যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাতে আবার বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। হাসপাতালগুলো সয়লাব হয়ে যাচ্ছে রোগীতে। আক্রান্তদের বেশির ভাগই যুব শ্রেণির। তাদের মধ্যে আবার বেশির ভাগকে টিকা দেয়া হয়নি। এসব মানুষ খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সল্ট লেক সিটিতে একটি হাসপাতালে কাজ করেন নার্স জেনিন রবার্টস। তিনি জানিয়েছেন, তার হাসপাতালে আইসিইউ আবার রোগীতে পূর্ণ। এ অবস্থায় আবার উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
ইউটাতে মারে এলাকায় ইন্টারমাউন্টেইন মেডিকেল সেন্টারের আইসিইউ। সেখানে এসব রোগীর ঢল নামছে। তাদের মুখে টিউব ব্যবহার করা হয়েছে। তারা অচেতন। বেশির ভাগ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে। শুধু যে ইউটাতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ বাড়ছে এমন না। পুরো যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। নার্স জেনিন রবার্টস বলেছেন, আমাদের কাছে যেসব রোগী আসছেন তাদের বেশির ভাগই ২০, ৩০ বা ৪০ ঊর্ধ্ব বয়সসীমার। তাদের অবস্থা খুব খারাপ। এসব রোগীকে করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়া হয়নি।
নার্স রবার্টসের মতো অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরাও মনে করছেন, করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়ার মাধ্যমে হাসপাতালে ভর্তির হার কমিয়ে আনা যাবে। ইউটাতে অধিবাসীদের মধ্যে শতকরা ৪৫ ভাগকে পূর্ণাঙ্গ টিকা দেয়া হয়েছে। ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারের কারণে তাদের জন্যও ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে। ২২ শে জুলাই ইউটা রাজ্যের শতকরা ৮৪ ভাগ আইসিইউ রোগীতে পূর্ণ ছিল। এ রাজ্যে মোট জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ করোনার রোগী। অন্যদিকে ১৯ শে এপ্রিল আইসিইউতে রোগী ছিলেন শতকরা ৫৯ ভাগ সিটে। তার মধ্যে শতকরা মাত্র ১১ ভাগ রোগী ছিলেন করোনায় আক্রান্ত।
ইউটা রাজ্যে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অন্য রাজ্যগুলোতে করোনা ভাইরাসের বিস্তার এবং হাসপাতালে ভর্তির হার বলে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সামনে আবার কঠিন সময় আসছে। মানুষজন যখন রেস্তোরাঁ, কনসার্ট, গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প শুরু করেছে তখন তাদের সামনে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নতুন করে আতঙ্ক বিস্তার করছে।
উল্লেখ্য, মূল করোনা ভাইরাসের চেয়ে অধিক মাত্রায় সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ওইসব মানুষের মধ্যে, যাদেরকে টিকা দেয়া হয়নি। বিশেষ করে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন প্রাপ্ত বয়স্ক যুব শ্রেণী। এই পরিস্থিতিকে সামাল দিতে, করোনা রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সল্ট লেক সিটিতে ইউনিভার্সিটি অব ইউটা হাসপাতাল অত্যাবশ্যক নয়, এমন অপারেশন স্থগিত করে দিয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের প্রধান সহযোগী মেডিকেল অফিসার ড. কেনসি গ্রেভস। গত শীতে সেখানে যে পরিমাণ রোগী ভর্তি হয়েছিল, এখন তার চেয়ে রোগী কম আছে এ হাসপাতালে। কিন্তু স্টাফ সঙ্কট এবং রোগী বৃদ্ধিতে তাদের ওপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বহু মানুষ টিকা নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এতেও হতাশা বাড়ছে।