× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সিলেট উপনির্বাচন-৩ / শেষ মুহূর্তের সমীকরণ

প্রথম পাতা

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
২৫ জুলাই ২০২১, রবিবার

সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে শেষ মুহূর্তে নানা সমীকরণ চলছে। প্রচারণায় এগিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব। আর নীরব ভোট বিপ্লবের আশায় রয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী। তবে- এ আসনের উপনির্বাচনের এখনো প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে লকডাউনকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ১১ই মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন এ আসনের জনপ্রিয় সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। ২০০৮ সাল থেকে পরপর তিনবার এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার মৃত্যুর পর আগামী ২৮শে জুলাই এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
নির্বাচনের দিনক্ষণ এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ভোটের নানা সমীকরণ চলছে নির্বাচনী আসনে। ভোটারদের মধ্যে আগ্রহও বাড়ছে। এ আসনে এবারের উপনির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন- আওয়ামী লীগ থেকে হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টি থেকে আতিকুর রহমান আতিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী ও বাংলাদেশ কংগ্রেস থেকে জুনায়েন মো. মিয়া। লকডাউনে লকডাউনে চলেছে নির্বাচনী প্রচারণা। আর লকডাউনের মধ্যদিয়ে ভোট লড়াইয়ে থাকা ৪ প্রার্থী আগামীকাল রাতের মধ্যে তাদের নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করবেন। ভোটের দিন লকডাউন শিথিল করে গ্রহণ করা হবে ভোট। নির্বাচনের পূর্বমুহূর্তে কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া অপর প্রার্থীরা কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন। তাদের মতে- লকডাউনকালে এই নির্বাচনে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবাইকে ভোট কেন্দ্রে আসতে হবে। থাকবে কঠোরতাও। এ কারণে অনেক ভোটারই কেন্দ্রে না আসতে পারেন। কেন্দ্রে ভোটার নিয়ে আসা হবে বড় চ্যালেঞ্জও। এই অবস্থায় শেষ মুহূর্তের ভোটের সমীকরণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের অবস্থান বেশ শক্তিশালী। কারণ- নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে হাবিব ভোটের মাঠে সক্রিয়। তখন থেকেই তিনি নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। আর নৌকার প্রার্থী হওয়ার পর তিনি প্রচারণার গতি বাড়িয়ে দিয়েছেন। নির্বাচনী এলাকা দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জের গ্রামে গ্রামে তিনি ছুটে গেছেন বলে জানিয়েছেন তার কর্মীসমর্থকরা। পাশাপাশি তার পক্ষে স্থানীয় তিন থানা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একাট্টা হয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন। এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরে হাবিবুর রহমান হাবিব নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। তবে- হাবিবকে নিয়ে শঙ্কা আছে অন্য জায়গায়। আওয়ামী লীগের ভেতরে দৃশ্যমান কোনো বিরোধ না দেখা গেলেও সাবেক এমপি বলয়সহ আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকটি বলয় প্রচারণায় সক্রিয় থাকলেও ভোটে সক্রিয় থাকবে না কী না- সেটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ মুজিবুর রহমান জকন জানিয়েছেন- ‘নৌকার পক্ষে সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। কোনো বিরোধ কিংবা বিভাজন নেই। উন্নয়নের স্বার্থে নৌকার পক্ষে এ আসনের সাধারণ মানুষও ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। নির্বাচনের দিন এর প্রমাণ সবাই পাবেন।’ এবারের উপনির্বাচনে অর্ধেক সময় আইনি লড়াইয়ে কাটিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক। হাবিবের দ্বৈত নাগরিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি নির্বাচন কমিশনে লড়াই চালান। এখনো তিনি আইনি লড়াইয়ে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতারা। আইনি লড়াইয়ে থাকার কারণে আতিক খুব অল্প সময়ই ব্যয় করেছেন নির্বাচনী প্রচারণায়। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণায় গতি বাড়িয়েছিলেন। লকডাইনের কারণে ভার্চ্যুয়্যাল প্রচারণায়ও ছিলেন সরব। দক্ষিণ সুরমায় প্রধান নির্বাচন কার্যালয় খুলে সেখানে প্রতিদিন নির্বাচনী সভা করেছেন। গত ১৫ দিন ধরে পর্যায়ক্রমে তিন উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বাজার, উপজেলা সদরে ঘুরে বেরিয়েছেন। তার পক্ষে এ আসনে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা ভোট প্রচারণায় সক্রিয় থাকলেও গ্রামে গ্রামে প্রচারণা চালানো সম্ভব হয়নি। এছাড়া- প্রস্তুতিও নিয়েছেন বিলম্বে। জাতীয় পার্টির কর্মীরা  জানিয়েছেন- এবারের নির্বাচনে এ আসনে আতিকের ভোট ব্যাংক ছিল, এখনো আছে। তার পক্ষে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির ভোট ব্যাংকের বড় একটি অংশের অবস্থান রয়েছে। এই ভোটাররা কেন্দ্রে এলে ফলাফলের আশা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। আতিকও এবারের নির্বাচনে তার পক্ষে নীরব ভোট বিপ্লবের আশা করছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় আতিক ঘোষণা দিয়েছেন- এটাই হচ্ছে তার শেষ নির্বাচন। ফলে ভোটারদের কাছে আলাদা সহানুভুতি পাচ্ছেন তিনি। সিলেট-৩ আসনে বিএনপির ভোট ব্যাংক রয়েছে। আর এই ভোট ব্যাংকের উপর এখনো ভরসা রাখছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি শফি আহমদ চৌধুরী। বিএনপির নেতারা তার সঙ্গে না থাকলেও ভোটাররা সঙ্গে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এ কারণে শফি আহমদ চৌধুরীও এবারের উপনির্বাচনে নীরব ভোট বিপ্লবের আশা করছেন। তবে- নির্বাচনী প্রচারণায় চমক দেখাতে পারেননি শফি আহমদ চৌধুরী। তিনি এবার একাই ভোট প্রচারণা চালিয়েছেন। নিজে ছুটে গেছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। তিনি জানান- ১৯৮৬ সাল থেকে সুখে-দুখে মানুষের পাশে থাকার কারণে এলাকার মানুষ তার প্রিয়জন। তারা হতাশ করবে না বলে জানান তিনি। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন- প্রতিবাদের অংশ হিসেবে সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে যাবেন না বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর