সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারটি প্রায় দুই যুগ ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। গত ২৪ বছরেও এখানে হয়নি কোনো রোগীর অপারেশন। ফলে সরকারি এ হাসপাতালে প্রসূতির সিজার, এপেন্ডিসাইডসহ অন্যান্য অপারেশন না হওয়ায় রোগীরা মোটা অঙ্কের টাকা ব্যয় করে প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিকে অপারেশন করাতে বাধ্য হচ্ছেন। পাশাপাশি দীর্ঘদিন অপারেশন থিয়েটার বন্ধ থাকায় অপারেশনের কাজে ব্যবহৃত মূল্যবান যন্ত্রাংশ অকেজো হয়ে পড়ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে সরকারের স্বাস্থ্যবিভাগ তাড়াশ ৩১ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে দৃষ্টিনন্দন একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করে। ওই বছরের ৭ই আগস্ট তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম নতুন বহুতল ভবনটি উদ্বোধন করেন। আর একই সময় তিনি ৩১ শয্যার তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীত করেন।
এদিকে পুরাতন ভবনের অপারেশন থিয়েটারটি নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় স্থানান্তর করে তা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও মূল্যবান যন্ত্রাংশ সংযোজন করে অপারেশন থিয়েটারটি আরও যুগোপযোগী করা হয়। এরপরও অপারেশন থিয়েটার পুরাতন ভবনে যেমন ছিল ঠিক নতুন ভবনেও সেভাবেই তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে।
এ হাসপাতাল থেকে অবসরে যাওয়া সিনিয়র স্টাফ নার্স হালিমা খাতুন জানান, ১৯৯৮ আবদুর রাজ্জাক নামক একজন সার্জন চিকিৎসক অপারেশন থিয়েটারটি চালু করে একটি সিজার অপারেশন করেছিলেন। তারপর ওই অপারেশন থিয়েটারে গত ২৪ বছরে আর কোনো অপারেশন হয়নি। সে থেকে অপারেশন থিয়েটারটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে।
উপজেলার আড়ংগাইল গ্রামের প্রসূতি মা হাসনা হেনা বলেন, রোববার আমার প্রসব ব্যথা শুরু হলে তাড়াশ হাসপাতালে নেয়া হয়। নরমাল বাচ্চা না হওয়ায় সিজারের প্রয়োজন হয়। কিন্তু উপজেলা হাসপাতালে সিজারের ব্যবস্থা না থাকায় আমাকে অনেক ভোগান্তি পেরিয়ে বাইরের ব্যক্তি মালিকানাধীন ক্লিনিকে গিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে সিজার করাতে হয়। আর এ অবস্থা শুধু আমার নয়, সরকারি এ হাসপাতালে অপারেশনের জন্য আসা সব শ্রেণির রোগীর। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মো. জামাল মিয়া শোভন হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার তালাবদ্ধের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রাংশের অভাবে এটি বন্ধ আছে। আমি অপারেশন থিয়েটারটি চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি। শিগগিরই অপারেশন থিয়েটারটি চালু হবে এবং রোগীরা সেবা পাবেন।