× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

লকডাউনে ফুলচাষিদের মাথায় হাত

বাংলারজমিন

তোফাজেল হোসেন তপু, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) থেকে
৩১ জুলাই ২০২১, শনিবার

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় এবারো লকডাউনের কারণে ফুলচাষিদের মাথায় হাত। ফুলচাষিরা এবার ক্ষেত থেকে ফুল কেটে ফেলে দিচ্ছেন। চলতি মৌসুমে ১৬ বিঘা জমিতে জারবেরা ও গোলাপ ফুলের চাষ করেছিলেন কালীগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের টিপু সুলতান। তিনি ঝিনাইদহ জেলার মধ্যে সব থেকে বড় একজন ফুলচাষি। করোনাভাইরাস মহামারির প্রথম ধাক্কার ক্ষতি কাটিয়ে আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন ফুলচাষি টিপু সুলতান। কিন্তু বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন করোনার ঢেউয়ের কারণে। সর্বাত্মক বিধিনিষেধের কারণে গত দুই সপ্তাহ ধরে ফুল বিক্রি করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহ জেলার ফুলচাষিরা। স্বাধীনতা দিবস ও পহেলা বৈশাখে ফুল বিক্রি করতে না পারায় এ অঞ্চলের চাষি ও ব্যবসায়ীদের কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এতে ফুল বিক্রিতে ধস নামায় জেলার ফুলচাষিদের ব্যাপক লোকসান হয়েছে। ফুল বিক্রি করতে না পারায় ফুলক্ষেত গরু ও ছাগল দিয়ে খাওয়াতে হচ্ছে। করোনার প্রভাব কিছুটা কমে আসার পর আবারো চাষিরা নতুন করে ফুলের চাষ শুরু করেন। সেই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার স্বপ্ন নিয়ে ফুল বিক্রি শুরুও করেছিল। কিন্তু এবারও করোনায় সরকারের বিধিনিষেধের কারণে ফুলচাষিদের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। সর্বাত্মক বিধিনিষেধে চাষিরা ফুল বিক্রি করতে পারছেন না। আবার ক্ষেতেও ফুল রাখতে পারছেন না। ফুলগাছ থেকে কেটে ক্ষেতের বাইরে গরু-ছাগল দিয়ে খাওয়াচ্ছেন। আবার ক্ষেত থেকে তুলতে দিতে হচ্ছে শ্রমিকদের মজুরি। ঝিনাইদহে ৬ উপজেলায় ১৭৩ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ হয়েছিল। এরমধ্যে গাঁদা ১১৩ ও রজনী ২৪ হেক্টর বাকি জমিতে অন্যান্য ফুলের চাষ হয়েছে। গেল বছর এ জেলায় চাষ হয়েছিল ২৪৫ হেক্টর। প্রতি বছর সব থেকে বেশি ফুলের চাষ হয় উপজেলার গান্না ও কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে। ২০২০ সালের মার্চে দেশের করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ার পর দেশে অঘোষিত লকডাউন শুরু হয়। ফলে ফুল বিক্রিতে ধস নামায় জেলার ফুলচাষিদের ব্যাপক লোকসান হয়েছিল।
কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের টিপু সুলতান বলেন তিনি ১৬ বিঘা জমিতে ফুলের চাষ করেছিলেন ৬ বিঘা জারবেরা, ৪ বিঘা থাই গোলাম, ৬ বিঘায় রয়েছে রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ফুল। প্রতিদিন ১৯ থেকে ২০ হাজার টাকার জারবেরা ফুল কেটে ফেলতে হচ্ছে, থাই গোলাম কেটে ফেলতে হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা, ও অন্যান্য ফুল কাটতে হচ্ছে প্রায় ২৫ হাজার টাকার। তার ফুল ক্ষেতে প্রতিদিন ১৫ জন শ্রমিক কাজ করেন তাদের দিতে হয় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা।
কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রামের ফুলচাষি লিটন হোসেন জানান, এবছর আমার দুই বিঘা জমিতে লাল ও হলুদ গোলাপের চাষ ছিল। এ ছাড়া প্রায় ৫ বিঘা জমিতে রয়েছে বিদেশি ফুল জারবেরা। এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার গোলাপ ও দুই হাজার জারবেরা ফুল তুলতাম। প্রতিটি ফুল গড়ে ৫ টাকা করে বিক্রি হতো। কিন্তু করোনার কারণে কোনো বেচা-বিক্রি নেই। গান্না বাজার ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দাউদ হোসেন জানান, ফুলের ভরা মৌসুমে করোনার হানায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কবে নাগাদ ফুলের বেচা-কেনা হবে তাও অনিশ্চিত। ফলে কৃষকরা বাধ্য হয়ে ফুল গরু-ছাগল দিয়ে খাওয়াচ্ছেন। ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় ১৭৩ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ হয়েছিল। এরমধ্যে গাঁদা ১১৩ ও রজনী ২৪ হেক্টর বাকি জমিতে অন্যান্য ফুলের চাষ হয়েছে। গেল বছর এ জেলায় চাষ হয়েছিল ২৪৫ হেক্টর। প্রতি বছর সব থেকে বেশি ফুলের চাষ হয় উপজেলার গান্না ও কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর