দেশ বিদেশ

চুক্তিতে খুন করে অবকাশে যেতো ওরা

স্টাফ রিপোর্টার

২০২১-০৭-৩০

ইব্রাহিম এবং যুবরাজ। রাজধানীর মিরপুর এবং ভাষানটেক এলাকায় আতঙ্ক হিসেবে পরিচিত। তাদেরকে চুক্তিভিত্তিক কিলার হিসেবেও জানে এলাকার মানুষ। মিরপুর, ভাষানটেক, মাটিকাটাসহ বিভিন্ন এলাকায় জমি ভরাট-দখল, ঠিকাদারদের কাছ থেকে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতো তারা। টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে খুন করে গাঢাকা দিতে অবকাশযাপনে যেতো ইব্রাহিম এবং যুবরাজ। এই সন্ত্রাসী চক্রটি মোবাইল ফোন ব্যবহার না করায় তাদের খুঁজে পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনেক বেগ পেতে হয়। সম্প্রতি এই কিলার গ্রুপের তিন সদস্য গোয়েন্দা জালে ধরা পড়ার পর এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, বস্তিতে বেড়ে ওঠা যুবরাজ এবং ইব্রাহিমের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ‘এই গ্রুপটি ভাষানটেক, পল্লবী ও মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে আসছিল। তারা বিভিন্ন সময় টাকার বিনিময়ে  কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করতো। চক্রটি ভাষানটেক, কালশি, ক্যান্টনমেন্ট, মাটিকাটা এলাকায় ‘চাঁদাবাজি এবং মাদক কারবারের সঙ্গেও জড়িত। এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য তারা ‘অস্ত্র ব্যবহার’ করতো। তারা ভাড়াটে খুনি। তাদের গ্রুপে ৮ থেকে ১০ জন সদস্য রয়েছে।
সম্প্রতি চাঁদপুরের হাইমচর ও ঢাকার পল্লবী এলাকা থেকে চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ। এ সময় তাদের কাছ থেকে পিস্তল, রিভলবার এবং বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করা হয়। সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১৫ই মার্চ ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় আরব আলী নামে এক ঠিকাদার একটি পয়ঃনিষ্কাশন নালার কাজ পাওয়ার পর থেকে সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবি করছিল। চাঁদা না দেয়ায় তাকে ইব্রাহিম-যুবরাজ গ্রুপের সদস্যরা হত্যার চেষ্টা করে। ভুক্তভোগী এই ঠিকাদার মানবজমিনকে বলেন, এলাকার একটি ড্রেনের কাজ শুরু করলে সাইটে এসে প্রথমে আমার কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে যুবরাজের নাম বলে একজন আমার বুকে গুলি তাক করে। প্রাণ বাঁচাতে তৎক্ষণাৎ চিৎকার দিয়ে আমি তার হাতে থাকা পিস্তলটি থাবা দিয়ে ধরলে গুলিটি এসে পায়ে লাগে। এ সময় আমি মাটিতে বসে চিৎকার দেই। চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ভিডিও বিশ্লেষণ করে মিশনে অংশ নেয়া শাহজামান ওরফে সাবুকে সর্ব প্রথম পুলিশ ছদ্মবেশে চাঁদপুরের দুর্গম এলাকা হাইমচর এলাকায় শনাক্ত করা হয়। সাবুর দেয়া তথ্য অনুযায়ী দুলাল প্যাদা ও সাইফুল ইসলাম সুজন নামে আরও দুজনকে ঢাকার পল্লবী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, জমি দখল-ভরাট, চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে চক্রটির সঙ্গে আরও কারা জড়িত সে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো। এ ছাড়া চুক্তিভিত্তিক এই কিলার গ্রুপের মূল হোতা ইব্রাহিম এবং যুবরাজকে শনাক্তে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status