× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সাড়ে ৩ বছরেও প্রকাশ হয়নি চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়োগ পরীক্ষার ফল

বাংলারজমিন

জালাল রুমি, চট্টগ্রাম থেকে
২৯ জুলাই ২০২১, বৃহস্পতিবার

চট্টগ্রাম বন্দরে তৃতীয় শ্রেণির একটি চাকরিতে নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা প্রায় সাড়ে ৩ বছরের বেশি সময় ধরে আটকে আছে। কয়েকটি পর্যায় শেষে ২০১৭ সালের শেষের দিকে চাকরি প্রার্থীরা মৌখিক পরীক্ষা দিলেও দীর্ঘ এই সময়ে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ হয়নি। এ নিয়ে চাকরির জন্য অপেক্ষা করা ৮৯০ জন প্রার্থী চরম হতাশায় ভুগছেন। সরকারি চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেকে এটা নিয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। জানা যায়, সাড়ে ৪ বছর আগে ২০১৭ সালের ৫ই জানুয়ারি  ‘নিম্নমান সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর’ পদে ৪১৬ জন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে আবেদনের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা রাখা হয় কমপক্ষে এইচএসসি পাস। আর বেতনক্রম ছিল ৯ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ২৫ হাজার ৪৯০ টাকা। একই বছরের ২৩শে সেপ্টেম্বর তৃতীয় শ্রেণির এই চাকরিতে ঘোষিত ৪১৬ আসনের বিপরীতে যাচাই-বাছাই শেষে ২৩ হাজার প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
এতে ৮৯০ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। এই লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা ওই বছরের ৯ই ডিসেম্বর থেকে ২০শে ডিসেম্বর পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষাও দিয়েছেন। পরে পরীক্ষা কমিটি এখান থেকে ১২১ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দিতে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত সুপারিশ পাঠায়। তবে এই মৌখিক পরীক্ষার গেল সাড়ে ৩ বছরেও চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে পারেনি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এদিকে এতদিনেও চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করতে না পারার পেছনে প্রধানত বন্দর কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করছেন ফল প্রত্যাশীরা। একইসঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের তদবির ও নিয়োগ বাণিজ্য এই ফলাফল প্রকাশে বাধাগ্রস্ত করছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
নাসির উদ্দিন নামে এক ফলপ্রার্থী এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘সাড়ে ৩ বছর আগে পরীক্ষা দিলাম। এখনো ফল প্রকাশ করতে পারেনি তারা। এক পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা দিয়েছেন অনেকে। আমি নিজেও ভাইভা পরীক্ষার পরের দিন এক বড় ভাইকে ১ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়েছি। এখন ওই বড় ভাই থেকে টাকাও নিতে পারছি না। আর পরীক্ষার ফলাফলও দিচ্ছে না। এ বিষয়ে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’ আরেক ফলপ্রার্থী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘এই ফলাফল প্রকাশের জন্য এতদিন ধরে অপেক্ষা করছি। আমার সরকারি চাকরির আবেদনের বয়সও এখন শেষ হয়ে গেছে। এখন বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করবো দ্রুত যাতে ফলাফল ঘোষণা করে। আর ফলাফল প্রকাশে যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম না করে। পরীক্ষার সিরিয়ালে যারা সামনের সারিতে থাকবে তাদেরকেই যাতে নিয়োগ দেয়া হয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন্দরের এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, ‘আসলে চাইলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ স্বচ্ছভাবে অনেক কিছু করতে পারে না। এই নিয়োগগুলোর জন্য বিভিন্ন জনের   ফোন আসে। বিশেষ করে সরকারি দলের নেতাসহ মন্ত্রণালয়ের অনেকের তদবির থাকে। তাদের অনেক প্রার্থীকে নিয়মের বাইরে গিয়ে নিয়োগ দিতে হয়। এই নিয়োগেও এসব নিয়ে কিছু ঝামেলা তৈরি হয়েছে।’ এদিকে এই নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে এতো দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে জানতে বন্দর সচিব ওমর ফারুক মানবজমিনকে বলেন, ‘আসলে করোনা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে এই ফলাফল প্রকাশটি আর হয়ে ওঠেনি। একই সময়ে তো ভাণ্ডাররক্ষক পদেও একটি নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল। ওই পরীক্ষার ফলাফলও আমরা দিয়ে দিয়েছি। আশা করছি এটার ফলাফলও শিগগিরই দিয়ে দেয়া হবে।’ এই নিয়োগে ভাগবাটোয়ারা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এমন কিছুর সুযোগ নেই। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের থেকে নিয়োগ দেয়া হবে। আর এখানে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে কিছু সরকারি কোটা আছে। সেটাও একটি জটিল বিষয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর