রাজধানীতে বেড়েছে ডেঙ্গু রোগী। এরই মধ্যে প্রায় ২ হাজার রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। সম্প্রতি এডিস মশার কামড় থেকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। এ অবস্থায় এডিস লার্ভাসহ মশক নিধনে জোর দিয়েছে নগর কর্তৃপক্ষ। গতকাল থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে ১০ দিনের চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় নেমেছে।
গতকাল ডিএনসিসির চিরুনি অভিযানের প্রথম দিনে বিভিন্ন স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ১৫টি মামলায় ৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ডিএনসিসির ১ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ইনের মোবাইল কোর্টে ৪টি মামলায় ৬৭ হাজার টাকা, ২ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম সফিউল আজমের মোবাইল কোর্টে ৪টি মামলায় ৩ লাখ টাকা, ৩ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী ৫টি মামলায় ১৪ হাজার টাকা, ৫ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ হোসেন ১টি মামলায় ৫০ হাজার টাকা, ৯ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পারসিয়া সুলতানা প্রিয়াংকা ১টি মামলায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এদিন সকালে ডিএনসিসি এলাকার রূপনগর বিপণিকেন্দ্রের নির্মাণাধীন মার্কেটে এডিস মশার লার্ভা থাকায় মার্কেটের শেয়ারে মালিক স্থানীয় ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তোফাজ্জল হোসেনকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, অভিযানের মূল উদ্দেশ্য জরিমানা করা নয়। এডিস মশার লার্ভা যেখানে পাওয়া যাবে, সেখানে অভিযান পরিচালনা করবো। কারো অবহেলা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গত বছরের মতো এবারও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এদিকে এডিস নিয়ন্ত্রণে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বোম্বে সুইটসসহ ২৩ ভবনকে ৩ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মধ্যে অঞ্চল-১ এর সিদ্ধেশ্বরীতে মাহফুজুল আলম মাসুম, অঞ্চল-২ এর খিলগাঁওয়ে মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, অঞ্চল-৩ এর আজিমপুরে তৌহিদুজ্জামান পাভেল, অঞ্চল-৫ এর মানিকনগরে মুহাম্মদ হাসানাত মোর্শেদ ভূঁইয়া, অঞ্চল-৬ এর ইমামবাগ ও জোরভিটায় শাহীন রেজা, অঞ্চল-৮ এর ডগাইর পশ্চিমপাড়ায় কাজী হাফিজুল আমিন, অঞ্চল-৯ এর মাতুয়াইলে বিকাশ বিশ্বাস এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের মধ্যে অঞ্চল-১ এর এলিফ্যান্ট রোডে মেরীনা নাজনীন, অঞ্চল-৪ এর ইমামগঞ্জে মো. হায়দার আলী এবং অঞ্চল-১০ এর কদমতলি এলাকায় মো. মামুন মিয়া এসব ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতসমূহ এ সময় ৩৯৪টি নির্মাণাধীন ভবন, বাসাবাড়ি, প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করেন এবং বম্বে সুইটসসহ ২৩টি প্রতিষ্ঠান, নির্মাণাধীন ভবন ও বাসাবাড়িতে মশার লার্ভা পাওয়ায় ২৩টি মামলা দায়েরের মাধ্যমে ৩ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযান প্রসঙ্গে অঞ্চল-১০ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন মিয়া বলেন, অভিযানে আমরা বোম্বে সুইটসের কারখানার বেজমেন্টে মশার লার্ভা পেয়েছি। তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবারও করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলে একযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে। অভিযানের পাশাপাশি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।