অলিম্পিক গেমসের পদক তালিকায় চোখ বুলাতেই ভেসে উঠছে ‘আরওসি’ নামটি। যা নিয়ে বেশ বিভ্রান্তিতে পড়ছেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। ‘আরওসি’ সম্পর্কে ধারণা না থাকায় এই বিভ্রান্তি। সংক্ষিপ্ত এই শব্দটির পুরোটা হলো ‘রাশিয়ান অলিম্পিক কমিটি’। ডোপিং কেলেঙ্কারিতে অলিম্পিকে নিষিদ্ধ হতে বসেছিলেন রাশিয়ান অ্যাথলেটরা। তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়ান অলিম্পিক কমিটি। মাদক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৩০৩ রাশিয়ান অ্যাথলেট টোকিও অলিম্পিকে অংশ নিয়েছেন ‘রাশিয়ান অলিম্পিক কমিটি’র ব্যানারে। সেরা অ্যাথলেটদের ছাড়াই ২০১৬ রিও অলিম্পিকে চতুর্থ সর্বোচ্চ ১৯টি স্বর্ণপদক জিতেছিল রাশিয়া।
‘আরওসি’র ব্যানারে টোকিও অলিম্পিকে প্রত্যাশিত পারফরমেন্স করছেন রাশিয়ান অ্যাথলেটরা।
মার্চপাস্টে রুশ অ্যাথলেটরা অংশ নিয়েছেন অলিম্পিকের পতাকা হাতে। জার্সি ও ট্র্যাকস্যুটে নেই রাশিয়ার পতাকার ছবি। রাশিয়ান শ্যূটার বাতসারাস্কিনা ভিতালিনা মহিলাদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে সোনার পদক জিতলেও বাজেনি রাশিয়ার জাতীয় সঙ্গীত। বেজেছে অলিম্পিকের সঙ্গীত। চার বছর আগে রিও অলিম্পিকে একই ইভেন্টে রৌপ্য জিতোছিলেন তিনি। ‘আরওসি’ নামটার মতো রুশ অ্যাথলেটদের ট্র্যাকস্যুটে রয়েছে রাশিয়ান ছোঁয়া। রাশিয়ার পতাকার সাদা, নীল ও লাল রংয়ের ছোঁয়া রয়েছে ট্র্যাকস্যুটে। টোকিও অলিম্পিকের চতুর্থ দিনের রাত ৮টা পর্যন্ত (স্থানীয় সময়) এক স্বর্ণ, চার রৌপ্য ও ৩ ব্রোঞ্জ নিয়ে পদক তালিকার চারে ছিল ‘আরওসি’।
২০১৪ সালে রাশিয়ার সোচিতে হওয়া শীতকালীন অলিম্পিকে পদক তালিকার শীর্ষে ছিল রাশিয়ার অ্যাথলেটরা। এরপরই তাদের বিরুদ্ধে ডোপিংয়ের অভিযোগ ওঠে। ২০১৫ সাল থেকে অ্যাথলেটিক্সে দেশ হিসেবে রাশিয়ার অংশ নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি ডোপিং এজেন্সি (ডব্লিউএডিএ)। ২০১৬ রিও অলিম্পিকের আগে মাদক গ্রহণের দায়ে নিষিদ্ধ হন ১০০’রও বেশি রাশিয়ান অ্যাথলেট। দক্ষিণ কোরিয়ার পাইওংচাংয়ে ২০১৮ সালের শীতকালীন অলিম্পিকে ১৬৮ জন রুশ অ্যাথলেট নিরপেক্ষ পতাকা নিয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চূড়ান্ত রায়ে চার বছরের জন্য সব ধরনের বৈশ্বিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ করে ডব্লিউএডিএ। শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করে রাশিয়া। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ক্রীড়ার সর্বোচ্চ আদালত ‘কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টস’ (সিএএস) শাস্তি দুই বছর কমিয়ে দেয়। রাশিয়াকে জরিমানা গুণতে হয় ৩.৫ মিলিয়ন বৃটিশ পাউন্ড। রাশিয়ার এই শাস্তি বহাল থাকবে ২০২২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত।