায়, বুধবার ঈদের নামাজে ইমামের বয়ান নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে মনছড়া গ্রামের মালিক মিয়ার ছেলে আনফর মিয়া সুমনের বাবা বৃদ্ধ মতিন মিয়াকে মারধর করে। সুমন এর প্রতিবাদ জানিয়ে ঘাতক আনফরকে শাসায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মালিক মিয়াসহ তার ছেলে ঘাতক আনফর মিয়া ও ছিদ্দিক মিয়া পুনরায় সুমন ও তার পিতা মতিন মিয়াকে মারধর করেন।
এলাকাবাসী উভয় পক্ষকে সান্ত্বনা দিয়ে বিষয়টি ঈদের পর মীমাংসা করে দেয়ার তারিখ ধার্য্য করেন। সরজমিন মনছড়া গ্রামে গেলে এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিত্ব আখলিছ মিয়া জানান, নিহত সুমন ও ঘাতক আনফর সম্পর্কে চাচাতো ভাই। গত ১৫ই জুলাই বৃহস্পতিবার আনফর মিয়ার ছোট ভাই প্রবাসী ছিদ্দিক মিয়ার বিয়ের তারিখ ছিল। ওই বিয়ের বিষয়টি পঞ্চায়েতের কাউকে না জানিয়ে পরদিন শুক্রবার জুমার নামাজের পর পঞ্চায়েতের লোকজনকে অবগত করা হয়। বিয়ের বিষয়টি পঞ্চায়েতের কাউকে না জানানোয় সুমনের বাবা মতিন মিয়া এর প্রতিবাদ করেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আনফর মিয়া তাকে (মতিন মিয়াকে) শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় পঞ্চায়েতের লোকজন ঈদের পর বিষয়টি নিষ্পত্তি করার কথা বলে উভয়পক্ষকে সান্ত্বনা দেন। কিন্তু পূর্বের ঘটনার জের ধরে ঈদের দিন তারা ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। বড় ভাই তার ছোট ভাইকে ছুরিকাঘাত করে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের জামাতে বাকবিতণ্ডাকে কেন্দ্র করে ফের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সুমন নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে ধারালো ছুরি দিয়ে তাকে উপর্যুপরী আঘাত করে আনফর। এতে সুমনের পেটের নাড়ি-ভুড়ি বের হয়ে যায়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ রহমান আতিক জানান, সুমনকে হত্যার পর ঘাতক আনফর আলী তার (চেয়ারম্যানের) বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পুলিশ সুমনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করলে তিনি আনফর মিয়াকে আটকে রাখেন এবং পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন। কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় জানান, লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। ঘটনার মূল হোতা আনফর মিয়া হত্যাকাণ্ডের কথা পুলিশের নিকট স্বীকার করেছে। তাকে আদালতের মাধমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।