২৯শে জুলাই সকালে বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে আসছে টাইগাররা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় দিয়েই শেষ করেছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। তবে দেশে ফিরে বিশ্রামের কোনো সুযোগ নেই। সরাসরি তারা চলে যাবে হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে। কারণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ খেলতে হলে বায়ো বাবল বা জৈব সুরক্ষা বলয় থেকে বের হতে পারবেন না ক্রিকেটাররা। একই দিনে ঢাকায় পা রাখার কথা অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলেরও। তারাও উঠবে একই হোটেলে, যেখানে দু্ই দল ও সিরিজ সংশ্লিষ্টরা ছাড়া বাইরের কেউ থাকতে পারবেন না। সফরে আসার আগে এমন কঠিন শর্তই দিয়েছিল অজি ক্রিকেট বোর্ড।
অন্যদিকে বাংলাদেশ শিবিরে একের পর এক ইনজুরির হানায় জমছে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ। হাঁটুর চোট দল থেকে ছিটকে পড়েছেন দেশেরে সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। এরপর ইনজুরি আক্রান্ত দলের আরেক ওপেনার লিটন কুমার দাস ও পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের জিম্বাবুয়ে সিরিজে দুই ম্যাচ খেলা হয়নি। এবার তারা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে পারবে কিনা তা নিয়ে আছে শঙ্কা। এছাড়াও সাকিব আল হাসানেরও চোটের খবর শোনা যাচ্ছে। যদিও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মেডিকেল বিভাগের প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী তাদের নিয়ে আশা প্রকাশ করেছেন। তবে শুরু থেকেই খেলতে পারবে না এমনটাও তার মত। দৈনিক মানবজমিনকে তিনি বলেন, ‘দু’নর (লিটন-মোস্তাফিজ) ইনজুরির সমস্যা আছে। ওরা দেশে ফিরে এলে সরাসরি দেখার পরই বলতে পারবো আসলে কি করণীয়। লিটনের থাইয়ে ইনজুরি। ওকে নিয়ে চিন্তা একটু বেশি। ফিজের অ্যাঙ্কেলে চোট। সবকিছু ঠিক থাকলেও আমার মনে হয় না ওরা প্রথম ম্যাচ থেকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে পারবে!’ আর সাকিবের চোটের বিষয়ে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেননি কেউই। ৩রা আগস্ট থেকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তবে লিটন ও মোস্তাফিজ কবে নাগাদ খেলতে পারবেন তা নিয়ে সঠিকভাবে জানাতে পারেননি দেবাশিষ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আসলে ওরা এখনো আছে জিম্বাবুয়েতে। সেখানে চিকিৎসক ও ফিজিওরা আমাদের যা জানিয়েছেন সবই ই-মেইলে। ওরা কবে নাগাদ খেলতে পারবে এটি আসলে টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। আমি যতটা জানি লিটনের একটু বেশি সময় লাগবে খেলায় ফিরতে। ওর বিশ্রাম প্রয়োজন। ফিজেরওটা তেমনই শুনেছি। ওরা এসে হোটেলে উঠবে বায়ো বাবলে। সেখানে দলের চিকিৎসক, ফিজিওরা সরাসরি দেখবেন। তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন। আসলে ওদের খেলার বিষয়টি নির্ভর করছে টিমম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তের ওপরই।’ অন্যদিকে বিসিবি’র প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, লিটন ও মোস্তাফিজকে দ্বিতীয় বা তৃতীয় ম্যাচ থেকে পাওয়া যেতে পারে। এছাড়া আরেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন বলেন, ‘আসলে ওরা দেশে ফিরে না আসা পর্যন্ত কোনো কিছুই বলা ঠিক হবে না। ওদের নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে আসার পর। তবে আমরা বিকল্প চিন্তা করে রেখেছি। ওরা যদি খেলতে না পারে সেই জন্য জিম্বাবুয়ে থেকেই দলের সঙ্গে বিকল্প ক্রিকেটার রেখেছি আমরা। তবে যতটা জানি ওদের দু’জনকে আমরা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে পাবো।’
দেশে ফিরে এসে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের টি-টোয়েন্টি দল সরাসরি উঠবে হোটেলে বায়ো বাবলে। কারণ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার শর্ত অনুসারে ২১শে জুলাইয়ের পর দল বা সিরিজের সঙ্গে বাইরের কাউকে নতুন করে যুক্ত করা যাবে না। যে কারণে এরই মধ্যে প্রায় ১৫০ জনকে রাখা হয়েছে কোয়ারেন্টিনে। হোটেলে রুম কোয়ারেন্টিন করছেন ৮৫ জন। তাই লিটন ও মোস্তাফিজকে খেলতে হলে অবশ্যও জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকতেই হবে। এ বিষয়ে বিসিবি’র প্রধান চিকিৎসক বলেন, ‘লিটন বা যে কেউ হোক খেলতে হলে কোনোভাবেই জৈব সুরক্ষা বলয়ের বাইরে যেতে পারবেন না। তাই তাদের চিকিৎসার বিষয়টি হোটেলেই করতে হবে।’