× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভয়ঙ্কর জুলাই

প্রথম পাতা

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
২ আগস্ট ২০২১, সোমবার

করোনার সংক্রমণে ভয়ঙ্কর মাস ছিল জুলাই। দেশে এই মাসে প্রায় প্রতিদিনই মৃত্যু বা শনাক্তে রেকর্ড তৈরি হয়েছে। দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগী পৌনে ১৩ লাখ আর মারা গেছেন ২১ হাজারের কাছাকাছি। করোনার প্রায় ১৭ মাসের মধ্যে শুধু জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৩৬ হাজার ২২৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। জুলাই মাসেই মারা গেছেন রেকর্ড পরিমাণ ৬ হাজার ১৮২ জন 
করোনা রোগী। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, করোনার উপসর্গ নিয়ে প্রায় ৬৪ শতাংশ মানুষ মারা যাচ্ছেন। যা এই তালিকার বাইরে থাকছে। অথচ জুলাই মাসে ৩ দফায় ২৪ দিনই দেশ ছিল বিধিনিষেধের কঠোর লকডাউনের জালে।
এদিকে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তাণ্ডবে গোটা দেশই এখন কাবু।
তৃতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম-গঞ্জেও। জুলাই মাসের লকডাউন ৮ দিন শিথিলতার ঘোষণায় সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল বিশেষজ্ঞরা। এমনকি সংক্রমণ বৃদ্ধির সতর্কতার লাল বার্তাও দিয়েছিল স্বয়ং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অন্যদিকে দেশি-বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেশে করোনার সংক্রমণের এই উচ্চ ধারা আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত থাকতে পারে বলে ধারণা দিয়েছিল। দেশি-বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমন্বয়ে চালিত গবেষণায় এসআইআর মডেলের মাধ্যমে তারা বলেছিল, দেশে আগস্টের শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত দৈনিক ১৫ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। যদিও ইতিমধ্যেই দৈনিক শনাক্ত জুলাই মাসেই ১৬ হাজার অতিক্রম করেছে এবং মৃত্যুও সর্বোচ্চ ২৫৮ জনের বিষাদময় তালিকা হয়েছে।
২৪ দিনের কঠোর লকডাউন দিয়েও তো সংক্রমণের গতি কমানো গেল না। তাহলে ভবিষ্যতে করোনার সংক্রমণের ভয়াল থাবা থেকে কীভাবে রক্ষা পাওয়া যাবে-জানতে চাইলে জাতীয় পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, এ ধরনের লকডাউন দিনে সংক্রমণ কমানো যাবে না। আমাদের দেশে লকডাউনই হয়নি। দেশে যে লকডাউন দিয়েছে এটা হলো নন-মেডিকেল লকডাউন। এতে করোনাকে প্রতিরোধ করা যায় না। মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলাচল করছে। সংক্রমণও ছড়াচ্ছে। যেটা আগেও বলেছিলাম। দেশের খ্যাতিমান এই ভাইরোলজিস্ট আরও জানান, মানুষের পার্সন টু পার্সন সংক্রমণ কমাতে হবে। এজন্য কারও সংক্রমণ হলেই তাকে আলাদা করে ফেলতে হবে। তাকে সঠিক চিকিৎসা দিতে হবে। হাসপাতালের বারিন্দায় রেখে করোনার চিকিৎসা সংক্রমণ তো ছড়াবেই। এজন্য হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থার আরও উন্নত করতে হবে। এই জনস্বাস্থ্যবিদ আরও বলেন, সবাইকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শতভাগ মানুষকে টিকা দিতে হবে। কেউ যাতে টিকা পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হন। সেদিকে নজর দিতে হবে। ৮০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে এমন বক্তব্যে বিশ্বাস করেন না এই ভাইরোলজিস্ট।
গত মাসের ২৪ দিনের কঠোর লকডাউনের প্রথম দফায় গত ৩০শে জুন করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে সার্বিক কার্যবিধি/ চলাচলে বিধিনিষেধ দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এতে বলা হয়েছিল ১লা জুলাই থেকে ৭ই জুলাই পর্যন্ত মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ থাকবে। দ্বিতীয় ৫ই জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আরেক প্রজ্ঞাপনে সার্বিক কার্যবিধি/ চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপের সময়সীমা বাড়ানো হয় ১৪ই জুলাই পর্যন্ত। এরপর জুলাই মাসের তৃতীয় দফায় ১৩ই জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আরেক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৪ই জুলাই থেকে ২৩শে জুলাই পর্যন্ত আরোপিত সকল বিধিনিষেধ শিথিল করার ঘোষণা দেয়। তবে ওই প্রজ্ঞাপনে আবার এক জায়গায় বলা হয়েছিল ২৩শে জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ থাকবে। এতে দেখা যায়, জুলাই মাসের ৩১ দিনে মধ্যে ২৪ দিনই ছিল কঠোর লকডাউনের মধ্যে। তাতেও সংক্রমণের দাবানল থামানো যায়নি। এরপর কঠোর লকডাউন শিথিল করার সরকারি সিদ্ধান্তের ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। একই সঙ্গে কমিটি কঠোর লকডাউন আরও ১৪ দিন বৃদ্ধির সুপারিশ করেছিল।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর