ময়মনসিংহ, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, সিলেট, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুরে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২১ জন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮ জন, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ১৮, চট্টগ্রামে ১১, সিলেটে ৯ ও চাঁদপুরে ৭ জন মারা যান। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্টে-
স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আরও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টা থেকে রোববার (০১ আগস্ট) সকাল ৯টার মধ্যে হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। এদের মধ্যে করোনায় ছয়জন এবং করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে সাতজন মারা গেছেন। করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় মারা গেছেন আরও পাঁচজন। আজ রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীর ৬ জন, নাটোরের ৪ জন, নওগাঁর ৩ জন, পাবনার ৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন এবং কুষ্টিয়ার একজন মারা গেছেন।
এদের মধ্যে নাটোরের ৩ জন, রাজশাহীর দুজন এবং পাবনার একজন মারা গেছেন করোনা সংক্রমণে।
করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন রাজশাহীর দুজন, পাবনার দুজন, নওগাঁর দুজন এবং কুষ্টিয়ার একজন। করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় রাজশাহীর দুজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন, নাটোরের একজন এবং নওগাঁর একজন মারা গেছেন।
স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনিসংহ থেকে জানান, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৯ জন করোনা শনাক্ত হয়ে এবং ১২ জন উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। রোববার সকালে এ তথ্য জানান হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন ডা. মহিউদ্দিন খান মুন । তিনি জানান, শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন- ময়মনসিংহের ৬ জন, টাঙ্গাইলের ২ জন ও গাজীপুরের একজন। এ সময়ের মধ্যে উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন- ময়মনসিংহের ১০ জন ও জামালপুরের ২ জন।
ডা. মহিউদ্দিন খান মুন জানান, করোনা ইউনিটে ২৩০ আসনের বিপরীতে বর্তমানে ৫২৮ জন রোগী ভর্তি আছেন। যা এখন পর্যন্ত সর্ব্বোচ্চ। এর মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ২২ জন রোগী। নতুন ভর্তি হয়েছেন ৯৪ জন ও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫০ জন।
এদিকে ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলায় ২ হাজার ১১৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৯১ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. শাহ আলম।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়া করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে গত ২৪ ঘন্টায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে আরো ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ১৪ জনের করোনা পজেটিভ ও ৪ জনের উপসর্গ ছিল। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় এদের মৃত্যু হয়। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ৫৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৮১ জনের নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৩.৯৫ শতাংশ। বর্তমানে হাসপাতালে ১৯১জন করোনা আক্রান্ত রোগী ও ৫২ জন উপসর্গ নিয়ে মোট ২৪৩ জন ভর্তি রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ আব্দুল মোমেন।
চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, চাঁদপুরে গত ২৪ ঘন্টায় ৭ জনের মৃত্যুসহ ৩৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সংগৃহীত মোট নমুনার সংখ্যা ছিল ৭৫৯টি। নমুনা অনুপাতে আক্রান্ত শনাক্তের হার ৪৪.২৬%। চাঁদপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, নতুন আক্রান্তসহ জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯৮৫১জন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৬৮জন। এ পর্যন্ত সুস্থ ঘোষণা করা হয়েছে ৬৭৪৩ জনকে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ২৯৪০ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১০৫জন। বাকীরা হোম আইসোলেশনে আছেন।
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে জানান, সিলেট বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একদিনে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৯৯৬ জনের। এটাই হচ্ছে সিলেটের সংক্রমণের সর্বোচ্চ রেকর্ড।
মৃতদের মধ্য ৭ জন সিলেট জেলার বাসিন্দা ও ২ জন সুনামগঞ্জের বাসিন্দা। এছাড়া, সিলেট জেলায় নতুন সনাক্ত হয়েছেন ৩৯৯ জন। সুনামগঞ্জে ১০৬ হবিগঞ্জে ৩৫১ ও মৌলভিবাজারে ১৪০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন।
সিলেটে শনাক্তের হার হচ্ছে ৩৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪০৫ জন।
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে জানান, চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে ১১ জন মারা গেছেন। একই সময়ে নতুন করে ৯২৭ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার প্রায় ২৯ শতাংশ। আজ রোববার চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো করোনা-সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।