× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হারুনার রশিদ খান মুন্নুর চলে যাওয়ার ৪ বছর /কখনোই মনে হয় না বাবা নেই: রিতা

দেশ বিদেশ

রিপন আনসারী, মানিকগঞ্জ থেকে
১ আগস্ট ২০২১, রবিবার

সাবেক মন্ত্রী, বরেণ্য রাজনীতিবিদ, শিল্প বিপ্লবের অগ্রদূত, শিক্ষানুরাগী ও মানবিক মানুষ মরহুম হারুনার রশিদ খান মুন্নুর চলে যাওয়ার আজ ১লা আগস্ট চার বছর। এই দিনে সকলকে কাঁদিয়ে অনন্তকালের ঠিকানায় চলে গেছেন মানিকগঞ্জের জননন্দিত ও প্রিয় এই মানুষটি। দেশবরেণ্য ব্যবসায়ী হিসেবে একাধিকবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পেয়েছিলেন মহান এই মানুষটি। তার জীবদ্দশায় যে কাজেই হাত দিতেন সে কাজেই পেতেন সফলতা। শিল্প বিপ্লবের আইকন হারুনার রশিদ খান মুন্নুকে অনুসরণ ও অনুকরণ করে অনেকেই হয়েছেন বড় বড় শিল্প উদ্যোক্তা। শত ব্যস্ততার মাঝেও বাবার কথা মনে করে সব সময়ই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন পরিবারের বড় মেয়ে মুন্নু গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান আফরোজা খান রিতা। ছোট থেকেই বাবার সততা আর আদর্শ অনুসরণ করেই আফরোজা খান রিতা পথ চলছেন। বাবা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে বাবার যোগ্য উত্তরসূরি হয়ে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন তিনি।
শিক্ষা জীবনে বাবার মতো আফরোজা খান রিতাও ছিলেন বেশ মেধাবী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়ার সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করার পরপরই বাবার ব্যবসা-বাণিজ্যে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। বাবার হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মুন্নু ফেব্রিক্স, মুন্ন অ্যাটায়ার, মুন্নু জুটেক্স, মুন্নু স্টাফলার্স, মুন্নু মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল, মুন্নু ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মুন্নু নার্সিং কলেজসহ আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দক্ষ হাতেই সামাল দিয়ে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, বাবার হাত ধরে বিএনপি’র রাজনীতির দীক্ষা নিয়ে আফরোজা খান রিতা মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি’র রাজনীতিতে হয়ে উঠেছেন ব্যাপক জনপ্রিয়। বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পাশাপাশি জেলা বিএনপি’র পরপর দুইবার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে আফরোজা খান রিতার রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। যার কারণে সম্প্রতি জেলা বিএনপি’র কাউন্সিলে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে দ্বিতীয় বারের মতো জেলা বিএনপি’র সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। বাবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আফরোজা খান রিতা সব সময়ই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, কখনোই মনে হয় না বাবা নেই। সব সময়ই মনে হয় বাবা যেনো আমাদের পাশেই আছেন। তারপরও বাস্তবতা মেনে নিতেই হবে। আমার বাবা হচ্ছেন আমার আদর্শ, আমার অহংকার, আমার গর্ব। একজন আদর্শবান ব্যক্তিত্ব হিসেবে বাবা জীবনে কখনো তার আদর্শ ও সততা থেকে বিন্দুমাত্র সরে দাঁড়াননি। বাবার আদর্শ আর সততাকে  অনুসরণ এবং অনুকরণ করে আমি এগিয়ে যাচ্ছি।
জীবদ্দশায় তার যা যা স্বপ্ন ছিল তার প্রায় বেশির ভাগই তিনি বাস্তবায়ন করে গেছেন। মানিকগঞ্জের বুকে তার সবচেয়ে প্রিয় প্রতিষ্ঠান হচ্ছে মুন্নু মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল ও মুন্নু ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। আফরোজা খান রিতা বলেন, জীবদ্দশায় আমার বাবার এত উন্নতি ও সুনামের পেছনে আমার মায়ের বিরাট অবদান রয়েছে। মা পর্দার আড়াল থেকে আমার বাবাকে সর্বক্ষণ উৎসাহ দিয়েছেন।
হারুনার রশিদ খান মুন্নুর বড় মেয়ে আফরোজা খান রিতার বড় ছেলে মুন্নু গ্রুপের ডিএমডি ও মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি রাশিদ মাইমুনুল ইসলাম তার নানা সম্পর্কে বলেন, আমার জীবনের আদর্শ হচ্ছেন আমার নানা। শুধু তাই নয়, আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষকও তিনি। নানা ছিলেন আমার বন্ধুর মতো। ছোটবেলা থেকেই নানা যা বলতেন তার আদেশ আমি চোখ বন্ধ করে শুনতান। নানার কাছে পড়াশোনার গুরুত্ব ছিল সবচেয়ে বেশি। লেখাপড়ার বিষয়ে তিনি কোনো ছাড় দিতেন না। তার কাছ থেকে আমি শিখেছি সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে কীভাবে কাজ করতে হয়। নানার মতো একজন মানুষ পেয়েছিলাম বলেই  আমি  সৌভাগ্যবান। কারণ তার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। তিনি আমাদের ছায়ার মতো রেখেছিলেন। নানা আমাদের ছেড়ে অনন্তকালের ঠিকানায় চলে যাওয়ায় তার আদর-সোহাগ আর ভালোবাসা থেকে সারা জীবনের জন্য বঞ্চিত হয়েছি।  
মুন্নু মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাক্তার মো. আখতারুজ্জামান বলেন, হারুনার রশিদ খান মুন্নু স্যার ছিলেন অসম্ভব রকমের একজন ভালো মানুষ। একজন সাদা মনের মানুষ হিসেবে যার গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। মানবতার কল্যাণে তিনি ছিলেন উদার। বাবার জীবদ্দশায় দেখেছি তিনি যে কাজেই হাত দিতেন সে কাজেই পেতেন সফলতা। শিক্ষানুরাগী হিসেবে যার তুলনা নেই। বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজ হাতে গড়ে তুলেছেন। বিশেষ করে চিকিৎসক উৎপাদনের কারখানা হিসেবে মানিকগঞ্জের বুকে তিনিই প্রথম মুন্নু মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেন। যা জেলার মানুষের কাছে ইতিহাস হয়ে থাকবে।
বিশেষ চিকিৎসাসেবা: এদিকে প্রয়াত শিল্পপতি হারুনার রশিদ খান মুন্নুর ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মুন্নু মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে বিশেষ চিকিৎসাসেবার আয়োজন করা হয়েছে। দিনব্যাপী চিকিৎসাসেবার মধ্যে রয়েছে আউটডোর টিকিট ফ্রি,  মেডিকেল টেস্ট, হাসপাতালে ভর্তি এবং অপারেশনে ২৫ শতাংশ ছাড়। এ ছাড়া দুস্থ ও অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুন্নু মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাক্তার এসএম মনিরুজ্জামান।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর