কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে স্কুল সংযোগ সড়ক প্রকল্পের দুইটি রাস্তার কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদার রাস্তা খনন করে দুইধারে ইটের গাঁথুনি করে দীর্ঘদিন ধরে কাজ ফেলে রাখে তাই রাস্তার ভিতরে মাটি না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে রাস্তায় পানি জমে থাকার কারণে শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। রাস্তার কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় দুই অঞ্চলের পাঁচ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষক ওমর ফারুক জানান, লুলিকান্দি গ্রামের উৎপাদিত কৃষিপণ্য রাস্তার কারণে বাজারে বিক্রি করতে পারছি না। এ অঞ্চলের ১০টি পোল্ট্রি ফার্ম ও ৫টি গরুর খামারের খাদ্য আনা খুবই কষ্টকর হচ্ছে। গৃহিণী শিপা আক্তার জানান, রাস্তার কাজ বন্ধ থাকার কারণে গর্ভবতী মহিলাদেরকে হাসপাতালে নিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া মৃত ব্যক্তির দাফন, স্কুল-মাদ্রাসা ও মসজিদে যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ফরিদ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, লুলিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুরা করোনাকালীন সময়ে স্কুল থেকে অ্যাসাইনমেন্ট আনা ও জমা দিতে অনেকেই রাস্তায় পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে। এ বিষয়ে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর লিখিত আবেদন দাখিল করেছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুল হক জানান, জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ঠিকাদার শফিকুল ইসলামকে বার বার বলা হলেও তিনি কাজ নিয়ে গড়িমসি করছেন। ঠিকাদার শফিকুল ইসলাম জানান, বৃষ্টির কারণে রাস্তার কাজ করতে পারছি না। উপজেলা প্রকৌশলী মো. জোনায়েত আলম জানান, চুক্তি অনুয়ারী সংযোগ সড়কের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় বাতিলের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের লুলিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৮০০ মিটার সংযোগ সড়ক এবং সিদলা ইউনিয়নের সাহেবেরচর ভাটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংযোগ সড়কের ৩০০ মিটার সংযোগ সড়কের কাজ ২০১৯ সালে টেন্ডারের মাধ্যমে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তিপত্র করে ঠিকাদার একেএম শফিকুল হক। এ সড়কের জন্য ২০১৮-১৯ অর্থবৎসরের এমআরআরআই ডিপি প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা রাস্তার কাজের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়।