যুক্তরাষ্ট্রে গত ৬ মাসে কোভিডে প্রাণ হারিয়েছেন তাদের ৯৯ শতাংশই ভ্যাকসিন গ্রহণকারী ছিলেন না। ফলে ক্রমেই কোভিড-১৯ পরিণত হয়েছে ভ্যাকসিন গ্রহণ না করাদের মহামারিতে। দেশটির অনেকেই এখন প্রথমে ভ্যাকসিন গ্রহণ না করার জন্য হতাশা প্রকাশ করছেন। বর্তমানে দেশটি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে জরুরি অবস্থার মধ্যে রয়েছে। এরইমধ্যে ভ্যাকসিন গ্রহণ না করার ঝুঁকি নিয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বা সিডিসি’র পরিচালক ড. রোচেল ওয়ালেনস্কি।
বৃটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিন কার্যক্রমের গতিও কমে আসছে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চল এবং রক্ষণশীল এলাকাগুলোতে ভ্যাকসিন গ্রহণের হার আরও কম। ২০২০ সালের প্রথমে কোভিড ছড়ানোর পর যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ৬ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ কোভিডে প্রাণ হারিয়েছেন।
২০শে জুলাই পর্যন্ত আলাবামার মতো এলাকায় মাত্র ৩৩ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিনের পূর্ণ ডোজ গ্রহণ করেছেন। আলাবামার এক চিকিৎসক ব্রিটনি কোবিয়া তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, আমার হাসপাতালে সব তরুণ ও স্বাস্থ্যবান মানুষ কোভিড নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। তাদেরকে ভ্যান্টিলেটরে রাখার সময় তারা আমার কাছে ভ্যাকসিনের জন্য অনুরোধ জানাতে থাকেন। আমি তাদের হাত ধরে বলি, দুঃখিত অনেক দেরি হয়ে গেছে। আলাবামা পাবলিক হেলথ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত এপ্রিল থেকে যত মানুষ কোভিডে প্রাণ হারিয়েছেন তাদের ৯৬ শতাংশই ভ্যাকসিনের পূর্ণ ডোজ গ্রহণ করেননি। এ ছাড়া তাদের মধ্যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার আধিক্য রয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কোভিড আক্রান্ত হওয়ার ৮৩ শতাংশই এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহেও এই হার ছিল ৫০ শতাংশ।
লুইজিয়ানাতেও মাত্র ৩৬ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল গবেষক পাওলা জনসন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি এবং পরে তিনি কোভিড আক্রান্ত হন। তাকে এম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে আসতে হয়েছিল। তিনি শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন। কিন্তু কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর তার দম আটকে আসতে থাকে। তিনি জানান, আমি শ্বাস নিতে পারছিলাম না। হঠাৎ করে আমার ফুসফুস কাজ করা বন্ধ করে দিলো। এখন তিনি ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে চান। সিডিসি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোভিড আক্রান্তরা চাইলে ভ্যাকসিন নিতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে তাদের চিকিৎসা বিবেচনা করে ৯০ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।